টপিকঃ পিতার স্নেহ কি হেরে যাবে?

আবহমান কাল থেকে বাঙালি জাতি এক সুপ্রাচীন ঐতিহ্য লালন করে, নরম পলিমাটির মত কোমল তাদের অন্তঃকরণ। মানবিকতাবোধে উজ্জীবিত কর্মকান্ড অতীতে অসংখ্যবার এ ভুখন্ডের মানুষকে মহিমান্বিত করেছে। এ দেশের মানুষের এই অনন্য বৈশিষ্ট্যের উপর অবিচল আস্থায় এক অসহায় পিতা তার সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে সন্তানের শারীরিক সমস্যা নিরসনে নতুন আশায় বুক বেঁধেছে।  সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামের এক মসজিদের ইমাম মোঃ আব্দুল গফুর আদরের মেয়ে মিমমাহ্। টাইফয়েডের কারণে ছোটবেলা থেকেই তার বাম পাটি অন্য পায়ের চেয়ে কিছুটা খাটো থাকায় সে অন্য মেয়েদের মতো ছুটোছুটি করতে পারে না। তার দুরন্ত শৈশবের নির্ভাবনার দিনগুলি যখন হাসি-আনন্দে ভরে থাকার কথা সে সময় এলাকার নানাজনের কটুক্তিতে বিমর্ষতা তার নিত্যসঙ্গী। মিম বলে, “বান্ধবীরা খেলাধুলা করে, আর আমাকে বসে থাকতে হয়। খুব কষ্ট হয় তখন।” মেয়ের এই দুঃখ তার পিতার স্নেহশীল মনকে প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খায়। তাই মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে তিল তিল করে জমানো সমুদয় সঞ্চয় সাথে নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছুটে আসেন রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে। পা ভালো হওয়ার আশায় মিমমাহ্ এর বিষাদমাখা মুখের কোণায়ও ফুটে ওঠে একচিলতে হাসি। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাও শুনিয়েছেন আশার বাণী, আব্দুল গফুরকে জানিয়েছেন অপারেশন করে মেয়ের পা স্বাভাবিক করা সম্ভব। তবে অপারেশন করাতে প্রাথমিকভাবেই জমা দিতে হবে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু দরিদ্র আব্দুল গফুরের পক্ষে তো এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। বাবার কাছে টাকা নেই  জেনে ‘আর বুঝি সুস্থ হওয়া হবে না’, এই ভেবে মিমমাহ্ এর ফুটফুটে মুখটিতে আবারও নেমে এসেছে রাজ্যের আঁধার, মুছে গেছে মুখের হাসি। নিজের অক্ষমতার জন্য চরম হতাশায় নিমগ্ন হওয়ার ক্রান্তিলগ্নে হঠাৎ চমকের ন্যায়  এ পিতার মনে আবারও নতুন আশার সঞ্চার ঘটেছে এ দেশের মানুষের সীমাহীন মমত্ব আর মানবিকতার কথা মনে পড়ায়। অসহায় আব্দুল গফুর তার মেয়ের চিকিৎসার্থে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। মিমমাহ্-কে সাহায্য পাঠানো যাবে এই ঠিকানায়: আইবুল আলম, সঞ্চয়ী হিসাব নং ৩৪০-৭৭-৬১৯, সোনালী ব্যাংক, কামারখন্দ শাখা, সিরাজগঞ্জ। এ ছাড়া হাসপাতালে গিয়েও সরাসরি সহযোগিতা করতে পারবেন। মোঃ আব্দুল গফুরের মোবাইল নম্বর:০১৫৫৬-২৮৬৫৬০। পঙ্গু হাসপাতালের ৪র্থ তলার মহিলা ওয়ার্ডের ১২নং বেডে ডাক্তার ওয়াহিদুর রহমান ও ডাক্তার দীপুর তত্ত্বাবধানে থাকা মিমমাহ্ বর্তমানে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে কখন আসবে কাঙ্খিত সাহায্য। দেশের মানুষের মানবিতার উপর আস্থা রাখা অসহায় আব্দুল গফুর মেয়েকে প্রতিদিন আশার বাণী শোনান, প্রার্থিত সাহায্য আসবেই, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে শুরু হবে তার জীবনের নতুন গল্প। আমরা কি পারি না এই অসহায় পিতার অবিচল আস্থার প্রতিদান দিতে? দেশের হৃদয়বান, স্বচ্ছল মানুষেরা আজ কোথায়? পিতার স্নেহ কি হেরে যাবে?