টপিকঃ প্রজন্ম মিটআপ - ২০১৫ v1.0
একটা সাকসেসফুল ইভেন্ট করতে কি লাগে ? ভাল একটা প্রস্তুতি, কি কি করা হবে, না হবে, কতজন আসবে, তাদের খাওয়াদাওয়া, ভেন্যু ইত্যাদি ঠিক করা, সবকিছু মিলিয়ে বেশ লম্বা সময় চলে যায়। তারপরও খানিকটা কিন্তু মাঝে মাঝে থেকেই যায়। কিন্তু আসলেই কি তাই ?
মাত্র ৮ দিন আগে প্রস্তাব, ৫ দিন আগে থেকে শুরু করা প্রিপারেশন, ১ দিন বাকি থাকতে আনএক্সেপেক্টেড কারনে প্ল্যান ক্যান্সেল করে নতুন করে ম্যানেজ করা। প্রজন্ম ফোরাম ২০১৫ মিটআপের পিছনের কাহিনি এক্সাক্টলি এরকম এবং এটি সাকসেসফুল।
১২ তারিখে মিজভীবাপ্পার পোষ্ট, রহস্যমানব যথারীতি দৌড়াদৌড়ি করে স্পন্সর রেডী করে ফেললেন। আমাকে মেসেজ দেয়া হলো ১৪ তারিখে। আমি সত্যি বলতে তখনো নিরাশ ইভেন্ট নিয়ে। পলাশ ভাই আমার সাথেই থাকেন আজকাল। পলাশ ভাইকে জিগেষ করলাম, কি করা যায় বলেন তো। পলাশ ভাই জিগেষ করলেন যে সত্যিই ইভেন্ট হবে কিনা। করে ফেলা হোক এই সূত্র ধরে পলাশ ভাই নিজেই লেগে গেলেন সবদিকে। পরেরদিন স্পন্সরদের ফোন করে বাজেট ঠিকঠাক করে ফেলা হল, তখন পর্যন্ত পলাশ ভাই আর আমার দৃঢ় ধারনা অনুষ্ঠানে কিছুতেই ১২-১৫ জনের বেশী হবে না। কিন্তু চেহারা পাল্টে গেল ঠিক দুইদিন আগে। পলাশ ভাই ফোন দিয়ে বিশাল চিন্তান্বিত কন্ঠে বললেন, ভাই, এটেন্ডেন্স তো মনে হচ্ছে ৩০ ছাড়িয়ে যাবে, এখন কি হবে ?
যাইহোক, পলাশ ভাইয়ের অফিসে একজন করিৎকর্মা লোক আছেন, নাম হচ্ছে "তালেব"। পলাশ ভাই ইতিমধ্যে তালেব সাহেব ফোন দিয়ে খাবার দাবার, কেক, ব্যানার সবকিছুর খোঁজ রেডী করে ফেললেন। ব্যানার ডিজাইন কি হবে এই দায়িত্ব দেয়া হইলো ফিরোজকে (ত্রিনিত্রির রাশিমালা)। কিন্তু বেচারা নিজের কাজের চাপে বেমালুম ভুলেই গেল। রেসকিউতে এগিয়ে এলেন কয়েকজন। ফিরোজের করা গতবারের ব্যানারটাতেই আরেকটু কাজ করে চমৎকার আউটলুকে নিয়ে এলেন ফোরামের অরুণদা। ব্যানার রেডী, খাবারদাবারের ব্যাবস্থাও রেডী। রাতে বসে বসে চিন্তা করতে লাগলাম, কেক কি নিবো নাকি বাদ থাকবে। সকালে উঠে, যা হওয়ার হবে তাই ভেবে কেক কিনতে রওনা দিলাম। এবং আবারো তালেব সাহেব বরাবরের মতই এখানে হেল্পিং হ্যান্ড।
