রাব্বি হোসেন লিখেছেন:ফয়সল সাইফ ভাই, আপনি এখনো বিংশ সতাব্দীতেই পড়ে আছেন। এটা একবিংশ শতাব্দী। আপনার এই পোষ্টের প্রতিটা যুক্তি এবং আপনার আগের যুক্তিগুলো এই টপিকের আগের পোষ্টগুলোতে খন্ডন করা হয়েছে।
রিসেন্টলি বিবর্তনবাদ বা প্রান এর নিজে থেকে তৈরি হওয়ার বিরুদ্ধে বলেছেন এমন একজন বিজ্ঞানীর রেফারেন্স দিন তো (অবশ্যই কোন প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীর রেফারেন্স দিবেন সাথে লিঙ্ক সহ)।
উনি এমন দুই জনের উক্তি আউট অব কন্টেক্সট তুলে দিলেন, যাঁরা নিজেরাই বিবর্তনন তত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
প্রাচীন গৃক সভ্যতা থেকে ১৭ শতাব্দী পর্যন্ত মানুষের ধারণা ছিলো প্রাণ "স্বতঃস্ফূর্তভাবে" জন্ম নেয় (spontaneous generation of life)। চাল, গমের বস্তা ফেলে রাখলে কিছুদিন পরে ইঁদুরের বাচ্চা দেখা দেয়, খোলা বাতাসে মাংস ফেলে রাখলে কিছু পরেই মাছির লার্ভা দেখা যায় - এসব দেখে মানুষের ধারণা ছিলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে নতুন প্রাণ সৃষ্টি হয়; বলা বাহুল্য চার্চেরও আপত্তি ছিলো না; স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণ মানেই ঈশ্বরের নাম করে টু পাইসের ব্যবস্থা।
১৮শ শতাব্দীতে ল্যুই পাস্ত্যুর spontaneous generation থিওরীকে চিরকালের জন্য রিতীমত ধ্বংস করে দেন। পাস্ত্যুর biogenesis তত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন। বায়োজেনেসিস মানে - শূন্য থেকে প্রাণের সৃষ্ট হয় না, বরং জীবিত প্রাণী থেকে নতুন প্রাণ জন্ম হয়। যেমনঃ মাংসপিণ্ডটি ঢেকে দিয়ে মাছিদের ডিম পাড়তে বাধা দিয়ে তিনি দেখিয়েছিলেন ওই মাংসে নিজে থেকে কোনো লার্ভা সৃষ্টি হয় না।
আর পাস্ত্যুরের সমসাময়িক ডারউইন ও রাসেল ওয়ালেস বায়োজেনেসিস পরিবর্ধিত করেছেন, তাঁরা দেখিয়েছেন কিভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে নতুন প্রজন্ম, প্রজাতী থেকে নতুন প্রজাতীর জন্ম নেয়।
অষ্টাদশ শতাব্দী-কে তাই পাস্ত্যুর ও ডারউইনের শতাব্দী বলে ডাকা হয়।
তবে পাস্ত্যুর ও ডারউইনের মধ্যে মতভেদ ছিলো - পাস্ত্যুর মনে করতেন শূন্য তো বটেই, অজৈব পদার্থ থেকেও প্রাণ জন্ম নিতে পারে না। কিন্তু ডারউইন মনে করতেন তা সম্ভব - এ্যাবায়োজেনেসিস বা জড় সোর্স থেকে প্রাণের উদ্ভব হওয়া সম্ভব। ভাবতে অবাকই লাগে প্রায় ১৫০ বছর আগেই ডারউইন একটি ক্লু দিয়ে গিয়েছিলেন যা ল্যাবে পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়ে উঠতেই মানবজাতীর আরো ৭০+ বছর লাগবে। ডারউইন তাঁর বন্ধু বিজ্ঞানী ডালটনকে একটি চিঠিতে প্রাণের আবির্ভাব সম্পর্কে লিখেছিলেনঃ
"warm little pond, with all sorts of ammonia and phosphoric salts, lights, heat, electricity, etc. present, so that a protein compound was chemically formed ready to undergo still more complex changes"
C. Darwin to J. D. Hooker
আলেক্সাণ্ডার ওপারিন ১৯২০-এর দশকে ডারউইনের এ্যাবায়োজেনেসিস (জড় উৎস থেকে প্রাণের উৎপত্তি) ধারণাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করান। ওপারিন ও হলদেন (ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী) primordial soup (আদি স্যুপ) হাইপোথিসিস খাড়া করেন। ওটা ডারউইনের warm little pond-এরই আপডেটেড বিংশ শতাব্দী ভার্সন। ওপারিন-হলদেন থিওরীটা এরকম - নবোজাত প্রাগৈতিহাসিক, উত্তপ্ত পৃথিবীর উষ্ণ মহাসাগর মিনারেল স্যূপের ভূমিকা পালন করেছে, তার সাথে ছিলো অক্সিজেনহীন বায়ুমণ্ডলের রিডিউসিং গ্যাস, প্রখর সূর্যালোক, বজ্রপাত ইত্যাদি। এমন পরিবেশে অর্গানিক মলিকিউল সৃষ্টি হতে পারে, এসব জটিল অণুরা নিজের কপি প্রস্তুত করতে সক্ষম (প্রজনন), শক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম (বিপাক)।
তবে হলদেন বা ওপারিন হাইপোথিসিস দিলেও প্রমাণ দিতে পারেন নি।
ডারউইনের "উষ্ণ কেমিকেলপূর্ণ পুকুর" বা ওপারিন-হলদেনের "আদি স্যূপ" পড়ে একটু চেনা চেনা লাগছে? লাগাই স্বাভাবিক। কারণ আরো ৩০ বছর পরে ইউরী আর মিলার ল্যাবে এ্যামিনো এসিড তৈরী করে দেখিয়েছেন।
আর তারপরে কৃক ও ওয়াটসন ডিএনএ-র গঠন আবিষ্কার করেছেন।
ভাবলে অবাকই লাগে, যখন ডিএনএ/আরএনএ সম্পর্কে মানুষ জানতো না, এ্যামিনো এসিড তৈরীর পদ্ধতিও অজানা ছিলো - সে যুগেই ডারউইন, ওপারিন, হলদেনের মত লোক কোনো পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াই প্রায় সঠিক ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছিলেন!
ফয়সল সাইফ লিখেছেন:আরও একজন বিবর্তনবাদের সমর্থক জেফরি বেটা যিনি একজন জিওকেমিসট বলেছেন -
@ফয়সল ভাইঃ আল্লার ওয়াস্তে আপনার রেফারেন্স সোর্স বদল করুন। মলিকিউলার জেনেটিক্স নিয়ে দুনিয়া ঝড়ের গতিতে আগাচ্ছে, আর সুশীলদের গেয়্যানের উৎস এখনো পড়ে আছে "বিবর্তন মানে কুকুর/বান্দর হইলো মানুষের পিতা" জাতীয় রিডিকিউলাস ধারণা নিয়ে।
তাঁর নাম জেফরী বেটা নয়। তিনি প্রফেসর জেফরী বাদা - প্রাণের উৎস নিয়ে বেশ কিছু রিসার্চ করছেন।
যাকগে, কপিপেস্ট থেকে কপিপেস্ট থেকে কপিপেস্ট থেকে কপিপেস্ট করলে কিছু ভুলভ্রান্তি হতেই পারে।
কুনো ব্যাপার না। মানুষ মাত্রেই ভুল। ম্যান ইয মরঠ্যাল! 
Calm... like a bomb.