টপিকঃ ইলিয়াস ভাইয়ের ইলিশ (প্রজন্মের মেগা উপন্যাস(সমাপ্ত সহ))
নোটঃ
১। ইলিশ কিনে ইলিয়াস ভাই বাড়ি ফেরার পথে... এই টপিকে বিক্ষিপ্ত ভাবে এই গল্প/উপন্যাস টি আছে তাই সব গুলো এক সাথে আনলাম ও কিছু কিছু স্থানে প্রয়োজনিয় সম্পাদনা করলাম। যাতে পড়তে সুবিধা হয়।২। উপন্যাসের নাম এখন কার মতো " ইলিয়াস ভাইয়ের ইলিশ " দিলাম। কিন্তু ভালো কোন নাম দিলে তা পরিবর্তন করা হবে।
৩। উপন্যাসে অনেক বানান ভুল থাকতে পারে। তাই উদাসীন ভাই যদি হাতে টাইম পায় তবে বানান ঠিক করে দেবেন।
৪। আর যাদের হাতে সময় কম বা আগের লেখা গুলো পড়েছেন তারা আজকে লেখা আমার পার্ট টি পড়তে পারেন ৩য় পোস্ট আছে ।
৫। এই উপন্যাস লেখা শুরু করার আগে "শান্ত বালক" অনেক সদস্যদের কাছে তাদের নাম ব্যবহার করার অনুমতি
নিয়েছেন তাই নতুন করে আর অনুমতি নিলাম না । আশা করি সবাই বিষয় টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
এই উপন্যাস টি লিখেছেন লিখেছেন ১২ জন ফোরামিক। তারা হলেনঃ শান্ত বালক, ফারহান খান , জেলাল, রাসেল আহমেদ, রাজিব আহসান, কাব্য, সাইদুল ইসলাম, মুন, দ্যা ডেডলক, ইলিয়াস, তাহমিদ আফসার, বাংলারমাটি।
উপন্যাস সম্পাদনা করছেনঃ দ্যা ডেডলক
===============================
ইলিয়াস ভাইয়ের ইলিশ
===============================
ইলিয়াস ভাই বড় আকারের একটা ইলিশ মাছ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন।
বাজার থেকে বিশাল ইলিশটা কিনে তিনি সেটা হাতে ঝুলিয়ে হাঁটা পথে রওনা দিলেন বাড়ির দিকে।
পথের মধ্যে একটু দূর থেকে দেখলেন সাইদুল (অন-লাইন জগৎ এর বিভিন্ন মাইল ফলক নিয়ে চিন্তিত এবং ভবিষতের কম্পিউটার বিজ্ঞানি) ম্যাগনেফাইং গ্লাস দিয়ে কি যেন খুঁজছেন।
ইলিয়াস ভাই : কি সাইদুল, কি খোঁজো?
সাইদুল : মিয়া ভাই, দেখতাসি কে কয়ডা পোস্ট করলো আর কার রেপু কইডা হইলো।
তা মাছটার দাম নিলো কতো?
ইলিয়াস ভাই : এগারশো টাকা। আচ্ছা আসি কেমন।
আবারও কিছু দূর যেয়েই উনার ডেডলক (যিনি বিভিন্ন ফোরামে রিপোস্ট ধরে থাকেন) এর সাথে দেখা হয়ে গেল।
ডেডলক : ইলিয়াস ভাই, মাছটা নিলো কতো?
ইলিয়াস ভাই : এগারশো টাকা।
ডেডলক : এরকম একটা মাছ কোথায় যেন দেখেছি..... কোথায় যেন দেখেছি। রিপোস্ট বলে মনে হচ্ছে।
ইলিয়াস ভাই : ঐ মিয়া মাছের আবার রিপোস্ট কি?
ডেডলক : ওহ মনে পড়ছে, কে যেন ঠিক এই রকম একটা মাছের ছবি পোস্ট করেছিল।
মুখটা কিঞ্চিত বাঁকা করে ইলিয়াস ভাই সামনের দিকে হাঁটা ধরলেন। কিছু দূর যেতেই দেখেন কে যেন পথের পাশে সংবাদপত্রে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কি যেন পড়ছেন। আরও কাছে যেতেই বুঝতে অসুবিধা হলো না যে উনি হচ্ছেন আউল (ইনি রাজনীতি বিভাগের একটিভ সদস্য ) ভাই।
ইলিয়াস ভাই : কি আউল সাহেব, কি করেন?
আউল : ভাই, পেপার ঘাইট্টা সরকারের দোষগুলান নোট করতাছি।
ইলিয়াস ভাই : ভাল, ভাল। তাহলে আসি হ্যা।
আউল : আরে বড় ভাই, হাতে বিশাল একখান ইলিশ দেখতাছি। ঐডার পেটে তো ডিম ভর্তি। সরকার কি যে করে! এখন ডিম ছাড়ার সময় ইলিশ ধরবার দিছে। এই সরকাররে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। পানি সম্পদ মন্ত্রীর আগে পদত্যাগ চাই। আজই আন্দোলন শুরু করুম। মিয়া ভাই, আপনি আছেন নাকি আমার লগে?
