আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:১। শুধু মাত্র বুদ্ধি দাড়াই কি আমরা মানুষ?
বুদ্ধির কারণেই মানুষ - এটা অতি সরলীকরণ হয়ে যাবে। তবে ইন জেনারেল, হায়ার ইণ্টেলিজেন্সের কারণেই মানুষের এত আধুনিক সভ্যতা গড়ে উঠেছে।
মানুষের (হোমো) একাধিক প্রজাতী ছিলো। হোমো নিয়াণ্ডার্টাল, ফ্লোরেনসিস, ডেনিসোভান ইত্যাদি বিলুপ্ত মানব প্রজাতী সবগুলোই আমাদের মত হোমো হ্যাবিলিস/হোমো ইরেক্টাস পরিবারের সদস্য।
নিয়াণ্ডার্টাল মানুষ প্রায় ২৫ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে টিকে ছিলো। আর আমরা আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সদের বংশলতিকা খুবই লজ্জাজনক রকমের স্বল্পদৈর্ঘ্য - টেনেটুনে বড়জোর ১.৫ থেকে ২.২ লক্ষ বছর পর্যন্ত পেছানো যায় আমাদের আবির্ভাব। নিয়াণ্ডার্টাল মানুষের বুদ্ধিমত্তা আমাদের কাছাকাছিই ছিলো - কিন্তু ওরা ২৫ লক্ষ বছরে যা করতে পারে নি, আমরা দেড়/দুই লক্ষ বছরে তা করতে পেরেছি। ইনফ্যাক্ট - আফৃকা থেকে মাইগ্রেট করে ক্রো ম্যাগনন প্রজাতীর প্রাগৈতিহাসিক ইউরোপে অনুপ্রবেশের কারণেই নিয়াণ্ডার্টাল প্রজাতী বিলুপ্ত হয়েছিলো বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।
পৃথিবীর প্রাণী জগৎের ওপর মানুষ কর্তৃত্ব করছে - এর পেছনে একটি বড় ফ্যাক্টর হলো ইণ্টেলিজেন্স।
আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:২। তিমি,ডলফিন এদের তো বুদ্ধি আছে কিন্তু উন্নতি করতে পারছে না কেন আর মানুষের কাছে হার মানে কেন?
বুদ্ধি সব প্রাণীরই আছে। কেচোঁ বা মাছিরও সীমিত হলেও ইণ্টেলিজেন্স আছে। মানুষের পর ডলফিন, অক্টোপাস, দাঁড়কাক, হাঙর, শিম্পাণ্জী এসব প্রাণীকে সবচাইতে বেশি বুদ্ধিমান বলা হয়। তবে মানুষের বুদ্ধিমত্তার লেভেল আর ওদের লেভেলের মধ্যে পার্থক্য আছে। মানুষের ইণ্টেলিজেন্স অনেক এ্যাডভান্সড লেভেলের।
ইণ্টেলিজেন্সের কিছু কমন ফীচারঃ
টুলিং - বিভিন্ন প্রজাতী টুলস আবিষ্কার ও ব্যবহার করতে শিখেছে। যেমন - শিম্পান্জী/গরিলারা শক্ত বাদামের খোসা ভাঙার জন্য পাথর ব্যবহার করতে জানে। ল্যাবের খাঁচায় বন্দী বানরের হাতের নাগালের বাইরে কলার থোকা ঝুলিয়ে রাখা। বানরটিকে একটি ছোট লাঠি দিয়ে দেখানো হলো কিভাবে লাঠি দিয়ে কলার থোকা হাতের নাগালে আনা যেতে পারে। কিছুদিন পরে দেখা গেলো বানরটি টুলস ব্যবহারের টেকনিক শিখে গেছে। মানুষের পর সবচাইতে বুদ্ধিমান নিয়াণ্ডার্টালরাও ফ্লিণ্ট পাথর ঘষে আগুন জ্বালানো ও আগুনের বিভিন্ন উপযোগীতা জানতো, শিকার করার সময় বর্শা, মুগুর তৈরী করে তার ব্যবহারপদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলো। তবে মানুষের তুলনায় এদের সকলের টুলিং ক্ষমতা খুবই পৃমিটিভ।
