ছড়াবাজঃ
ছোটোখাটো লোকটার বিয়ে হল ঠিক,
মেয়েখানা যেন রোদ, করে ঝিকমিক।
সব ভালো পাত্রীর শুধু শতকরা,
এক ভাগ অসুবিধা, লেখে শুধু ছড়া।
কবিতায় অরুচি, বমি বমি ভাব,
উড়ু উড়ু, ভাসা ভাসা, ঝগড়ু স্বভাব।
শুনে এটা লোকটার চোখ ছানাবড়া,
জানালো সে বিয়েতে আপত্তি কড়া!
এই শুনে ঘটকটা চাপড়ায় টাক,
আইবুড়ো ছেলেখানা বলে কী এ! বাপ!
কবিতায় আছে কী হে? হলে মানকচু,
কেটেকুটে রান্নায় খাওয়া যেত কিছু ...!
একদিন সন্ধ্যায় শপিংয়ের মলে,
চোখাচোখি সেই মেয়ে, হয়ে গেল ভুলে!
মেয়েটার টানা চোখে, গভীরতা মেপে,
টোল পড়া গাল আর স্নিগ্ধতা দেখে;
ভুলে গেল বলেছিলো কী যে সেই দিন,
পিছে পিছে হাঁটা দিল হয়ে উদাসীন!
মোহাম্মদ কামরুল ইসলামঃ
কত কত অঘটন ঘটে এই ভবে-
কাচুমাচু উদাসীন নখ খুঁটে ভাবে।
ঐ টানা আঁখি ভরা শিশিরের জল-
পদ্মের বুক জুড়ে কাঁপে টলমল।
বুক তার কেন কাঁপে ধুকপুক পুক
হৃদপটে ভেসে ওঠে কার ঐ চোখ?
ঘেমে নেয়ে একাকার বাছা উদাসীন
অনুতাপে মরে যায়,‘আমি গাধা, হীন।’
খাবি খায়, চড় খায়, দোলে ওর মাথা-
ঝট করে খুলে যায় মেয়েটার ছাতা।
অবশেষে চোখ তোলে বনলতা সেন,
হেসে বলে, ‘বৃষ্টিতে ভিজছেন ক্যান?’
চমকায় উদাসীন, ‘বলে কী এ মেয়ে!’
অপলক দৃষ্টিতে দ্যাখে চেয়ে চেয়ে।
টোল ফেলে বাঁ কপোলে হাসে বনলতা-
দু’চোখেতে আহা কী যে প্রেমময় কথা!
ডানা মেলে বনলতা ডাকে ইশারায়-
উদাসীন পিল পিল পাঁয়ে ছুটে যায়।
বুক ভরে আছে সুখে, উথলায় প্রাণ;
মন জুড়ে ‘ভালোবাসা কারে কয়’ গান।
প্রেম প্রেম ভাব নিয়ে আগুয়ান ছেলে-
দুই চোখে ‘চল্ যাই’ দুষ্টুমি খেলে।
আর দু’পা এগুলেই সেই বনলতা-
বলতেই হবে আজ হৃদয়ের কথা।
শেষ পাঁ’টা বাড়াতেই নড়বড়ে ভিত,
কাদা পথে পিছলিয়ে উদাসীন চিত।
‘দ্বিধা হও ধরণী’ ভাবে নটি বয়,
জেনুইন প্রেমিকের এই বুঝি হয়!
এক্ষুণি বনলতা হাহ্ হাহ্ করে,
হাসবেই নিশ্চিত বহুক্ষণ ধরে।
‘এই মা’ বলে বনলতা ছুটে এসে-
‘হাত দিন’ বলে ওর পাশটায় বসে।
হাত রেখে ওর হাতে দ্যায় জোরে টান-
কোন মতে বেঁচে যায় পোয়েটের মান।
চোখে চোখে রেখে যেন দু’জনা বিলীন।
‘কফি খাবে, বনলতা?’ বলে উদাসীন।
ছড়াবাজঃ
আহা উহু, কাহিনীতে কত দিলে রঙ,
এইবার হবে নাকি আইটেম সং?
পার্কেতে বুট-ভাজা দরকার নাই,
বিয়েটাই পাকা ছিলো, মনে আছে ভাই?
সরাসরি তাই যাক ছাদনাতলায়,
লাভ কী এর বেশি কাহিনী প্যাঁচায়!
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসটা শুরু,
লাড্ডু খেয়ে দেখি বলে কী সে; গুরু!
হবে শুরু দুজনের চাইল-ডাইল গল্প,
মারামারি হতে পারে; শুনবেন অল্প?
উদাসীন ভাবখানা যাও কেটেছিলো,
আফটার শকে বুঝি হতবাক হলো! kidding
মোহাম্মদ কামরুল ইসলামঃ
বনলতা হেসে বলে, ‘খাব নিশ্চয়।’
খাবি খায় উদাসীন, মনে মনে ভয়।
ট্যাঁক ফাঁকা কুড়ি টাকা মোটা মানিব্যাগে!
ইনভাইট করে কবি কোন মুখে ভাগে?
দশ গজ পেরুতেই এক কফি শপ।
ভেসে আসে হাসি গান আর কলরব।
মুখখানি করে রেখে খুব সুখি সুখি-
উদাসীন বসে গিয়ে বনলতা মুখি।
‘ঘামছেন নাকি?’, বলে বনলতা হাসে।
‘কেডা কয়?’, বলে উদা খুকখুক কাশে।
সুবাসিত কফি এল সাথে হটডগ।
কাঁপা হাতে উদাসীন টেনে নেয় মগ।
‘মানিব্যাগে টাকা নেই?’ কয় বনলতা।
‘ধুত্তোরি! কী যে কন! এটা কোন কথা?’
ধপ করে লোড শেড শুরু হলে পর-
ঘাম দিয়ে পোয়েটের ছেড়ে গেল জ্বর।
একপাশে বনলতা আর পাশে কবি।
‘মুখোমুখি বসিবার’ নন্দিত ছবি।

(শেষ)