ইলিয়াস ভাই : ইয়ে মানে আমি আপাতত আসি, কেমন।
আউল : আরে বড় ভাই মাছের দামটা তো বলে যান।
ইলিয়াস ভাই : এগারোশো।
মুখটা কাচুমাচু করে ইলিয়াস ভাই হাঁটা ধরলেন। দূর থেকে কে যেন হেঁটেঁ আসছেন। কাছে যেতেই দেখেন উনি হচ্ছেন উপল (হবু ডাক্তার) ভাই।
উপল : আরে ভাইজান, মাছটা পড়লো কতো?
ইলিয়াস সাহেবের মাথার ঘাম মুছতে মুছতে বললেন, একটা কাগজ কলম দিন। মাছের দামটা লিখে গলায় ঝুলিয়ে রাখি। সারা রাস্তায় এই দাম বলতে বলতে আমি কাহিল।
উপল : হে হে, কোন চিন্তা করবেন না। এক্ষুণি ঔষধ লিখে দিচ্ছি, খেলে ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। আচ্ছা বড় ভাই, মাছটা কেমন পঁচা পঁচা দেখাচ্ছে। দেন দেখি একটু পরীক্ষা করি।
ইলিয়াস ভাই : উপল, তুমি আমার মাছের ক্ষেত্রেও ডাক্তারি ফলাবা নাকি? রাগে উনি আবারও হাঁটা শুরু করলেন।
উপল : আরে ভাই, মাছের দামটা তো কয়ে যান।
কোন মতে সেখান থেকে পালালেন উনি।
পথিমধে অয়ন খানের (লিনাক্স মিন্ট বাংলাদেশ এর সেচ্ছাসেবক) সাথে দেখা
অয়ন খান: এই অসময়ে মাছ পেলেন কোথায়
ইলিয়াস: এখনই তো মাছের সময়
অয়ন খান: কিন্তু এই ভার্সনের মাছ তো এখন রিলিজ পাওয়ার কথা না। এটা তো আরও ছয় মাস পরে রিলিজ পাবে
ইলিয়াস: সবাই দাম জিজ্ঞেস করল তুমি করবা না?
অয়ন খান: দুর, ওপেনসোর্সের আবার দাম হয় নাকি?
দুর থেকে মেহেদী৮৩ (কম্পিউটার গিক) সেটা শুনে ফেলে বললেন- এটা মনে হয় বেটা রিলিজ, আই মিন সিনিয়র টাইপের জাটকা ভার্সণ। এটার সাথে কমপ্যাটিবল টুলস (তরি-তরকারী) বাজারে রিলিজ হয়েছে কিনা সারিম খানকে (জিনিয়াস প্রোগ্রামার) জিজ্ঞাসা করে দেখতে হবে।
সারিম এর সাথে দেখা এরপরেই
সারিমঃ ভাইজান, হাতে কি?
ইলিয়াসঃ ইলিশ।
সারিমঃ অসম্ভব!
ইলিয়াসঃ মানে! ইলিশের দাম বাড়ছে বলে কি আমি ইলিশ কিনতেই পারব না?
সারিমঃ আরে ভাই, ম্যাক ওএস এক্স ইলিশ - এর নামতো প্রথম শুনলাম
ইলিয়াস সাহেব পাগল হবার আগেই সেখান থেকে দ্রুত পলায়ন করলেন।
কিন্তু ইলিয়াস ভাইয়ের কপালে নাই শান্তি পালিয়ে যাবেন কই , পথের বাকেই পড়ে গেলেন Invarbrass ওরফে ব্রাশু (যিনি গুরুদের গুরু ও সবজান্তা একাধারে ডাক্তার ও প্রোগ্রামার) ভাইয়ের সামনে
ব্রাশু ভাই - কোথায় পালাচ্ছিলেন , হাতে দেখি আবার ইলিস মাছ !
এরপর ব্রাশু ভাই মাছ খানিক নেড়ে চেড়ে বলেন , হম , পদ্মার ইলিশ, বয়স ১১মাস ২০ দিন ৩৩ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড । ইলিশটা জালের কোনার দিকে ধরা পড়েছিল । পানির ৪০ ফুট নিচে। জালটা ছিল কারেন্ট জাল। যেটার গলনাংক**** , জালটা বানিয়েছিল ইন্ডিয়ায় অমুক ফেক্ট্রিতে । ওদের মুল কাচামাল আসে .................. সীমাহীন তথ্যের ব্রাস ফায়ার ......
কিছুক্ষন পর তাহমিদ আফসার (মাত্র JSC পাশ করা পাবলিক ও ভবিষতের রক স্টার) আর আহমাদ মুজতবা (কিছু দিন আগে এমিরিকাতে গিয়েছেন ) ওই পথ দিয়েই বাড়ি ফিরছিল । ওদের হটাত আগমনে ব্রাশু ভাই থামলেন কিছুক্ষণ ।
তাহমিদ: ইলিয়াস ভাইয়ের ইলিশ টা দেখে লাফিয়ে উঠল - ইলিশ মেরি ছাম্মাক ছাল্লো ...
মুজতবা বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাহমিদ কে কইল , ড্যাম ম্যান । ইলিশ কখনও ছাম্মাক ছাল্লো হয় না । নো ইলিশ ! ইলিশ সাক্স ! এম্রিকার স্যালমান আরও বড় হয়
সারা রাস্তায় মাছের বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলতে বলতে পুরা আউলা হয়ে গেছেন তিনি। মেজাজ একেবারে খিটখিটে হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। বেশী রাগ হচ্ছে ঐ মাছ বিক্রেতার উপর। ঐ ব্যাটাকে বললাম যে মাছটা কেটে ব্যাগে ভরে দিতে। ব্যাটা বলে, ভাইজান মাছটা হাতে করে নিয়ে যান, এলাকায় আপনার দাম বাড়বে। কথাটা তখন বেশ মনে ধরেছিল। কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে, দড়িতে মাছ ঝুলিয়ে আনাটাই ভুল হয়েছে। এতো বড় মাছটা অবশ্য ছোট্ট ব্যাগে আটছিলও না।
অবশেষে ইলিয়াস সাহেব রাস্তার পাশের এক হোটেলে বসে মাছটি কেটে ছোট্ট ব্যাগটিতে ভরে আবারও হাঁটা ধরলেন।
কিছু দূর যেতেই রাস্তার পাশে মাঠ থেকে সূরেলা কন্ঠে কে যেন ডেকে উঠলেন তাকে। ভাইয়া, ভাইয়া কোথায় যান?
ইলিয়াস ভাই মুখ ফিরিয়েই চমকে উঠলেন। আরে এ যে শান্ত বালক (কন্যা সন্তানের জনক বালক সাহেব এমন সব বিচিত্র বিষয় নিয়ে লেখা লিখে থাকন যা অন্যরা কল্পনায় আনতে পারবে না)
ইলিয়াস: তা মাঠের মধ্যে কি করো?
শান্ত বালক : ভাইয়া, আলু ক্ষেতের তথ্য সংগ্রহ করছিলাম, সেই সাথে কানা বকের ছবি তুললাম। আরেকটা আজব তথ্যও পেয়েছি ইতিমধ্যে। বিচিত্র পৃথিবীর কি সুন্দরতম জায়গায় না এটা!
ইলিয়াস ভাই : থাক থাক। একবারে টপিকেই দেকমুনে। আমার মাথা ঘুরছে। আমি তাইলে যাই।
শান্ত বালক : ভাইয়া, আপনার হাতে কি?
ইলিয়াস ভাই : দেখতেই তো পারছো এটা বাজারের ব্যাগ।
শান্ত বালক : ওহ আপনি বাজার থেকে ফিরলেন নাকি? তা ব্যাগের মধ্যে কি?
ইলিয়াস ভাই : ব্যাগের মধ্যে বিশাল একটা ইলিশ মাছ কাটা অবস্হায় আছে। এটার দাম নিয়েছিল এগারশো টাকা।
শান্ত বালক : মাছটার দাম চেয়েছিল কতো?
ইলিয়াস ভাই : মনে নাই।
শান্ত বালক : এটা পদ্মার, বরিশালের নাকি চট্টগ্রামের ইলিশ?
ইলিয়াস ভাই : তা আমি জানবো কিভাবে?
শান্ত বালক : ডিম আছে নাকি?
ইলিয়াস ভাই : হ্যা।
শান্ত বালক : ইলিশটার চোখের রং-গায়ের রং কেমন একটু বলেন তো ভাইয়া?
ইলিয়াস ভাই : এসব জেনে তুমি কি করবে? টপিক লিখবা নাকি।
শান্ত বালক : ঠিকই ধরেছেন ভাইয়া। আচ্ছা ভাইয়া, ইলিশটাতো কাটা হয়েছে। তা কয়টা হৃদপিন্ড, কয়টা ফুবরা-নাড়িভূড়ি কেমন ছিল একটু বলুন তো?
ইলিয়াস ভাই মনে মনে বললেন, এবার তো দেখি বড় পাগলের পাল্লায় পড়লাম।
শান্ত বালক : আচ্ছা আগে মাছটা ব্যাগ থেকে বের করেন তো। সবার আগে দরকার ছবি। ফোকাস বিভাগে পাঁচমিশালি করে মাছের ছবিটাও ঢুকায়ে দিবোনে।
কোন মতে দৌড় দিয়ে তিনি সেখান থেকে পালালেন। কিছু দূর যেতেই ইলিয়াস ভাই ঠাস করে এবার রাস্তায় পড়ে গেলেন......... জ্ঞান ফিরলো সন্ধ্যার পরে।
অন্য গ্রামের লোকজন : যাক বেচারার জ্ঞান ফিরেছে। খুব ভাল হলো।
তা ভাই, আপনার নাম কি?
উনি আশেপাশে তাকিয়ে বললেন “ইলিশ”
সবাই অবাক হয়ে মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলেন। আবার সবাই তার নাম জানতে চাইলো।
উনি আবারও বললেন, “ইলিশ”।
এবার নেতা টাইপের একজন গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করলো, আপনার নামটা আগে বলুন তো ঠিক করে।
উনি আবারও বলে উঠলেন ইলিশ... ইলিশ... ইলিশ। ….……..আমার ইলিশ মাছটা কই সেইটা আগে কন?
এর ঘন্টা খানিক পরে
ইলিয়াস সাহেব রাস্তায় হাঁটা শুরু করলেন এবং পথে পেয়ে গেলেন সালেহ আহমদকে (ইনি হোস্টিং ব্যাবসায়ের সাথে জড়িত)। এবার তাকে নিয়ে খুঁজতে খুঁজতে ইলিশ মাছটা পেলেন ফোরামিক পলাশ মাহমুদের (বিশিষ্ট রম্য লেখক এবং বর্তমানে আইটি বিশেষজ্ঞ) বাসায়। পলাশ মাহমুদ তার আদরের বিড়ালকে ইলিশ মাছের টুকরোগুলো খেতে দিয়ে নিজে কাঁটাগুলো চিবিয়ে খাচ্ছিলেন।
তবে, ইলিশের মাথাটি অনতিদুরেই একটি প্লেটে রাখা ছিল। সালেহকে বড় বড় চোখে উজ্জল দৃষ্টিতে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইলিয়াস ভাই প্রশ্নবোধক দৃষ্টি হানলেন তার দিকে। সালেহসেটা টের পেয়ে আনমনে বিড়বিড় করে বলতে লাগলেন- ভাবছি শীতকালীন হোস্টিং অফারটির সাথে ইলিশ মাছের মাথাটি ফ্রী দিয়ে দেব নাকি।
রাত ১২ ঘটিকা
স্থানঃ ইলিয়াস সাহেবের বাসা
অবশেষে বিশাল বাধা পেরিয়ে তিনি বাড়ি ফিরলেন। হাতে তার মাছের মাথাটা। বিশাল একটা যুদ্ধ জয় করে ফিরেছেন। মনে মনে তিনি বিশাল খুশি। এত ঝামেলার পরেও অন্তত মাছের মাথাটা তো বাচিয়ে আনতে পেরেছেন।
কার কাছে যেন শুনেছিলেন ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্ট খেতে নাকি খুবই স্বাদ। এখন তিনি ভাবছেন অনেক যুদ্ধ করে মাথা জয় করেছি, এটার আজ মুড়িঘণ্ট খাব। কিন্তু হায়, মুড়ি ঘন্ট বানায় কেমনে?
নিশ্চয়ই মচমচা মুড়ি দিয়া ঘন্ট করতে হয়
বাড়িতে আবার মুড়ি নাই। তিনি এবার বেরোলেন মুড়ি কিনতে। রাত ১২ টায় তার জন্য কে আবার মুড়ি ধরে রেখেছেন? মুড়ি আর ইলিয়াস ভাই খুজে পান না। অবশেষে অনেক খুজতে খুজতে পেয়ে গেলেন মুড়ি। ১ কেজি মুড়ি কিনে এবার তিনি বাড়ির পথ ধরলেন। বিপদের উপর যেন মহাসিডর রাস্তায় আবার ইলিয়াস ভাইয়ের পিছু নিল বিশাল সাইজের একটা এলশিয়ান কুকুর। কুকুর পেছনে পরাতে তিনি বিশাল ঘাবড়ে গেলেন। তিনি হাটার স্পিড বাড়িয়ে দিলেন। ইলিয়াস ভাই এর সাথে সাথে কুকুরটাও তার হাটার স্পিড বাড়িয়ে দিল। তিনি স্পিড কমালে কুকুরও স্পিড কমায় আবার তিনি স্পিড বাড়ালে কুকুরও স্পিড বাড়ায়। তিনি মনে মনে ভাবছেন ভো দৌড় দিবেন কিনা...
তিনি মনে মনে আল্লাহর নাম দিয়া দিলেন দৌড়, এমন দৌড় দিলেন যে এই অলিম্পিকে তিনি নিশ্চিত গোল্ড মেডেল পেতেন।
কুকুরটাও তার পেছনে পেছনে ছুটতে থাকল।
তিনিও ছুটছেন কুকুরও ছুটছে......
তিনিও ছুটছেন কুকুরও ছুটছে............
কুকুর পানি দেখলে ভয় পায় । বাঁশের সাঁকো দেখে কুকুরও ঘাবড়ে থমকে গেল। সে সুযোগে মুড়ি নিয়ে বাড়ি আসলেন। কিন্ত একি ! আমার এত কষ্টের ইলিশ মাছে মাথা দেখি বাড়ির হুলো বিড়াল চাটছে! গালে হাত দিয়ে বসে থাকলেন আর চিন্তা করছেন এখন কি করা যায়। এতবড় মাথাটা ফেলে দিতে খুব কষ্ট হলো, আবার বিড়ালের উচ্ছিষ্ট বলে নিজেও খেতে পারছেন না। হঠাৎ মনে পড়ল পলাশ যখন কাটাকুটার ক্যালসিয়াম খেয়ে নিয়েছে মাছের মাথাটাও ওকেই খাওয়াব সকালে ।
সকাল ৯ ঘটিকা
পলাশকে ফোন দিল ইলিয়াস সাহেব, পলাশ রিসিভ করে বললো কি খবর আব্বাজন ? (এ এক ফাজিল ছেলে ময়মুরুব্বিদের কখনোই সালাম দিবে না )
ইলিয়াসঃ ঐ ব্যাটা তোর আব্বাজানর গুষ্টি কিলাই তুই এখনই রওয়ানা হয়ে আমার বাসায় চলে আয়
পলাশঃ ইয়ে মানে আব্বাজান আমার একটু ব্যস্ততা আছে............
ইলিয়াস সাহেব ধমকের সুরে বললাম ছাড়া গরুর আবার ব্যস্ততা কি ? যাহোক পলাশ অনেক গাইগুই করে অবশেষে বাসায় আসল আর সে বিড়ালে চাটা মাছের মাথা দিয়ে ওকে আপ্যায়ন করা শুরু করলেন ইলিয়াস সাহেব। মিলাদের দাওয়াত নয়, ডাইরেক্ট ইলিশের মাথার দাওয়াতই পেলেন পলাশ মাহমুদ। খেতে খেতে তিনি ইলিয়াস ভাইকে বললেন- "আব্বাজান হুজুর, মাছের মাথাটি অতীব সুস্বাদু হইয়াছে। ফ্লেভারখানাও চমৎকার লাগিতেছে।"। ইলিয়াস ভাই বললেন- "বৎস, ফ্লেভার চমৎকার হইবে না? তোমার ভক্ষণারম্ভের পূর্বে উহা কে চাটিয়াছে দেখিতে হইবে না?"। পেছনে ডেকে উঠল- "মিঁয়াও, মিঁয়াও" ।
ইলিয়াস ও পলাশ ভাই ঠিক একই সাথে মিয়াও শব্দটার দিকে ঘুরে তাকালেন।
অবাক দৃষ্টিতে হা হয়ে গেলেন দু’জনই।
ইলিয়াস : আরে, এ যে আমাদের জেলাল (ইনি সিনিয়র প্রোগ্রামার, ধার্মিক ও রসিক টাইপের লোক) ভাই। তা বিড়ালের মতো ম্যাও ম্যাও করছেন কেন?
জেলাল : মানে, কলিংবেলটা খুঁজে পাচ্ছি না বলে হঠাৎ মাথায় এই বুদ্ধিটা খেলে গেল। একই সাথে তার দৃষ্টি গিয়ে পড়লো ইলিশের মাথাটার দিকে।
তাই দেখে ইলিয়াস ভাইয়ের বিখ্যাত সেই মুচকি হাসিটা মুখে তারকার মতো ঝলক দিয়ে উঠলো। সেই সাথে সূচালো পান খাওয়া বিখ্যাত দাঁতগুলোও বের হয়ে গেল।
জেলাল : ওই পলাশ মিয়া, এত্তো বড় মাথাটা তুমি একা একা খাইবা নাকি? আমার নজর পড়ছে। না দিয়া খাইলে কিন্তুক পেটে অসুখ করবো কইলাম।
পলাশ মাহমুদ : কি যে কও ভাগ্নে! মামা ভাগনে যেহানে, সব অঘটন সেহানে। আসো, হাতটা ধুইয়া চট জলদি বইসা পড়ো দেহি। বাকী অর্ধেকটা তুমিই খাও।
জেলাল : মামা-ভাগ্নে হইবো আর চাচা-ভাস্তে হইবো না - এইডা আমি মানি না। ইলিয়াস চাচারে ছাড়া আমি খামুই না।
জেলাল ভাইয়ের কথা শুনে ইলিয়াস ভাই মহা ঘা্বড়ে গেলেন। ইলিয়াস ভাই মনে মনে ভাবছেন, "এটা কি বিপদ!! মানুষ খাল কেটে কুমির আনে আর আমি সাগর কেটে হাঙ্গর এনেছি। "
ইলিয়াস ভাই ভাবছেন, এখান থেকে পালনো ছাড়া বুদ্ধি নাই। কয়েকদিন সুন্দর বনে গিয়ে আত্মগোপন করলে মন্দ হয় না। এখানে এদের সাথে থাকার চেয়ে সুন্দর বনে বাঘ সিংহের সাথে থাকা ভাল
ইলিয়াস ভাই কেবল পালাতে যাবেন, যেই মাত্র দরজার কাছে পৌছেছেন সেই মাত্র রাসেল আহমেদের (গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও মাইবিবি/পানবিবি ইঞ্জিন সহ আরো কিছু বিবির এক্সপার্ট) আগমন......
ইলিয়াস ভাইঃ আরে মিয়া, তুমি এখানে!!
রাসেল আহমেদঃ ভাই শুনলাম আপনি নাকি ইলিশ মাছ কিনছেন?
ইলিয়াস ভাইঃ খবরটা কি টিভি রেডিও তে প্রচার হচ্ছে নাকি?
রাসেল আহমেদঃ সকালে তাহমিদ আফসার মোবাইল করছিল, আপনি নাকি একটা ছাম্মাক ছল্লো ইলিশ কিনছেন। তাই দেখতে আইলাম। ভাইজান, পান বিবির একটা থিম বানাইতাছি। নাম ইলিশ । আপনার একটা ইন্টারভিউ লাগব। সেই সাথে সরাসরি সেই ইলিশ মাছের কিছু ফটোগ্রাফ। ইলিয়াস ভাইয়ের ধৈর্যের বাঁধ ভাংতে শুরু করল। নাহ আর পারা যায়।
দরজা খোলাই ছিল, তিনি এবার ঝেড়ে কষে একটা ভো দৌড় দিলেন।
রাসেল আহমেদঃ আরে ভাই যান কই? ( রাসেল আহমেদ ও পেছনে পেছনে দৌড় )
পলাশ মাহমুদঃ আ...ব...ব্বা... ( পলাশ মাহমুদ ও পেছনে পেছনে... )
জেলালঃ চা...চা... ( জেলাল ভাইও দৌড়... )
চার জনেই এবার রাস্তায় দৌড়াচ্ছেন। ইলিয়াস ভাই সা্মনে। পেছনে পেছনে রাসেল আহমেদ, পালাশ মাহমুদ, জেলাল।
দৌড়ানোটা মনে হয় ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ে। ঘন্টা খানিকের মধ্যে এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ ইলিয়াস ভাইয়ের পেছনে দৌড়াতে শুরু করলো। সবার মুখেই ধর ধর রব।
দৌড়াতে দৌড়াতে ইলিয়াস ভাই হঠাৎ একটা ম্যানহোলের মধ্যে পড়ে গেলেন। ঘটনা হঠাৎ হওয়ায় ক্রেজি জনগন কিছু বুঝতে না পেরে দৌড়াইতেই থাকে! )
ইলিয়াস ভাই উহার ভিতর থেকে উঠে দেখেন যে কেউ নেই, আহ কি আনন্দ! কাদা মেখে ভুত তিনি ! জনগন কিছুক্ষণ দৌড়ানোর পর যখন বুঝতে পারে যে তাদের সামনে আসলে কেউ নাই তখন তারা সোওওওজা ইউ-টার্ন নেয় আর ফিরে এসে দেখে একটা ম্যানহোল! ক্রেজি জনতা জনে জনে ম্যানহোলের মধ্যে লাফ দেয়! ) তবে ততক্ষণে ইলিয়াস ভাই জনতার মাঝে মিলে গেলেন। হঠাৎ সামনে উড়ে এসে পরলো পলাশ । এবং স্বয়ং তার আব্বাজানকে চিনতে পারল না । বলল, ব্রাদার এখানে একজন ইলিশ ওয়ালা মুরুব্বি ঝাপ মেরেছেন । তিনি কি ধরা খেয়েছেন? ইলিয়াস ভাই কথা বেরোলো না। বললেন, এখনও ওই মুরুব্বি ম্যানহলে গোল্লা ছুট খেলছেন । আপনি আল্লার নাম বলে ঝাপিয়ে পড়ুন । পলাশ চোখ মুখ বুজে আল্লাহ হুয়াকবার বলে ম্যানহলে ঝাপিয়ে পড়ল।
যাক !! এক আপদ গেছে ! এখন কোন ভাবে আজ রাত কোথাও মাথা গুজে পার করে দিতে পারলেই হয় । ভালই আক্কেল হয়ছে । আর জীবনেও তিনি ইলিশ কিনবেন না। অসময়ে ইলিশ কেনার ভালই উসুল দিতে হচ্ছে ।
কাদামাখা অবস্থায় তিনি রাস্তা দিয়ে দিয়ে হেটে চলেছেন । কোথায় যাওয়াযায় ভাবতে ভাবতে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, আজ রাত নিজ দোকানেই কাটিয়ে যেয়া যাক । কিন্তু চাবি রেখেছেন শান্ত বালকের কাছে । যাবে নাকি তার কাছে ।
নাহ !! পাগলে পাইছে আমারে ? নিজেকেই শাসালেন তিনি । শান্ত বালক নাম হলেও শান্ত সে মোটেও না । কি সুন্দর একটা জাঁদরেল ইলিশ কিনে ফিরছিলেন তিনি । এতক্ষনে ইলিশ তার পেট এ লাফালাফি করত আর তিনি কি সুন্দর হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমাতেন। এই শান্ত বালকই সব গুবলেট করে দিল । যত্তসব। এই শান্ত বালক সব নষ্টের গোঁড়া । ভাবতে ভাবতে গায়ের রক্ত গরম হয়ে গেল ইলিয়াস সাহেবের । ভেতর থেকে যুদ্ধের ডাক পেলেন ! আজ শান্ত বালকের এক রাত তো তার আরেক রাত । কোমরে গামছা বেধে শান্ত বালক কে শেষ যেখানে দেখেছিলেন সেদিকে রওনা দিলেন তিনি ।
রাত ১০ ঘটিকা
নতুন মার্কেট পর্যন্ত এসে দেখলেন উদাসীন (ইনি জটিল জটিল গল্প ও কবিতা লিখে থাকেন) কে। সে সম্পূর্ণ উদাসীন হয়ে কালি গোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আপন মনে কি যেন বিড়বিড় করছে ।
ইলিয়াস সাহেব ভাবলেন ভালই হল । সাথে উদাসীন কে নিয়ে যাই ।
কাছে গিয়ে ইলিয়াস ভাই ডাক দিলেন উদাসীন-কে । বাজখাই গলায় বললেন ওহে উদাসীন , এতো রাতে তুমি এখানে কি করো ? উদাসীন ঢুলুঢুলু চোখে আঁকাস থেকে চোখ নামিয়ে ইলিয়াস ভাইয়ের দিকে তাকালেন । কিন্তু কাদা মাখা সরিলে যেখানে পলাশ তার বাপ কেই চিনতে পারে নি সেখানে উদাসীন তো কোন ছার ! সে দেখল পেট মোটা আধো মানুষ আর আধো কাদার তাল তার সামনে দাড়িয়ে তাকেই ডাকছে । ডাকছে তো না যেন গর্জন করছে ।
উদাসীন ভাই ভাবলেন তার শেষ দিন উপস্থিত ! এবং তিনিও চোখ কান বন্ধ করে বিকট চিৎকার করে পিছন দিকে দিলেন ছুট !
