Re: নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি
৪০।
তুমি আমারে অমৃত এনে দাও কেন নিজে উপবাসী রহি’।
মোর পথের দাহন আপন বক্ষে নিয়ে,
মেঘ হয়ে চল সাথে সাথে ছায়া দিয়ে।
মোর ঘুম না আসিলে কেন কাঁদ চাঁদ হয়ে ঢলঢল॥
আপনি প্রবেশ করেন নি। দয়া করে নিবন্ধন অথবা প্রবেশ করুন
প্রজন্ম ফোরাম » সাহিত্য-সংস্কৃতি » ছড়া-কবিতা » নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি
৪০।
তুমি আমারে অমৃত এনে দাও কেন নিজে উপবাসী রহি’।
মোর পথের দাহন আপন বক্ষে নিয়ে,
মেঘ হয়ে চল সাথে সাথে ছায়া দিয়ে।
মোর ঘুম না আসিলে কেন কাঁদ চাঁদ হয়ে ঢলঢল॥
৪১।
হিন্দু আর মুসলিম মোরা দুই সহোদর ভাই।
এক বৃন্তে দু’টি কুসুম এক ভারতে ঠাঁই॥
সৃষ্টি যাঁর মুসলিম রে ভাই হিন্দু সৃষ্টি তাঁরি
মোরা বিবাদ ক’রে খোদার উপর করি যে খোদকারি।
শাস্তি এত আজ আমাদের হীন-দশা এই তাই॥
দুই জাতি ভাই সমান মরে মড়ক এলে দেশে
বন্যাতে দুই ভাইয়ের কুটির সমানে যায় ভেসে।
দুই জনারই মাঠেরে ভাই সমান বৃষ্টি ঝরে —
সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে
চাঁদ সুরুযের আলো কেহ কম-বেশি কি পাই
বাইরে শুধু রঙের তফাৎ ভিতরে ভেদ নাই॥
৪২।
এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥
৪৩।
গলে টগর মালা কাদের ডাগর মেয়ে
যেন রূপের সাগর চলে উজান বেয়ে॥
তার সুডোল তনু নিটোল বাহুর পরে
চাঁদের আলো যেন পিছ্লে পড়ে
ও কি বিজলি পরী এলো মেঘ পাসরি’
চাঁদ ভুলে যায় লোকে তার নয়নে চেয়ে॥
৪৪।
আশ্বিনে পরবাসী প্রিয় এলো ঘরে গো মিটিল বধূর মন-সাধ (সখি রে)
রাধার চোখের জলে মলিন হইয়া যায় কোজাগরী চাঁদ (মলিন হইয়া যায় গো)।
৪৫।
আবার ভালোবাসার সাধ জাগে।
সেই পুরাতন চাঁদ আমার চোখে আজ নূতন লাগে।।
যে ফুল দলিয়াছি নিঠুর পায়ে
সাধ যায় ধরি তারে বক্ষে জড়ায়ে,
উদাসীন হিয়া হায় রেঙে ওঠে অবেলায় সোনার গোধূলি-রাগে।।
৪৬।
এসো ধরণীর দুলালী আলোর দেশে
যথা তারার সাথে চাঁদ গোপনে মেশে
৪৭।
দেব না আর শ্মশান যেতে, সহস্রারে রাখব ধ’রে।
খেলে সেথায় বেড়াবি মা রামধনু রং শাড়ি প’রে।
ক্ষয় হলো চাঁদ কেঁদে কেঁদে
(তারে) দেব মা তোর খোঁপায় বেঁধে
মোর জীবন মরণ বিল্ব জবা দিব মা তোর পায়ে তুলে॥
৪৮।
দেখে যারে দুল্হা সাজে সেজেছেন মোদের নবী।
বর্ণিতে সে রূপ মধুর হার মানে নিখিল কবি॥
আওলিয়া আর আম্বিয়া সব পিছে চলে বরাতি,
আসমানে যায় মশাল জ্বেলে গ্রহ তারা চাঁদ রবি॥
৪৯।
বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো
এসো গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো
এসো আঁধার রাতেরি চাঁদ পাতি মায়ারি ফাঁদ
এসো এসো মম স্বপন সাধ॥
৫০।
চাঁদের আলোকে ভরে না গো মন, দেখিতে চাই যে চাঁদ,
ফুলর গন্ধ পাইলে, জাগে যে ফুল দেখিবার সাধ।
(ওগো) সুন্দর, যদি নাহি দেবে ধরা
কেন প্রেম দিলে বেদনায় ভরা
রূপের লাগিয়া কেন প্রাণ কাঁদে রূপ যদি তব নাই॥
৫১।