ইলিয়াস ভাই আগেই পৌছে গেছেন, রহস্যমানবও পৌছে গেছেন। আমরা পৌছালাম ১১টার একটু পরে। তখন পর্যন্ত আমরা এই ক'জনই। খানিক্ষন পরে শামীম ভাই হাজির। একটু পর একে একে আসা শুরু করলেন বাকিরাও।
একটু পরে আসলেন তাহসান কাব্য। যতটা চমৎকার নাম, আমি মনে করেছিলাম চশমা পড়া ফর্সা চেহারার নরমসরম কেউ হবে। কিন্তু বাস্তবে পুরাই গাট্টাগোট্টা একটা মানুষ। দেখামাত্র আমার মনে হলো মাহবুব ভাইর অংশটুকু ইনিই কাভারআপ করে ফেলবেন। এসেই লেগে গেলেন ক্যামেরা গিয়ার নিয়ে।
তাহসান কাব্য ভাইয়ের অংশটুকু বেশ মজার। উনি এসেই অকপটে স্বীকার করলেন, যে উনি আসলে তেমন কাউকে চিনেন নাই, কিন্তু উনি একমাত্র আমাকেই চিন্তে পেরেছেন, আমি নাকি "আশিফ শাহো"।
একমাত্র যাকে চেনা হলো তাকেই ভুল চেনা।
যাইহোক, রাজু ভাই আসার পর বেচারা আবারো কনফিউজ হলো। আমাকে জিগেষ করে বসলেন, আপনার নাম কি মেহেদী নাকি রাজু, আমি নার্ভাস হয়ে যাচ্ছি।
যাইহোক, মূলধারাতে ফিরি,
খানিকটা চমকে দিয়ে তারেক ভাইও ফোন করে জানালেন উনিও আসবেন। দেখতে দেখতে ভেন্যু ভর্তি হয়ে গেল লোকজনে। খানিক্ষন পরে হাজির হলেন সয়ং হাঙ্গরীকোডার ওরফ রাজু ভাই, সাথে প্রজন্মমাতা, আইমিন ভাবী আর সাথে প্রজন্মের রাজকন্যা, একটু পরে চলে আসলেন প্রজন্মের আরেক এডমিন, সুমন ভাইও। অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে পুরোপুরি জমে গেল! রাজু ভাই সবার জন্য দুই প্যাকেট চকলেট নিয়ে এলেন। গোয়েভা ফ্লেভারড চকলেট। সবাইকে ৪-৫টা করে দিয়ে বাকি যা থাকলো আমি আর তারেক ভাই গাপ করলুম।
ততক্ষনে লাঞ্চ চলে এসেছে। লেগে গেলাম লাঞ্চ করতে। লাঞ্চের পরে বিদায় নিলেন ভাবী আর রাজকন্যে। রাজু ভাই উনাদের রেখে আবার আসলেন অনুষ্ঠানে। এইবার রাজু ভাইর নেতৃত্বে শুরু হলো অনুষ্ঠানের জমজমাট অংশটুকু।
ইলিয়াস ভাইয়ের নেহায়েত কপাল মন্দ। উনি ঠিক তার আগে আগেই অনুষ্ঠান ছেড়ে বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
কেক কাটার অংশটুকু পুরোটাই ষড়যন্ত্র ছিল। আমি আশিফকে আনতে নীচে গেছি, এই ফাঁকে আমাকে আর আশিফকে রেখেই সবাই মিলে কেক পুরো শেষ করে দিয়েছে। স্পেশালী পলাশ ভাই আর বাবর ভাই।
আপনাদের দুইজনরেই ব্যান করা দরকার একসপ্তাহের জন্য।