ভাষা - মানুষ ছাড়াও প্রচুর প্রাণী ভাষা ডেভেলপ করেছে। মেঠো ইঁদুর, পাখি এমনকি গাছপালা পর্যন্ত ভাষা ব্যবহার করে। তবে এদের ভাষাদক্ষতা খুবই সীমিত। শিকারী প্রাণীর আগমন ঘটলে বা অন্য কোনো বিপদআপদ ঘটলেই এরা মূলতঃ ভাষা ব্যবহার করে। মানুষের মত প্রেম ভালোবাসা হতাশা আনন্দ শিক্ষা জ্ঞান ইত্যাদি প্রকাশের ক্ষমতা তাদের নেই। ফ্লোরিডায় ট্রেনাররা ডলফিনদের মানুষের ভাষা শেখাতে সক্ষম হয়েছে। সম্ভবতঃ দুই/আড়াইশো কমান্ড ফলো করতে পারে ট্রেনড ডলফিনরা - তবে সেটাও খুবই সীমিত ("এই বলটা ওখানে রেখে সেখান থেকে বয়াটা নিয়ে এসো", "ডিগবাজী খাও" ইত্যাদি)
আমাদের ইণ্টেলিজেন্সের কিছু এক্সক্লুসিভ ফীচারঃ
অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পার্থক্য করা ও ফিউচার প্ল্যানিং করার ক্ষমতা - প্রাণীজগৎে একমাত্র মানুষই ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে পারে। শিম্পান্জীদের প্রয়োজনের অধিক খাদ্য সরবরাহ করে দেখা গেছে পেট পুরে খাওয়া হয়ে গেলেই তারা খাবার নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। পরদিনের জন্য যে খাবারটি সংরক্ষণ করে রাখলে যে ভালো হবে সে চিন্তাটিই তার মাথায় আসে না। কিন্তু আপনার মা বেঁচে যাওয়া খাবার ফৃজে উঠিয়ে রাখেন। আপনার বাবা মাসিক খরচ মিটে গেলে বাকী টাকা ভবিষ্যৎের জন্য সণ্চয় করে রাখেন।
ফ্লুইড ইন্টেলিজেন্স বা হিউরিস্টিকসঃ অতীতে কখনো কোনো একটি সমস্যায় পড়ে সেটা কোনোভাবে সমাধান করেছিলেন। এখন আরেকটি নতুন সমস্যায় পড়েছেন যেটার সাথে অতীতের সমস্যাটির হালকা মিল থাকতেও পারে (আবার কোনো সাদৃশ্য নাও থাকতে পারে)। অতীতের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে নতুন সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা মানুষের আছে।
আত্মসচেতনতাঃ ২/৩ বছর বয়স অব্দি বাচ্চারা আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখলে নিজেকে চিনতে পারে না। তার চেয়ে বেশি বয়সের বাচ্চারা নিজেকে চেনার ক্ষমতা আয়ত্ত করে, তাদের মধ্যে সেলফ এ্যাওয়ারনেস গঠিত হওয়া শুরু করে। অন্য কোনো প্রাণীকে আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব চেনানো যায় নি। বানররা নিজের রিফ্লেক্সন দেখে মনে করে ওটা আরেকটা প্রাণী - প্রতিবিম্বটা যে সে নিজেই তা অন্যান্য প্রাণীরা ২ বছরের মানবশিশুর মতই অনুধাবন করতে অক্ষম।
এ্যাবস্ট্র্যাক্ট চিন্তাঃ মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি মুহুর্তে এ্যাবস্ট্র্যাক্ট থটের অবদান আছে। আমাদের পুরো সভ্যতা, কৃষ্টি সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে এ্যাবস্ট্র্যাক্ট চিন্তাপদ্ধতির কারণে। ভাষা, সংস্কৃতি, জ্ঞানবিজ্ঞান, সভ্যতা, রাষ্ট্র, ধর্ম, অর্থনীতি, বাণিজ্য ইত্যাদি সবকিছু হলো এ্যাবস্ট্র্যাক্ট চিন্তাক্ষমতার বাইপ্রোডাক্ট।
এরকম আরো কিছু এক্সক্লুসিভ ফীচার আছে মানুষের বুদ্ধিমত্তায় (এখন মাথায় আসছে না) যার কারণে মানুষ "এগিয়ে গিয়েছে"।
আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:৩। আপনার যদি দুই হাত না থাকত তাহলে কি সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারতেন?
