টপিকঃ ✔ভাষার বিড়ম্বনা··♫·.۩`·☀·´۩.·♫··
✿ভাষা না জানলে থাকা সম্ভব নয়, সেরকম দেশগুলোর মধ্যে 'সাউথ কোরিয়া' অন্যতম। এখানে কিছু ঘটনা✿
১: 'মান্নান' বাংলাদেশ থেকে নতুন কোরিয়া এসেছে। একমাস চাকরি করে ছেড়ে দিয়ে সেলিম ভাইয়ের বাসায় আসলো।
সেলিম ভাই অনেক বৎসর ধরে কোরিয়া আছে, তাই ভাষায় ভালো দক্ষতা তার।
এখন মান্নানের নতুন জব দরকার। সেলিম মান্নানকে জিজ্ঞেস করছে:
সেলিম: কি ব্যপার তুমি দেশ থেকে নতুন এসেছো, ভাষা জানোনা, কাজ জানোনা।
চাকরি ছেড়ে দিয়েছো 'বস' তোমাকে কিছু বলেছে নাকি?
মান্নান: আমি যখন বেতন নিলাম তখন 'বস' আমাকে তরকারিতে বেশি বেশি ঝাল খেতে বলেছে।
সেলিম: কি বলছ তুমি এসব..... 'বস' তোমাকে ঝাল খেতে বলবে কেনো??:-/
মান্নান: আমি চলে আসার সময় বস বললো "ঝাল খা"
[ কোরিয়ান ভাষায়: 'ঝাল' অর্থ ভালো আর 'খা' মানে হচ্ছে যাও ] অর্থাৎ মান্নান'কে 'বস' বলেছে:
ভালমতো যাও আর সে মনে করেছে মালিক তাকে তরকারিতে বেশি ঝাল খেতে বলেছে।
২: সোহেল নতুন কোরিয়া এসে রেষ্টুরেন্টে কাজ করছে। সকালে ম্যানেজারের সাথে দেখা হলে ম্যানেজার সোহেলকে
বলে জোসিম....। সোহেল চিন্তা করে শালা ম্যানেজারের বাচ্চা আমার নাম ভূলে যায় কেনো?
তখন সে ম্যানেজারকে বুঝানোর চেষ্টা করে তার নাম সোহেল।
এক বন্ধের দিন সোহেল তার বাসায় আমাদের পরোটা'র দাওয়াত দিলো। এক পর্যায়ে সে জিজ্ঞেস করলো....
সোহেল: আচ্ছা হাশেম ভাই আমি একটা সমস্যায় আছি, ম্যানেজার প্রত্যেকদিন আমার নাম ভূলে যায়।
আমি: কি রকম!!! প্রত্যেকদিন নাম ভূলে যাবে কেনো????:-?
সোহেল: রেষ্টুরেন্টে কাচের জিনিষপত্র বেশি, আমি কাজ করার সময় সকালে ম্যানেজার এসেই বলে 'জোসিমে'।
ম্যানেজারকে যতোই বলি আমার নাম সোহেল আর অই ব্যাটা আমাকে বাংলাদেশের নায়ক 'জসিম' ডাকে।
ম্যানেজার কি নায়ক 'জসিম' এর ছবি দেখছে নাকি তাকে চিনে????
সবার তখন হাসি শুরু হয়ে গেছে..........=))
কারন 'জোসিম' শব্দের অর্থ হচ্ছে সাবধানে। কাঁচের জিনিষ যেনো না ভাঙ্গে তাই সোহেলকে
ম্যানেজার সাবধান করে আর সে মনে করে ম্যানেজার তার নাম ভূলে গেছে.................
৩: তখন মাত্র কয়েক মাস হয়েছে আমি 'সিউল' এসেছি।
হেলাল ভাই অনেক বৎসর ধরে এই দেশে আছে এবং আমার রুমমেট। কোরিয়াতে বেশিদিন থাকাতে বাংলা কথা বলার
সময়ও মাঝে মধ্যে উনি কোরিয়ান শব্দ বলে ফেলে। আর খুব ড্রিংক করে কোরিয়ানদের সাথে।
বিশেষ করে সেটারডে নাইটে মাতাল হয়ে ভোর রাতে বাসায় এসে সানডে সারাদিন ঘুমায়।
উনার আবার 'টাক' মাথা তাই সবসময় মাথায় ক্যাপ দিত।
তখন উইন্টার সিজন হওয়াতে বাইরে প্রচন্ড তুষারপাত ছিল আর উনি বাসায় এসে পায়ে মোজা পরেই ঘুমাতো।
একদিন ঘুম থেকে উঠে হেলাল ভাই এদিক সেদিক কি যেনো খুঁজছে, না পেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো তার মোজা কোথায়?
আমি তাকিয়ে দেখি মোজা সে পায়ে লাগিয়ে আছে। আর আমাকে জিজ্ঞেস করছে মোজা কোথায়!!!
সারারাত গিয়ে দিন চলে গেলো আর তার নেশার ঘোর এখনো কাঁটলো না।
হঠাৎ আমার খুব রাগ উঠে গেলো, আমি জোরে বলে উঠলাম: আপনার মোজা আপনার পায়ে, দেখেন না।
হেলাল ভাই তখন বললো: হাশেম কোরিয়াতে মোজা বলে ক্যাপ'কে.......................--(
অর্থাৎ উনি টাক মাথা ঢাকার জন্যে ক্যাপ খুঁজছে আর আমি মনে করেছি পায়ের মোজা।
✿ভাষার বিড়ম্বনা আরো আছে✿
☆ কোরিয়াতে ইন্ডিয়ার 'বিহার' রাজ্যের কাউকে পেলেও তাকে 'বিহারী' ডাকতে পারবেন না।
☆ তুর্কি গিয়ে যদি ম্যাংগো দেখেন তাহলে ভূলেও বাংলায় 'আম' বললে বিপদে পড়বেন।
☆ চায়নিজ খুবই কঠিন ভাষা। বলার ভুল হলে ভাল শব্দও গালি হয়ে যায়। তখন ধোলাই খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।[-X
যেমন: চায়না ভাষায় ফাষ্ট টোন, সেকেন্ড টোন, থার্ড টোন, ফোর্থ টোন, নিউট্রল টোন আছে। আর কোন এলফাবেট নাই।