ইলিয়াস হত বিহ্বল হয়ে দাড়িয়ে রইলেন , যাই হোক শেষমেশ তিনি আবার রওনা দিলেন শান্ত বালকের সন্ধানে । মনে তার ধিকি ধিকি আগুন। ওদিকে শান্ত বালক মাঠ থেকে ফেরার সময় একটা ব্যাং ধরে এনেছে সেটার আগা পাস তলা ইত্যাদির ভাল মতন ছবি তুলে ফোকাসে মেরে দেবে বলে। ইদানিং যাই পাচ্ছেন তাই অন-লাইনে পোস্ট করছেন । কারণ আর কিছুই না । ব্যাং এর কয়েকটা ছবি তুলে তিনি খেয়ে দেয়ে আরাম করে ঘুমাতে গেলেন। ব্যাং টা যেন না মরে তাই পানির জগে সেটাকে ছেড়ে দিলেন তিনি ।
আর এইদিকে ইলিয়াস ভাই চরম রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে শান্ত বালকের বাসার দিকেই আসছিলেন । বাসার কাছাকাছি পৌঁছেই তার সামনে পড়ে গেল ফারহান খান এর।
ইলিয়াস ভাই ভাবলেন এই আবুলটাকে ধরে নিয়ে যাই । শান্ত বালক কে সাইজ করতে সুবিধে হবে তখন । মূর্খ মানুষ বুঝিয়ে রাজি করান সহজ হবে।
আগের বার উদাসীন তাকে দেখে পালিয়েছিল। তাই একে হঠাত ধরতে হবে । যেন না পালাতে পারে তাই ইলিয়াস ভাই চুপিচুপি ফারহান খানের ২ হাত কাছে চলে এলেন । ঝাঁপিয়ে পড়ে তিনি ফারহান খান কে ধরলেন ।
প্রথমে চমকালেও ফারহান খান ঠিক চিনতে পারলেন ইলিয়াস ভাইকে তার পান খাওয়া দাঁত দেখে ।
ফারহান :আরে চাচা মিয়া আপনার গায়ে এগুলা কি ?
ইলিয়াস:এগুলা শিন্নী , খাবি ??
ফারহান :শিন্নী কই , আমি তো দেখি কাদা !!
ইলিয়াস:আরে কাদাই দেখছিস আবার প্রশ্ন করছিস কেন ?
ফারহান : তা এখানে কি করছেন এতো রাতে ?
গলার সর খাদে নামিয়ে ইলিয়াস ভাই এদিক ওদিক চেয়ে বললেন , শুন ... কানে কানে বলি ...
ফারহান : চাচা মিয়া কানে কানে না, কানে মুখে বলে ওটাকে ।
গালের দাঁত সব বের করে বললো ফারহান খান ।
ক্ষণিকের জন্য ইলিয়াস ভাইয়ের মনে হল এই মূর্খের সাথে কথা বলে আমি নিজেও মূর্খ হয়ে যাব।
সারারাত আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছিল দৌড়া-দৌড়িতে কেউ খেয়ালই করেনি। এদিকে আকাশটাও ফর্সা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।
রাত ১ ঘটিকা
হঠাৎ ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হলো।
বৃষ্টির ধারাও বাড়তে থাকে আর আমাদের ইলিয়াস ভাইয়ের গায়ে লেগে থাকা ম্যানহোলের কাঁদা-মাটিও পরিষ্কার হতে থাকে।
এতক্ষণ ধরে শান্ত বালক বাড়ির বারান্দা থেকে সবই দেখছিল। ফরহানকে চিনতে পারলেও, সে কার সাথে কথা বলছিল তা এবার পরিস্কার বোঝা গেল।
সাথে সাথেই শান্ত বালক -ভাইয়া বলে চিৎকার দিয়ে ছাতা মাথায় বাড়ির বাইরে এলো।
শান্ত বালক : ভাইয়া, কি হয়েছিল? এভাবে কাঁদা-মাটি মেখে ছিলেন কেন? আমি তো ভাবলাম বিখ্যাত সেই কাঁদা-বাবা বুঝি বাড়ির সামনে এসে হাজির হয়েছে।
ইলিয়াস ভাই : আরে রাখো তোমার কাঁদা-বাবা। ক্ষুধায় পেটটা চ্যু চ্যু করছে। বাড়িতে খাবার আছে কি কি সেটা আগে বলো?