যাইহোক, ফোরামে কার কি অনুভূতি, কার কেমন অভিজ্ঞতা, সুমন ভাই, তারেকভাইদের গল্প। তারপরে ফোরামের কোথায় কি করা যায়, কি ধরনের ফ্যাসিলিটি হলে বেটার হয় এইসব নিয়ে বেশ আলোচনা হলো। আর একটা টিশার্টে সবাই সাইন করলো সেই গল্পের ফাঁকে ফাঁকে। তারপর সবাইকে ধন্যবাদের মাধ্যমে শেষ হলো অনুষ্ঠান, তখন বাইরে পুরো অন্ধকার।
অনুষ্ঠানের সামগ্রিক একটা ধারনা:
ক) পলাশ ভাই প্রায় পুরোটুকু কোঅর্ডিনেট করেছেন। সেই কারনে সবার উচিত আমাকে থ্যাংকস দেয়া, এইরকম একটা একটিভ লোককে আমিই দায়িত্ব দিয়েছিলাম বলে।
খ) পলাশ ভাইকেও অনেকটা ক্রেডিট দেয়া যায় উনি তালেব ভাইকে ম্যানেজ করেছেন বলে। এই তালেব ভাই না থাকলে অত চমৎকার কেকটা হতো না। কিংবা দুপুরের খাবারটা ওরকম ভাল হতো না হয়তো।
গ) ইলিয়াস ভাই এখন থেকে ফোরামের প্রজেক্ট ম্যানেজারও। ফোরামের সামনে যেসব বাগ ফিক্সিং বা ফীচার নিয়ে কাজ করতে হবে এইগুলোর দেখাশুনা উনি করবেন, ফিক্সিং বা ফীচার ইমপ্লিমেন্টগুলো সংশ্লিষ্টরা করে দিবেন।
ঘ) প্রজন্ম এখন বড় একটা সফটওয়্যার প্লাটফর্মে সুইচ করার কথাও চিন্তা করছে। সেটা হতে পারে পিএইচপিতেই করা myBB কিংবা এডভান্সড এবং মডার্ণ ইন্টারফেসে তৈরী করা nodeBB তে। বিশেষত, nodeBB জাভাস্ক্রীপ্টে চলে বলে অনেক বেশী ইন্টারএ্যাক্টিভ। অনেক ফীচার আউট অফ দ্যা বক্স আছেই। আগ্রহীরা দুটো ইঞ্জিনই ঘেঁটে দেখতে পারেন। ইঞ্জিন মাইগ্রেট হলে সেখানে সালেহ ভাই একজন বড় কন্ট্রিবিউটর হবেন সেখানে এমনটাই কথা হয়েছে সেখানে।
ঙ) ২০০৭ এ শুরু হয়েছিল প্রজন্মের পথচলা। সেই হিসেবে ২০১৭ তে ১০ বছরে পা দিবে প্রজন্ম। আর ১০ বছর পূর্তী উপলক্ষে আরো বড়সড় পরিসরে কিছু করার চিন্তাই করা হয়েছে। এই ব্যাপারে বিস্তারিত সময়মত জানানো হবে।
সাধারনত আমি ছবি আর গল্প একই সাথে করি, কিন্তু এইবার সেটা পারছি না। কাজেই গল্পটুকু আগে করে ফেললাম।
ছবিগুলো শুরু এখান থেকে, ক্যাপশন সহ।
ক) শামীম ভাই, মেহেদী৮৩, তারেক হাসান
খ) তারেক ভাই।
গ) মেহেদী৮৩, ইলিয়াস আহমেদ, তারেক হাসান
ঘ) রিমন রনবীর, ষাইফ ঋাষেল
ঙ) মরুভূমির জলদস্যু:
চ) পলাশ মাহমুদ:
ছ) নাইসা, রাজু ভাইয়ের রাজকন্যা।
জ) ইলিয়াস আহমেদ, রহস্য মানব
ঝ) পরিবেশ প্রকৌশলী
ঞ) হাঙ্গরীকোডার
ট) আউল:
ঠ) মিজভীবাপ্পা
ড) নীলকাব্য:
ঢ) হাঙ্গরীকোডার:
ত) বাবর আল আমিন:
থ) কেক:
এ্যান্ড: