টপিকঃ টিকিটাকা নাকি প্রেসিং ফুটবল?! (ব্রাজিল ৩- স্পেন ০)
টিকিটাকা খেলার ধরনটা ফুটবলে খুব জনপ্রিয়। বিশেষ করে বার্সা এবং স্পেনের সাপোর্টারদের কাছে টিকিটাকাই যেন টোটাল ফুটবল। পাসিং গেম যারা পছন্দ করেন তাদের কাছেও এ খেলার ধরন বেশ জনপ্রিয়। এভাবে খেলেই বার্সা এবং স্পেন এ সময়ের সেরা দল হয়েছে। তবে এখন মনে হচ্ছে এ খেলার যুগও এখন শেষ হয়ে আসছে এবং সে জায়গা খুব সম্ভব এখন প্রেসিং ফুটবলের হাতে, যার সাহায্যে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ইউফা চ্যাম্পিয়নস্ লিগের ফাইনালে উঠেছে এবং বায়ার্ন মিউনিখ ইউফা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বার্সাকে দুই লেগে ৭ গোল দেওয়া বায়ার্ন এখন সময়ের সেরা ক্লাব এ ট্যাকটিকস্ই অনুসরন করে।
আর আজকে যারা ব্রাজিলের বনাম স্পেনের খেলা দেখেছেন তাদের কাছে ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট! ৩ গোল করে ব্রাজিল কিভাবে স্পেনকে উড়িয়ে দিলো! প্রেসিং ফুটবল খুব পুরানো ট্যাকটিকস হলেও একসময় এ ধরনের ফুটবল খুব একটা দেখা যেত না। তবে বর্তমানে পাসিং ফুটবলকে আটকানোর জন্য এর চেয়ে যে ভালো কোন ট্যাকটিকস নেই!
প্রেসিং ফুটবলের একটি বৈশিষ্ট্য হলো যে এ ট্যাকটিকসএ একজন স্ট্রাইকারো যেন ডিফেন্ডারের মতো আচরন করে। যেভাবেই হোক বল পা থেকে ছিনিয়ে আনতেই হবে! এবং বল পায়ে আসা মাত্রই পাল্টা আক্রমন! তখন যেন একজন ডিফেন্ডারো স্ট্রাইকার হয়ে যায়। এ খেলা খেলে বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ এল ক্লাসিকোতে ভালো করছে।
এছাড়া পাসিং ফুটবলের একটি সমস্যা হলো এ খেলা খেলতে জাভি ইনিয়েস্তার মতো প্লেয়ার প্রয়োজন হয় এবং মিডফিল্ড শক্তিশালী হতে হয়। খুব কম টিম এভাবে খেলতে পারে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে এখেলাটা খেলা আরো কঠিন প্রেসিং ফুটবলের কারনে। ম্যানচিনির ম্যানসিটি এখন পাসিং ফুটবল খেলে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি, অপরদিকে ম্যান ইউ রিয়ালের সাথে কি প্রতিযোগিতাই না করলো প্রেসিং ফুটবল অনুসরন করে।
আমার টপিক দেখে মনে হতে পারে যে প্রেসিং ফুটবল কতই না সহজে খেলা যায়! তবে এ ধারনা ভুল! এ ট্যাকটিকস অনুসরন করতে গেলে প্রচুর শারিরিক এবং মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয় এবং খুব সতর্ক থাকতে হয় যেন ভুল যায়গায় ফাউল না হয়ে যায়!
তাই অনেকে দাবি ( এর মধ্যে বিখ্যাত ব্যাক্তিরাও রয়েছেন) করে যে প্রেসিং ফুটবলই টোটাল ফুটবল। সাম্প্রতিক খেলাগুলো দেখে তাদের দাবিকে অযৌক্তিক মনে করা এখন কঠিন হয়ে গেছে। এখন যে যেটা দাবি করুক না কেন উভয় ট্যাকটিকস এরই গুরুত্ব রয়েছে ফুটবলে। উভয় ট্যাকটিকসের মিশ্রনের মাধ্যমেই এখন শ্রেষ্ঠ দল হওয়া সম্ভব এবং এর প্রমান হলো গার্দিওলার সেই ড্রিমটিম, যে টিম এই দুই ট্যাকটিকস মিশ্রিত করে এমন এক ফুটবল বের করে এনেছিল যে যার মাধ্যমে এক মৌসুমে ছয়টি ট্রফি জেতা যেন খুব সহজ কাজ মনে হয়েছিল!