সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন মহানাজমুল (১২-০৮-২০১৪ ১১:১৯)

টপিকঃ আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

**ছোট ছোট আপডেটে রোমন্থন এগুবে। সবার সহযোগিতা আর অভিমত কামনা করছি।

১.
তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমাকে মুসলমানি(খৎনা) করানো হল, ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ। বের না হতে পারলেও মন খারাপ হল না, কারন হাতে এলো একটা ভিডিও গেম। পেনসিল ব্যাটারীর সাহায্যে চলে এইটা।আমি বেজায় খুশি। কারন, সারাদিন ভিডিও গেম খেললেও আম্মা কিছু বলছে না। এ থেকে জেড পর্যন্ত মোট ২৬টা গেম। প্রথম দিকের গুলা মারামারি, গোলাগুলি তবে এইচ বা আই,জে,কে থেকেই বিল্ডিং গেম। দিন রাত খেলতে খেলতে আমি ব্যাটারি শেষ করে ফেলি, আবার কিনি। ব্যাটারি কেনার টাকা খুজতে গেলেই আম্মার হাতে মাইর খাই। ওই আমার প্রথম গেমিং।


***
আমাদের কুমিল্লার বিখ্যাত ভিডিও গেমের আখড়া হল শাপলা মার্কেট।কুমিল্লা শহরে বড় হইছে,অথচ শাপলা মার্কেটে যায় নাই এমন পোলাপাইন কমই আছে।সেভেন এইটের দিকেই ওইখানে যাওয়া শুরু।এলাকার দোকানে প্র্যাকটিস করলেও ঝানু গেমাররা এখানেই কিং অফ ফাইটার চ্যালেন্জ কিংবা টুর্নামেন্ট খেলে।তাদের সামনে আমরা দুধভাত। আমি আর সানি তাই খেলতাম মোস্তফা। ওইখানেও ঝানুদের রাজনীতি। কসাই আসলে গার্ড দেয় না, সব খাবার একলাই খায়...।তাই আমরা গেম ওভার নিতাম। শাপলা মার্কেটে গেম ওভার নিত ছয় টাকা॥
(চলবে)

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

মোস্তফা। খেলাটার নাম অনেক পরে জেনেছিলাম। ক্যাডিলাকস এন্ড ডায়নোসরস। ভালো লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ। লেখার পরিমাণ আরও বেশি হলে ভালো হবে।

রাবনে বানাদি ভুড়ি :-(

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

সুন্দর গেমিং স্মৃতিচারণ ভাল লাগল । লিখে যান অবিরত

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

মোস্তফা গেম ওভার আমরা খেলতাম ২৪টাকায়। একসময় প্রচুর খেলতাম। একবার গেম খেলতে গিয়ে ৫টাকায় আমার হাতঘড়ি (ক্লাস ফোরে পড়ি মনে) বিক্রি করে দিয়েছিলাম tongue
ভিডিও গেমের দোকানে ঢুকা এরপর নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপরও যেতাম, লুকিয়ে।

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

লিখে যান অবিরত hairpull

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন মহানাজমুল (১২-০৮-২০১৪ ১১:২৪)

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

**ছোট ছোট আপডেটে রোমন্থন এগুবে।সবার অভিমত কামনা করছি।

২.
আব্বা মোবাইল কিনল নকিয়া ১৬০০।এখনকার মত তখন মোবাইল এতটা ব্যক্তিগত ছিল না,মুরুব্বিদের মোবাইলও ধরা যাইতো।ওইটাতে তিনটা গেম- স্নেক,রেপিড রোল আর ফুটবল। এর ভিতরে স্নেকটা বেশি মজার।ক্লাসিকে দেয়াল নাই,কেম্পেইনে আছে।একটা সময় সাপ যতই লম্বা হোক না,স্কীনে জায়গা না থাকলে,আর বাড়ে না।তখন খুবই সাবধানে খেলতে হয়,তিল পরিমান ভুল হলেই মৃত্যু।হাতের মুঠোয় গেম পাইয়া এর ষোলকলা পূর্ণ করলাম।কানে এখনো সেই সাপটার ফোঁস ফোঁস বাজে, আর কিছুক্ষণ পর পর বোনাস আসে,যত তাড়াতাড়ি পারা যায় খাইতে হবে।বেজে উঠে একটা ঘন্টা 'টং'।