পারতাম। সেক্ষেত্রে অন্য কোনো অঙ্গ ব্যবহারোপযোগী কোনো সিস্টেম আমরা ডেভেলপ করে ফেলতাম। আমাদের পুরো জীবনযাত্রা, সভ্যতাব্যবস্থা হাতের ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল - কলম, কমপিউটার, ড্রাইভিং ইত্যাদি সবই হাতের ব্যবহারোপযোগী। হাতের বদলে যদি পা বা অন্য কোনো অংগ ডমিন্যান্ট হতো তাহলে আমরা অন্য সিস্টেম ডেভেলপ করতাম।
আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:৪। মনে করুন আপনি একটি কেচো তাহলে আপনি উন্নতি করতেন কীভাবে?
কেঁচো হিসেবে আমার উন্নতি করার দরকার নেই। বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের বিবর্তনই ঠিক করবে কে উন্নতি করবে আর কে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কোনো প্রাণীর বুদ্ধিমত্তা কতদুর ডেভেলপ করবে তা নির্ভর করে বিবর্তনের সিলেক্সন প্রেসারের ওপর, পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া তথা অভিযোজন ক্ষমতার ওপর। survival of the fittest - প্রতিকুল পরিবেশের নতুন নতুন চ্যালেণ্জ যে প্রাণী মোকাবেলা করতে পারবে সেই টিকে থাকবে, এবং তারই উন্নতি হতে থাকবে।
when the going gets tough, the tough get going আরশোলা ৩০০-৩৫০ মিলিয়ন বছর আগে থেকে পৃথিবীতে মহাসমারোহে টিকে আছে। ৩৫ কোটি বছর আগে আরশোলার দেহগঠন যেমন ছিলো, আজকে আপনার কিচেনের তেইল্যাচুরার গঠনও প্রায় একই রকম আছে। অর্থাৎ - ৩০ কোটি বছর আগে তারা পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য এমন স্ট্র্যাটেজী ডেভেলপ করতে সক্ষম হয়েছিলো যার পর আর কোনোকিছু পাল্টানোর দরকার তাদের পড়ে নি। তাই তেলাপোকার বিবর্তন ওই ৩০-৩৫ কোটি বছর আগ থেকে মোটামুটি স্থবির হয়ে আছে - তার পরে ওদের খুব বেশি কোনো ডেভেলপমেন্ট হয় নি।
পক্ষান্তরে আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবনযাত্রা খুবই ভয়ানক ছিলো। ঔইসব প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি মুহূর্ত সংগ্রাম করতে হতো। do or die - করো নয় মরো। এভাবে তাকে প্রতি নিয়ত অভিযোজিত হতে হয়েছে, আগের চেয়ে fitter হতে হয়েছে। পরিবর্তিত পরিবেশে পূর্ববর্তী প্রজন্ম কোনোভাবে survival tactics ডেভেলোপ করে কোনোমতে টিকে ছিলো, পরবর্তী প্রজন্ম ওই ট্যাকটিক্সটাই আরো ডেভেলপ করে নিজেদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার উপযোগী করবে - এই চক্র চলতেই থাকবে।