ওরে ও মদিনা বলতে পারিস কোন সে পথে তোর
খেলত ধূলা-মাটি নিয়ে মা ফাতেমা মোর।।
হাসান হোসেন খেলত কোথায় কোন সে খেজুর বনে
পাথর-কুচি কাঁকর ল'য়ে দুম্বা শিশুর সনে
সেই মুখকে চাঁদ ভেবে রে উড়িত চকোর।।
মা আয়েশা মোর নবীজীর পা ধোয়াতেন যথা
দেখিয়ে দে সে বেহেশত আমায় রাখ রে আমার কথা;
তোর প্রথম কোথায় আজান-ধ্বনি ভাঙলো ঘুমের ঘোর।।
কোন পাহাড়ের ঝর্ণা-তীরে মেষ চরাতেন নবী
কোন পথ দিয়ে রে যেতেন হেরায় আমার আল-আরবি'
তুই কাঁদিস কোথায় বুকে ধরে সেই নবীজীর গোর।।
৫২।
তওফিক দাও খোদা ইসলামে মুসলিম-জাঁহা পুনঃ হোক আবাদ।
দাও সেই হারানো সালতানাত দাও সেই বাহু সেই দিল আজাদ।।
দাও সেই হামজা সেই বীর ওলীদ
দাও সেই উমর হারুন অল রশীদ
দাও সেই সালাহউদ্দীন আবার পাপ দুনিয়াতে চলুক জেহাদ।।
দাও সে রুমী সাদী হাফিজ
সেই জামী খৈয়াম সে তবরিজ
দাও সে আকবর সেই শাহজাহান দাও তাজমহলের স্বপ্ন সাধ।।
দাও ভা'য়ে ভা'য়ে সেই মিলন
সেই স্বার্থত্যাগ সেই দৃপ্ত মন,
হোক বিশ্ব-মুসলিম এক জামাত উড়ুক নিশান ফের যুক্ত চাঁদ।।
৫৩।
ওগো আমিনা তোমার দুলালে আনিয়া আমি ভয়ে ভয়ে মরি
এ নহে মানুষ বুঝি ফেরেশ্তা আসিয়াছে রূপ ধরি’॥
সে নিশীথে যখন বক্ষে ঘুমায়
চাঁদ এসে তারে চুমু খেয়ে যায়
দিনে যবে মেষ চারণে সে যায় মেঘ চলে ছায়া করি’,
সাথে সাথে তার মেঘ চলে ছায়া করি’॥
৫৪।
হায় হায় উঠিল মাতম আকাশ পবন ভুবন ভরি’।
আখেরি নবী দ্বীনের রবি বিদায় নিল বিশ্ব-নিখিল আঁধার করি’।।
অসীম তিমিরে পুণ্যের আলো
আনিল যে চাঁদ, সে কোথায় লুকালো
আকাশে ললাট হানি’ কাঁদিছে মরুভূমি
শোকে গ্রহ-তারকা পড়িছে ঝরি’।।
৫৫।
আসমানে মেঘ চলে ছায়া দিতে,
পাহাড়ের আঁসু গলে ঝরনার পানিতে,
বিজলি চায় মালা হতে,
পূর্ণিমার চাঁদ তার মুকুট হতে চায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
৫৬।
আঁখি-পাতা ঘুমে জড়ায়ে আসে
ওগো চাঁদ জাগিয়া থেকো সুদূর আকাশে।।
জাগিয়া থেকো কবরীর মালা
পথ যেন পায় সে তোমার সুবাসে।।
৫৭।
পেয়ে কেন নাহি পাই হৃদয়ে মম
হে চির-সুদূর প্রিয়তম॥
তুমি আকাশের চাঁদ
আমি পাতিয়া সরসী-ফাঁদ
জনম জনম কাঁদি কুমুদীর সম॥
নিখিলের রূপে রূপে
দেখা দাও চুপে চুপে
এলে না মূরতি ধরি তুমি নিরুপম॥
৫৮।
ভুলে দিয়ে যার মন ভরা তারে ভুলতে বলা অকারণ॥
চাঁদ চ’লে যায় আবার আসে ফিরে আসে ফাগুন হাওয়া
কোয়েল এসে যায় ক’য়ে তার মনে রাখার দাবি দাওয়া।
৫৯।
সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
এত খায় তবু ওদের বউগুলো সুঁট্কো
ছেলেগুলো প্যাঁকাটি, বাবুগুলো মুট্কো।
এরা কাগজের ফুল, এরা চোখে চাঁদ দেখে না।
ইটের ভিতরে কীটের মত কাটায় এরা রাত গো।
সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
প্রজন্ম ফোরাম » সাহিত্য-সংস্কৃতি » ছড়া-কবিতা » নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি
০.০৭৩২৭৯১৪২৩৭৯৭৬১ সেকেন্ডে তৈরী হয়েছে, ৮৬.২৩০৭৩৪০৫০২০৩ টি কোয়েরী চলেছে