***
মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ৫ পাওয়ায় আব্বার ব্যাংক থেকে পুত্রের উচ্চমাধ্যমিক পড়ার জন্য কিছু টাকা বোনাস দিল।আমি আব্বার হাতেপায়ে ধরে সেই টাকা হাতিয়ে নিলাম।কিনলাম সেকেন্ড হ্যান্ড একটা সিমবিয়ান মোবাইল।ইয়া বড় সাইজ।নকিয়া ৩৬৫০।নেট ১জিবি নিলাম ৩০০ টাকা দিয়ে।হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট,হাতের মুঠোয় দুনিয়া।জাভা গেমিং এর দুয়ার খুলল।ওয়েপট্রিক ছিল জাভা গেম নামানোর সবচে বিশ্বস্ত সাইট।আউল ফাউল জায়গা থেকে গেম নামালে অনেক সময় চলতো না।কত এরুম হইছে ৯৮%এ আইসা প্যাকেজ শেষ! চোখে পানি!!
(চলবে)

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

মোস্তফার  নাম শুনলে আমার মাথায় আগুন ধরে যেত একসময়  hairpull hairpull   ছোট ভাইটা দৌড়ানোর আগেই এই গেমের পাল্লায় পড়েছিল

এক টুনিতে টুনটুনালো সাত রানির নাক কাঁটালো

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

২০০২ এ যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন থেকেই ভিডিও গেমস খেলা শুরু, এ এক অন্যরকম জগত, এর পরের কয়েকটা বছর আমার বেশিরভাগ ঘটনাই বোধ করি ভিডিও গেমস সংক্রান্ত ছিলো, তখন খেতে বসতে, পড়তে যখনই যাই করি, মাথাতে শুধু কিভাবে গেমসে কি খেলবো, কাকে ডুয়েল ফাইটিং এ কোন কম্বোটা মারবো এই নিয়েই যতো চিন্তা  blushing

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন মহানাজমুল (১৩-০৮-২০১৪ ২২:২৯)

Re: আমার গেমিং জীবন ( তার-ছেড়া-কাউয়া এর টপিক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

**ছোট ছোট আপডেটে রোমন্থন এগুবে। মিলি আপু আর রাসেল ভাইকে ধন্যবাদ।

৩.
ইন্টারের পর ঢাকায় ছিলাম ৩মাস।উছিলা কোচিং।মেসে কাফি ভাইর পিসিতে শুরু হল ভার্চুয়াল পুল টুর্নামেন্ট। যেমনই খেলিনা কেন,হল প্রতিযোগিতামুলক গেমিংয়ে হাতেখড়ি। প্রতিটা ম্যাচই টান টান উত্তেজনাকর। চাতক পাখির মত বাকি প্রতিযোগিরা তাকিয়ে থাকে, মাঝে মাঝে শুরু হয় স্লেজিং। মেসভিত্তিক কম্পিউটার গেমিংয়ের উত্তেজনা বিশ্বকাপের চেয়ে কোন অংশেই কম না।

***
জাভা গেম খেলেছি প্রচুর। এস৬০ আর এস৪০ তে। অনেক গেম আমি জাভা মোবাইলেই শিখেছি, খেলেছি যা হয়তো আর জীবনেও খেলার সুযোগ পাব না। যেমন- সুডুকো, প্যাকম্যান, ব্রেইন চ্যালেন্জ। এমনকি কার্ড খেলা আমি জাভায়ই শিখেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানকেন্দ্র হলো কলার ঝুপড়ি। সেখানে ফ্রেশরা সবার আগে শেখে কার্ড খেলা।আমি বাস্তব কার্ড খেলার আগেই ফোনে পোকার থেকে শুরু করে ব্ল্যাকজ্যাক পর্যন্ত ভেজে রেখেছি। ফলে ঝুপড়ির কার্ড খেলায় মজতে দেরি হল না।

***
ফার্স্ট ইয়ার ফাইনালের পরে উঠি মমিনবাগের মেসে। এখানে হয় ক্রিকেট২০০৭ আর রোডরেশ প্রতিযোগিতা। নাচানাচি-বিশাল উন্মাদনা।
নিজেই পিসি কিনব সিদ্ধান্ত নিলাম। উদ্দেশ্য ক্রিকেট২০০৭ প্র্যাকটিস।
(চলবে)