হোমো পরিবারের বুদ্ধিমত্তা ডেভেলপ করার কারণ হলো - কয়েক মিলিয়ন বছর আগে সমগ্র আফৃকা জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশাল এলাকা জুড়ে খরা সৃষ্টি হওয়া। আমাদের পূর্বপুরুষ প্রজাতী (বর্তমানের লিমার বানরের মত একটি প্রজাতী) গাছেই বসবাস করতো, গাছের ফলমূল খেয়ে জীবন ধারণ করতো। প্রচণ্ড খরার কারণে খাদ্যাভাব এবং গাছের সংখ্যা কমে যাবার কারণে তারা গাছ থেকে মাটিতে নেমে আসতে বাধ্য হয়ে ছিলো। আাবার উত্তপ্ত খরা পরিবেশে মাটিতে চার পায়ে চলাফেরা করা থার্মোডাইনামিকালী বেশ এক্সপেন্সিভ, তাই প্রখর সূর্যতাপ থেকে বাঁচতে তারা দ্বিপদী হতে বাধ্য হয়েছিলো। দ্বিপদী প্রাণীর গায়ের ঘন লোম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে - তাই গায়ের লোম ঝেড়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলো। সমতল ভূমিতে চলাফেরার জন্য লেজের কোনো ভূমিকা নেই, তাই ফালতু বোঝা না বাড়িয়ে ওটাও ছেঁটে ফেলেছিলো। চতুষ্পদীরা গাছে যখন বাস করতো, ডাল থেকে ডালে চলাচলের জন্য তাদের চার হাত পা সমান ভাবে ব্যবহৃত করতে হতো। কিন্তু সমতল ভূমিতে চলাচলের জন্য মুলতঃ পা জোড়া ব্যবহৃত হচ্ছে, সামনের দুই হাত মোটামুটি ফৃ। তাই ও দু'টোকে অন্যান্য কাজের জন্য স্পেশালাইজড করে মডিফাইড করে নিলো। আবার আফৃকা জুড়ে খরা, যেদিকেই যায় খাদ্যের প্রচণ্ড অভাব। একবেলা কোনোমতে আধাপেট জোটে তো পরবর্তী ৩/৪ দিন কোনো খাবারের নামগন্ধ নেই। প্রকৃতি রীতিমত গলাধাক্কা দিয়ে, লাথিয়ে পিটিয়ে ওদের আফৃকা থেকে বের করতে বাধ্য করলো। হাভাতের এক দল ভাগলো ইউরোপের দিকে, আরেক গ্রুপ মিডল ইস্ট হয়ে এশিয়ার দিকে।
এভাবে বিলিয়ন বছরের ব্যবধানে আফৃকান সাভান্নার গেছো বান্দর হয়ে উঠেছে প্রজন্ম ফোরাম পড়া ডিস্কো বান্দর।
আর ওদিকে তেইল্যাচুরারা এখনো তেইল্যাচুরাই রয়ে গেছে। 
আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:৫। মানুষের বুদ্ধি আছে জন্যই কি আত্মরক্ষা করা আদিম যুগ থেকে এখন পর্যন্ত টিকে আছে?
#৪ দ্রষ্টব্য
আমি সাইন্সের ছাত্র লিখেছেন:৬। পাগলের তো বুদ্ধি নেই তাহলে একটি পাগল আদিম যুগে বনের ভিতর কীভাবে টিকে থাকত?
পাগল বলতে আপনি সম্ভবতঃ পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে অক্ষম প্রাণী বুঝিয়েছেন। মানসিকভাবে হোক, বা শারিরীকভাবেই হোক - প্রতিবন্ধী প্রাণীর survival chance খুবই কম। আদিম যুগে প্রতিবন্ধী প্রাণী বেশিদিন টিকে থাকতে পারতো না। এটা পুরো প্রজাতীর জন্য সামগ্রিকভাবে ভালো - প্রতিবন্ধী প্রাণীটির মিউটেটেড, ডিফেক্টিভ জীন তার মৃত্যুর সাথেসাথেই বিলুপ্ত হয়ে যেতো। যাদের জেনেটিক বিল্ড-আপ পরিবেশের সাথে মানানসই, শুধুমাত্র তাদের জীন লাইন-ই কন্টিনিউ করতো।
তবে মানুষ এবং গ্রেট এইপস (গরীলা, শিম্পান্জী, ওরাংউটাং) - এরা দলবদ্ধ, সামাজিক, সহমর্মিতা ও উন্নত বুদ্ধিমত্তার প্রাণী। এদের সোশাল ডাইনামিক্স অন্যান্য প্রাণীপ্রজাতী থেকে কিছুটা ভিন্ন। দলের সদস্য কেউ যদি শারিরীকভাবে দুর্বল হয়, বা রোগেশোকে ভোগে, অন্যরা তাকে সেবা সুশ্রুষা করে। খাবার জোগাড়ে অক্ষম সদস্যকে দলের নারী প্রাণীরা খাদ্য দিয়ে সাহায্য করে।
