টপিকঃ ধর্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা

ধর্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিনিয়ত গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে অসুস্থ শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি দ্বারা। যার জারজ ভ্রূণ হলাম আমরা। না এখন ঠিক জারজ সন্তান হয়ে উঠতে পারিনি; সেটা তো ৫ বছর পর হব, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষে ।কথা গুলো খুব নোংরা শোনাচ্ছে তাই না!
কিন্তু এর থেকেও অধিক নোংরামিতে বসবাস করছি আমরা।
পত্রিকার পাতা ওলটালেই দেখা যায় দেশের সর্বপ্রধান ও সর্বচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের দলীয় ক্রন্দল এর চিহ্ন । ক্ষমতাধর পদ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি,মারামারি,রক্তপাত… স্বনামধন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। কত শত যৌন হয়রানি।
এগুলো তো ফলাফল।
দেশের সবথেকে বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো যখন ভর্তি পরীক্ষায় দুর্নীতি করে তখন তো আর বলার ভাষা থাকে না।এই সব দুর্নীতি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে,তবুও শিক্ষা ব্যবস্থার মুল চালকেরা চোখে পট্টি দিয়ে বসে আছেন।কিন্তু আর কত? কিন্তু এগুলো কেনই বা হবে না! আমরাই তো বেছে নিচ্ছি এগুল।
দেশের মুল মেরুদণ্ডকে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে তো আমরাই মস্তিষ্কহীন করে দিচ্ছি। আমরাই মস্তিষ্কহীন পাগলদেরকে ক্ষমতার আসনে বসাচ্ছি সুতরাং পাগলামি তো আমাদেরকেই দেখতে হবে।আসলে এটা হল একটি চেইন বিক্রিয়া যেটা শুরু হচ্ছে সেই স্কুল জীবন থেকে। কর্মজীবনে এসে শুধু ফলাফল টা দেখছে সমাজ।
গল্পের শুরুটা হল psc ,jsc,ssc,hsc বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস দিয়ে।খুব অল্প বয়সেই কোমল হৃদয় গুলো ধাতস্থ হয় এই প্রক্রিয়ার সাথে। সোনার পাঁচের জোয়ারে গাঁ ভাসাতে এটাই একটি মাধ্যম। তবুও এসবের মধ্যে কিছু কিছু থাকে যারা স্রোতের উল্টোতে চলে।এবং টিকে থাকে। শিক্ষা ব্যবস্থা তখন ২ ধরনের সোনার পাঁচ পায়।এক মস্তিষ্কহীন জিপিএ ৫ আরেক হল প্রকৃত।তারপর আসে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি; এই প্রক্রিয়ার চিত্র তো এবছর দেশবাসী সরাসরিই দেখেছে। এটিই বহুত পুরানো একটি রীতি। প্রত্যেক ইউনিটের সিট বেচা কেনার পরও কিছু আসন থেকে যায় যেখানে যায়গা হয় মুষ্টিমেয় কিছু মেধাবির।
তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ বছর…… এই সময়টার মধ্যে আরও অনেক অনেক উন্নত দুর্নীতির সাথে তাদের পরিচয় হয়। …আসে চাকুরি যুদ্ধ ; নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বচ্চ CGPA ও দক্ষতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের অগ্রাধিকার পাবে।কিন্তু সেখানেও দুর্নীতি। নিয়োগের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা ও ক্ষমতাধর পা ধরা নীতি তখন অনুসরণ করতে হয়।
ক্ষমতাহীন মেধাবিরা তখন বাদ পরে যায়। এই সকল মেধাবিরাই অন্য কোন মাধ্যমে শিক্ষা বৃত্তি নিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে।বুকে চাপা অভিমান ও ক্ষোভ নিয়ে অন্য দেশের সিটিজেনশিপ নিচ্ছে এক সময়। বাংলাদেশ কিন্তু এখানে তার সোনার ফসলদের হারাচ্ছে। এ সবের ফাঁকফোকর দিয়েও যে সীমিত সংখ্যক মেধাবি দেশে থেকে যাচ্ছে তারাও পদে পদে অবহেলিত হচ্ছে মস্তিষ্কহীন সার্টিফিকেটধারিদের কাছ থেকে।কারন ওরাই তো সংখ্যাগরিষ্ঠ।
এই চেইন বিক্রিয়া দেশের ভিতরে ঘটে চলেছে তবুও সুধি সমাজ নির্বিকার।কেন? ……
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা অনেক উন্নতি লাভ করেছে। MDG থেকে SDG… 3G থেকে 4G… বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের র্যাংকিং সম্মানীয়। এটা সন্তুষ্টির। কিন্তু এ সবের অন্তরালে যে আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির বিষ ফোঁড়া লালন করছি! সেটাতে দৃষ্টিপাত না করলে যে খুব তাড়াতাড়িই সেটা ক্যান্সারে পরিনত হবে ! 

বিবি চাঁদ সুলতানা
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ;১ম বর্ষ;
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর।

Re: ধর্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা

আপনার সাথে আমিও একমত । আমি কোথায় যেন পড়েছিলাম একটা দেশকে শেষ করতে হলে তার শিক্ষা ব্যাবস্তা শেষ করে দাও ।আমাদের ও সামনে খুব খারাপ দিন আসছে

Re: ধর্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা

ধন্যবাদ smile

Re: ধর্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা

সুন্দর লেখা।