সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন gmakas (২৬-০৬-২০১৩ ২৩:৪২)

টপিকঃ চালে ক্যাডমিয়াম

চালে  ক্যাডমিয়াম



বাংলাদেশে ও বিশ্বের কয়েকটি দেশের উৎপদিত চালে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ধাতব পদার্থ ক্যাডমিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে৷ একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় ১২টি দেশের চাল নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে৷

"কম্বোডিয়া, ঘানা, ভারত, নেপাল, ইটালি, জাপান, স্পেন, থাইল্যান্ড. যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের চালেও ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে৷"

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংগঠন অ্যামেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম রফিকুল ইসলাম৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, গবেষণা দলে ১২টি দেশের বিজ্ঞানীরা অংশ নেন৷ বাংলাদেশের চাল নিয়ে গবেষণার দায়িত্ব ছিল তাঁর৷ এই গবেষণা প্রতিবেদন গত মাসে প্রকাশ করা হয়েছে৷

তিনি জানান, গবেষণায় বাংলাদেশের চালে অধিক পরিমাণ ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে৷ এর পরিমাণ ০.০১ পিপিএম থেকে ০.৩ পিপিএম পর্যন্ত৷ বাংলাদেশের পরই শ্রীলঙ্কার চালে ক্যাডমিয়াম বেশি৷ এছাড়া কম্বোডিয়া, ঘানা, ভারত, নেপাল, ইটালি, জাপান, স্পেন, থাইল্যান্ড. যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের চালেও ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে৷

ড. রফিকুল ইসলাম আরও জানান, জমিতে নিম্নমানের টিএসপি সার প্রয়োগই ক্যাডমিয়ামের প্রধান কারণ৷ এছাড়া বাংলাদেশের টেক্সটাইল, ট্যানারিসহ নানা শিল্প কারখানার বর্জ্য নদী বা জলাশয়ে গিয়ে পানি দূষিত করছে৷

আর সেই পানি ব্যবহার করে চাষাবাদ করায় চালে ক্যাডমিয়াম পাওয়া যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, শুধু চাল নয় – শাকসবজিতেও নদীর পানির ক্যাডমিয়াম পাওয়া যাচ্ছে৷ ভেজাল টিএসপি সার এবং শিল্প, বিশেষ করে ট্যানারির বর্জ্যে উচ্চমাত্রার ক্যাডমিয়াম রয়েছে৷ আর বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ টিএসপি সার ভেজাল৷

তিনি জানান, ক্যাডমিয়াম হল ক্ষতিকারক হেভি মেটাল৷ এটি শরীরে দীর্ঘদিন জমা হতে থাকলে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়৷ এর প্রতিক্রিয়ায় মানব দেহে ক্যানসার এবং কিডনি আক্রান্ত হতে পারে৷

সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইট লিটু ডয়চে ভেলেকে জানান, ক্যাডমিয়াম শরীরের ফুসফুস, কিডনি এবং হাড় ক্ষতিগ্রস্ত করে৷ এর প্রভাবে শ্বাসকষ্ট, কিডনি অকার্যকর এবং হাড় ক্ষয় হয়ে যায়৷ এছাড়া ক্যানসার এবং পুরষত্বহীনতার কারণ হতে পারে ক্যাডমিয়াম৷

ড. এম রফিকুল ইসলাম জানান, এই ক্যাডমিয়াম শুধু চালে নয়, ভূগর্ভস্থ পানিতেও ছড়িয়ে পড়ছে৷ এতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে৷ আর ক্যাডমিয়ামের কারণে বুড়িগঙ্গাসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু নদী এবং জলাশয় মাছ, জলজ প্রাণী এবং জলজ উদ্ভিদ শূন্য হয়ে পড়ছে৷

তিনি মনে করেন, চালকে ক্যাডমিয়াম মুক্ত রাখতে হলে জমিতে ভেজাল টিএসপি সার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৷ শিল্প কারখানায় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে, যাতে দুষিত বর্জ্য নদী এবং জলাশয়ে পরতে না পারে৷

গোলাম মাওলা , ভাবুক, সাপাহার, নওগাঁ

Re: চালে ক্যাডমিয়াম

লেখার সূত্র কৈ??
আর এত লেখা আপনার ??   তাড়াতাড়ি এত লেখা কিভাবে লেখছেন??

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন gmakas (২৭-০৬-২০১৩ ০০:৪৪)

Re: চালে ক্যাডমিয়াম

ক্যাডমিয়াম এর সংকেত Cd এটি একটি অবস্থান্তর মৌল। পর্যায় সারনিতে এর অবস্তান ৪৮, অর্থাৎ পারমাণবিক সংখ্যা ৪৮ এবং এর ভর ১১২.৪।  সুত্র দিতে ভুলে গেছি ।পত্রিকা পড়তে পড়তে মনে হল এটি সকলকে জানানো প্রয়োজন তাই কপি মারলাম । এর পর রসায়ন বই নিয়ে বসলাম। ক্যাডমিয়াম এর ব্যপারে জানতে।টি এস পি-ট্রিপুল সুপার ফসফেট  /   ট্রাই সোডিয়াম ফসফেট --Na3PO4 ফসফেট এর  সংকেত পেলাম  সেই ৯-১০ পড়েছি।  টি এস পি- এর সংকেত জানলাম মাগার ভাল ভাবে বুঝতে পারলাম না  কি ভাবে কেমন করে এটি ছড়াচ্ছে । কেও জানলেএকটু জানান তো  big_smile