এইপসদের সবচাইতে বুদ্ধিমান প্রজাতী মানুষের মধ্যে সামাজিক সহমর্মিতা তো আছেই, তার সাথে যুক্ত হয়েছে টেকনোলজী আর সিভিলাইযেশন।
অন্ধ বিবর্তন আমাদের এতোদূর পর্যন্ত তাড়িয়ে এনেছে। এখন আমরাই বিবর্তনের টুঁটি চেপে ধরে তাকে আমাদের ইচ্ছামতো পথে হাঁটতে বাধ্য করছি।
অটিস্টিক শিশুদের জন্য আমরা স্পেশাল স্কুল ও এ্যাসিস্টেড লিভিং পরিবেশের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের জন্য আমরা নতুন জীবনদানকারী হাইটেক কার্ডিয়াক সার্জারী ডেভেলপ করেছি। যে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মের পরপরই মরার কথা, সে আজ ৬০-৭০ বছর অনায়াসে বেঁচে থাকছে। ক্যান্সারের রুগীকে নিশ্চিৎ মৃত্যুর হাত থেকে ছিনিয়ে আনছি। ১০০ বছর আগেও এই ক্ষমতা আমাদের ছিলো না। ১০০ বছর আগে ইউরোপে নবজাত শিশুমৃত্যুর হার ছিলো ১০০০-এ ৩০। এখন হাজারে ৩টি মারা গেলেই সবাই নড়েচড়ে বসে। ওটা তো শুধু ইনফ্যাণ্ট মর্টালিটি - বেশিবয়স্ক বাচ্চা ও এ্যাডাল্ট মৃত্যুর হারেও অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। ১০,০০০ বছর আগে মানুষের গড় আয়ু ছিলো ৩০-৩০। বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশেই এখন সরকারী হিসাবে গড় আয়ু ৬৫+।
আর নিকট ভবিষ্যৎে তো বিবর্তনের রীতিমত দফারফা করতে যাচ্ছি আমরা। জেনেটিক এন্জিনিয়ারিং বলতে গেলে শিশু স্তরে আছে - কিন্তু এর মধ্যেই যে ঝড়ের গতিতে অগ্রগতি হচ্ছে তাতে প্রাকৃতিক বিবর্তন উল্টেপাল্টে যাবে। ইতিমধ্যেই মনসান্তোর মত প্রতিষ্ঠান জিএম খাদ্য প্রসার করার চেষ্টা করছে। বৃটেনে এক বাবা - দুই মা অর্থাৎ থৃ প্যারেণ্টস বেবীর অনুমোদন দিয়েছে। কিছুদিন পরে মা'রও দরকার হবে না, ইতিমধ্যেই হাঙর সহ কয়েক প্রজাতীর প্রাণীর জন্য আর্টিফিশিয়াল, মেকানিকাল গর্ভ তৈরী করা হয়েছে - ওই টেকনলোজী মানুষের জন্য মডিফাই করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। বর্তমানে জীন স্প্লাইসিঙ টেকনলোজী শুধু অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ল্যাবে আছে। অনুমান করা হচ্ছে ২৫-৫০ বছরের মধ্যে ওই টেকনলজী সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসবে। হয়তো ভবিষ্যৎে আপনার মাধ্যমিক স্তরের সন্তান তার গ্যারেজের বায়োল্যাব-এ তেইল্যাচুরার জীন রিকোডিং করে তাকে ফ্লুরোসেণ্ট বানিয়ে দেবে যেনো অন্ধকারে জ্বলজ্বল করে, টিকটিকির পাখনা গজিয়ে দেবে। ডেডু ভাইয়ের পুত্র মরাতালা জুনিয়র হয়তো তার বাবার ৬৫তম জন্মদিবস উপলক্ষে ক্যাটরিনা-র ক্লোন করে দেবে 
মোদ্দা কথা - আপনার প্রায় সব উত্তর দেড়শো বছর আগে চার্লস রবার্ট ডারউইন ও আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস দিয়ে গেছেন। 
Calm... like a bomb.