শান্ত বালক : কেবলই ওভেনে ভাত গরম করা হয়েছে। সাথে আছে গতরাতে রেঁধে রাখা ইলিশ মাছের মুড়িঘণ্ট। মাছের মাথাটা কিন্তু খুব ভাল মতো রান্না করেছি ভাইয়া।
ইলিয়াস ভাই : ওরে বাপরে! আবারও ইলিশ, আমি মাফ চাই।
আচ্ছা ভাইয়া, এখানে কেমন একটা ড্রেন টাইপের গন্ধ বের হচ্ছে না? মনে হচ্ছে কেউ বুড়িগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে এসেছে। কিন্তু এখানে তো আমরা তিনজন ছাড়া আর কেউ নেই। কাহিনীটা কি? রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি।
এই যে বালক, তোমার নাকে সমস্যা হয়েছে। অতি সত্ত্বর ডা: উপলের স্মরণাপন্ন হও। বুঝলে? আমার নাম বললে ভিজিট অর্ধেক নিবে।
ওদিকে ফারহান দাঁত বের করে হাসছে।
ঠিক সেই মুহূর্তে সেই পথ দিয়ে একজন মাছওয়ালা মাছের ঝুড়ি মাথায় করে যাচ্ছিলেন।
ইলিয়াস ভাই স্বভাবগত কারনেই বলে উঠলেন, কি মাছ গো বাবাজী?
মাছওয়ালা : চাচা মিয়া, ইলিশ, পদ্মার বড় বড় ইলিশ আছে, দামে খুবই শস্তা। দেবো নাকি একখান? এই বৃষ্টির দিনে ইলিশের দো'পেয়াজা আর সাথে মাথাটা মুড়িঘন্ট করে খাইয়ের, দারুন স্বাদ পাইবেন।
ইলিয়াস ভাইয়ের এবার মাথার চুল ছেড়ার উপক্রম। সবার হইলো ডা কি, যেই দিকেই তাকায় শুধু ইলিশ, ইলিশ আর ইলিশ! এই রাত দুপুরেও ইলিশ। এ কি মসিবতে পড়লাম। প্যাঁচাল পারতে পারতে রাত কাবার।
ইলিয়াস সাহেব চিন্তা করছেন, সেদিন কার মুখ দেখে যে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। ওহ মনে পড়েছে, সেদিন ঘুমটা ভেঙ্গেছিল ইমরান তুষারের [ইনি পুরা বছর বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে থাকেন(তার টপিক লিস্ট দেখে তাই মনে হয়) ও হাল্কা গল্প,কবিতা লিখে থাকেন] ফোন কল পেয়ে। ব্যাটারে যদি এহন পাইতাম। বাংলালিংক ফ্রেন্ড ফাইন্ডার দিয়ে তুষারের অবস্থান বের করেন ইলিয়াস সাহেব। দেখেন যে সে পাশের গলির হোটেলে আছে।
ইলিয়াস ভাই, শান্ত বালকের হাত ধরে প্রায় টানতে টানতে হোটেলে গিয়ে ঢুকলেন। সেই সাথে পিছু পিছু ফারহান খানও।
ওয়েটার : শুভ-বৃষ্টি সকাল ২৪ ঘন্টার হোটেলে।
ইলিয়াস ভাই : ঐ মিয়া সকালটা শুভ না অশুভ তা তুমি বুঝলা ক্যামনে?
ওয়েটার হকচকিয়ে গেল। ইয়ে মানে...স্যার আমাদের মেনু।
ইলিয়াস ভাই : আরে রাখো তোমার মেনু। যা আছে তাই দাও।
ওয়েটার : ওকে বস।
এদিকে শান্ত বালক আর ফারহান ভয়ে চুপচাপ বসে আছে। সুযোগ বুঝে শান্ত বালক একবার টেবিলের আড়াল থেকে মানিব্যাগটা চেক করে নিলো। আর ওদিকে খালি পকেটে ফারহানের রীতিমতো ঘাম ঝরছে। দু’জনেই ভাবছে, খাবারের বিলটা যে কার উপর দিয়ে যায়।
ঠিক সেই মুহূর্তে ওয়েটার খাবার নিয়ে হাজির। বিশাল একটা ইলিশ ভুনা এনে রাখলেন ইলিয়াস ভাইয়ের সামনে। স্যার, আমাদের হোটেলের আজকের সেরা আয়োজনটা আপনার জন্যই নিয়ে এলাম। ইলিয়াস ভাই কয়েক মুহূর্ত ঠায় বজ্রাহতের মত বসে রইলেন। গলা দিয়ে স্বর বেরুচ্ছে না।