গোলাম মাওলা , ভাবুক, সাপাহার, নওগাঁ

Re: চালে ক্যাডমিয়াম

পত্রিকার রিপোর্টগুলো খুবই কনফিউজিং।

ক্যাডমিয়াম টিএসপি সারে ভেজাল হিসেবে দিয়েছে -- ভাল কথা। সেই ভেজাল বস্তুটা কী? সেটাতে ক্যাডমিয়াম আসলো কোন পথে? ক্যাডমিয়াম সাধারনত কোন কোন পদার্থে পাওয়া যায় --- হ্যাঁ উইকি ঘাটলে এসব হয়তো জানা যাবে। রিপোর্টে অন্তত এই বিষয়গুলো থাকা দরকার ছিলো। জানিনা সাংবাদিকদের আর্টিকেল লেখার এসব মৌলিক বিষয় শেখানো হয় কি না।

এরপরে আসে স্পেসিয়েশনের ব্যাপার। ক্যাডমিয়াম কোন ফর্মে আছে। কারণ বায়োরিমেডিয়েশন এবং ফাইটোরিমেডিয়েশন নামে কিছু টার্ম আছে যা দূষণ নিয়ন্ত্রণের টেকনিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। একই যৌগ বিভিন্ন রকম যোজ্যতায় বিভিন্ন রূপে যৌগে থাকতে পারে। এই বিভিন্ন ভাবে থাকার উপরে এর বিষাক্ততা নির্ভর করে। আমরা বিষাক্ততা কমানোর জন্য একটা বিষাক্ত ধাতুকে এরকম কঠিন (জটিল) যৌগে পরিণত করে রাখি -- অর্থাৎ বিবাহ দিয়ে সংসার দিয়ে দেই -- ওদের ঝামেলা মিটাইতে মিটাইতে আর অন্যের ক্ষতি করার উপায় থাকে না ;-) । এভাবে ডিটক্সিফিকেশনকে লিগ্যান্ড ফর্মেশন করা বলা হয়ে থাকে কখনো।

উদাহরণ: যেমন ধরুন চালে আর্সেনিক আছে। কিন্তু সেখানে কী রূপে আছে সেটা যেমন জানা জরুরী, তেমনি খাওয়ার পরে শরীরের ভেতরে সেটা পরিবর্তিত হয়ে কী রূপ নেয় সেটাও জরুরী। আর্সেনিক গ্যাস আকারে যতটা বিষাক্ত পানিতে আর্সেনিক(III) যৌগ হিসেবে তার চেয়ে কম বিষাক্ত। আবার আর্সেনিক(V) আর্সেনিক (III) এর চেয়ে ১০ গুন কম বিষাক্ত। লিথাল ডোজ দিয়ে এটা পরীক্ষা করা হয়: অর্থাৎ ইঁদুর বা অন্য প্রাণীর মারতে আর্সেনিক(III) যতটুকু পরিমান খাওয়ানো লাগে আর্সেনিক(V) তার চেয়ে ১০ গুন বেশি পরিমান খাওয়ানো লাগে। একই ধারাবাহিকতায় মনোমিথাইল আর্সেনিক, ডাইমিথাইল আর্সেনিক মৃদুতর বিষাক্ত। আর টেট্রামিথাইল আর্সেনিক নির্বিষ -- চিনি খাওয়ার মতই।

সাধারণত জৈব যৌগের মধ্যে ভারী ধাতুগুলো অনেক জটিল অবস্থায় কম বিষাক্ত হয়ে যায়। তাই ট্রেস করাটাই শেষ কথা নয় -- এর স্পেসিয়েশন (অর্থাৎ কোন রূপে আছে) করাটাও জরুরী। পাশাপাশি চালের কোন অংশে পাওয়া গেছে সেটাও জানার আছে। আর্সেনিক চালের স্কিনে থাকে বেশি -- আর আমরা স্লিমিং করা নকল চাল খাই -- ফলাফল আরো নিরাপদ ... ... ইত্যাদি।

আমি আর্সেনিক নিয়ে বেশ কিছুদিন লেখাপড়া করেছিলাম। তাই উদাহরণগুলো সেই সংক্রান্ত। কিন্তু একই তত্ব অন্য ভারী ধাতুগুলোর জন্যও প্রযোজ্য।

পরিবেশ প্রকৌশলী'এর ওয়েবসাইট

লেখাটি CC by-nc-sa 3.0 এর অধীনে প্রকাশিত

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন gmakas (২৭-০৬-২০১৩ ১২:৪৪)

Re: চালে ক্যাডমিয়াম

পরিবেশ প্রকৌশলী দাদা ধন্যবাদ। আসলে আমিও ভাল বুজতে পারিনি । বে আপনার লিখা হতে কিছু ক্লিয়ার ।  big_smile

গোলাম মাওলা , ভাবুক, সাপাহার, নওগাঁ

Re: চালে ক্যাডমিয়াম

শিপলু'এর ওয়েবসাইট

লেখাটি GPL v3 এর অধীনে প্রকাশিত