এই লেখাটার প্রথম দিককার চেহারা অন্য রকম ছিল। বড় বেশি ঐকান্তিক কথা হয়ে গেছে। মনের আবেগটা ঠুকরে বের হচ্ছিল। তাই এডমিনের সুপার ভিশনে একটু নরমালাইজ করে ফরমাল করা হয়েছে পরে।
একান্ত ভাবনাগুলোকে সবার সাথে শেয়ার করাই যায়, তাই উপরের লেখার শুরুর খসড়াটা সবার সাথে শেয়ার করলাম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
এক নদী রক্ত পেরিয়ে,
বাংলার আকাশে,
রক্তিম সূর্য আনলে যারা,
তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না।
মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে,
সাত কোটি মানুষের,
জীবনের সন্ধান আনলে যারা,
সে নামের মহিম কোনদিন ম্লান হবে না।
নয়টি মাস! প্রতিটা মূহুর্ত, সারাটা ক্ষণ আতংক আর প্রতিকুলতার মধ্যে বেঁচে থাকা, কেমন হতে পারে সেই দূর্বিষহ অনুভূতিগুলো?
শত্রুর সম্মুখে দাড়িয়ে নিজের জীবন তুচ্ছ করে যুদ্ধ করা। এই সাহসীকতার তুলনা কি হতে পারে?
শত শত মানুষ গ্রামে-গঞ্জে পালিয়ে গেল, তাদের আতিথেয়তা করে দুইবেলা খাওয়ানো, শোবার স্থান দেওয়া, এরকম মেজবান আর কোথায় দেখতে পাবে?
শত্রুর গুলির মুখে দাড়িয়ে পেছন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা, খাদ্য, তথ্য সরবরাহ করা, এমন দুঃসাহসী কে?
কতটা নির্লজ্জ, ঘৃণিত হলে নিজের ভাইয়ের বুকে ছুড়ি চালাতে পারে? নিজের মা-বোনকে শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারে। এবং এর জন্য একফোটা অনুশোচনাও নাই। বরং অহংকার ভরে দেশকে নিয়ে ব্যবসা করে। এখনও!
কতটা ব্যক্তিত্বহীন হলে এই করুণগাঁথা নিয়ে বছরের পর বছর নিজের স্বার্থসিদ্ধির ব্যবসা হতে পারে? এ কেমন রাজনীতি!!?
আজ ১৬ই ডিসেম্বর। আজ বিজয় দিবস। কথা বলার স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার স্বাধীনতা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এই মৌলিক চাহিদাকে ছাপিয়ে দিয়েছিল আত্মার মুক্তির আকাঙ্খা। সত্যিই কি আমরা তাকে অনুভব করি?
সেই ১৬ই ডিসেম্বর আর আজকের ১৬ই ডিসেম্বর! কত সীমাহীন ব্যবধান! সবকিছুতে, স্বপ্ন দেখায়, মূল্যবোধে, স্বাধীনতায়!
ওরা তো স্বপ্ন দেখেছিল, স্বপ্ন সার্থক করার জন্য জীবন বাজি রেখেছিল। আজ আমরা স্বপ্ন দেখি না। আমরা সব দেখেছি- শুধু দেখি নি মানুষের জীবনের পরিবর্তন আনার মতো কোন সিস্টেম, কোন নেতা!
আজ জরুরী অবস্থার মধ্যে ১৬ই ডিসেম্বর, তার কয়দিন পরে নির্বাচন। এমন এক সুতায় দাড়িয়ে আছি, যদি আমরা ভোট দেই, তাহলেও খারাপ আসবে, ভোট না দিলেও খারাপই আসবে, যেই লংকায় যাবে, সেই হবে রাবণ, নির্বাচিত অনির্বাচিত সবাই-ই।
হয়ত এখন মজাই করছি এই হাত-পা বাধা জীবনটা নিয়ে। কিন্তু কোথায় জানি মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। কেন কিছু করতে পারি না? এই অদৃশ্য কারাগার ভেঙে-চুড়ে গুড়িয়ে দিতে পারতাম!
আসলে পরিবর্তন, উন্নতি এগুলো এভাবে হয় না। স্তরে স্তরে হয়। ধীরে ধীরে হয়। আমরা কি পারি না, এই ১৬ই ডিসেম্বরকে ঘিরে নতুন কিছু করতে। হয়ত খুব ছোট কিছু। যা হয়ত ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। যা মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। হয়ত খুব খুব সামান্য হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। খুব ছোট করে হলে তাদের জন্য জমে থাকা এক বুক সম্মান জানাতে পারব।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
এবার আমি বড় হয়েছি, এবার আমি ভোটার......। কিন্তু তবুও জীবনের অন্যান্য নির্বাচনগুলোর মতো ঘরে বসেই কেটে যাবে সম্ভবত। লজ্জায় নিজের কাছেই কেমন ছোট হয়ে গেছি। আজ ১৬ই ডিসেম্বর, আর আমি ...!? তাদের ভালবাসা আর সম্মান আমি কেমন করে কোন মুখে জানাবো? স্বপ্ন দেখতেই ভুলে যাচ্ছি....। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমি কত কিছু পেয়েছি, ভাল থাকতে পারছি। কিন্তু তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি অসহায় নিশ্চুপ কেন?
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা য়াফু্ঊন - (হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল)
তুহীব্বুল য়াফওয়া - (আপনি মাফ করতে ভালবাসেন)
ফা' ফু আন্নী - (আমাকে মাফ করে দিন।)