ইয়ানূর লিখেছেন:তামাম মুসলামান ভাইয়দের ঈমানী দায়ীত্ব ইসলামের বিপক্ষে কথা বলার উচিত জবাব দেয়া।
জ্বী ভাই জবাব দেন, কথার জবাব কথায়, লেখার জবাব লেখায়। বিপক্ষ মত হলেই তাকে ঝুলিয়ে দিতে হবে, এমন নীতি তো হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ও ছিল না।
নির্বাক লিখেছেন:হ্যাঁ, অবশ্যই ধর্ম মানা এবং না মানাটা ব্যক্তির ব্যক্তিগত অধিকার। নাস্তিক হওয়ার জন্য কাউকে শাস্তি দিতে হবে তার পক্ষে আমিও না।
তাহলে ব্লাসফেমী আইন প্রনয়নে বাধ্য করা হবে এমনটা কেন বলা হল হেফাজতে ইসলাম থেকে?(আজকের পত্রিকা দেখুন)
নির্বাক লিখেছেন:শাহবাগে শুধু ঢাকার মানুষ কেন এসেছে? কেন সারাদেশের সাধারণ মানুষ আসেনি?
গণজাগরণ মঞ্চ থেকে সারাদেশের মানুষকে ডাকাই হয়েছে কবে? আর আপনারা যে নাস্তিক নাস্তিক করছেন, তো নাস্তিকদের পদ্ধতি কেন অনুসরণ করলেন? আমার জানা মতে লং মার্চ নামক আন্দোলনের উদ্ভাবন করেন মাও সে তুং যিনি নিজে নাস্তিক ছিলেন। হাদিস কোরআনের কোথাও এমন প্রতিবাদের ধরণের কথা বলা আছে?
ভালোবাসার কোড লিখেছেন:আমার তা মনে হয় না। ইমরান এইছ সরকার এজেন্ডা ঘোষণা শেষে যেভাবে জয় বাংলা বললেন
ভাইজান আমি জিয়াউর রহমানকে জয়বাংলা স্লোগান দিতে দেখেছি, তিনি আওয়ামী লীগের দালাল ছিলেন বুঝি?
ভালোবাসার কোড লিখেছেন:আমি আমার জিন্দেগিতে দেখি নাই বিএনপি বা শিবিরের কেউ এই স্লোগান দিছে বা সাপোর্ট দিছে।
পাকিস্তানপন্থীদের জয় বাংলা শুনতে আর বলতে একটু খারাপ লাগবেই, কারণ তাদের পাকিস্তান ভাঙ্গার পেছনে জয় বাংলার অবদান কম না।
নির্বাক লিখেছেন:গণতান্ত্রিক দেশে কোন বিষয়ের দায়িত্ব নিতে গেলে অনুমোদনটা মূলতঃ জনগনই দেয়। হেফাজতে ইসলামের দায়িত্ব জনগণ কতৃক অনুমোদিত।
জনগণ সে দায়িত্ব কিভাবে দিল? জনগণের ভোটে নির্বাচিত তারা? ইসলামের হেফাজত করার দায়িত্ব কোরআন হাদিস অনুযায়ী আল্লাহ নিজেই নিয়েছেন। তবে তারা আল্লাহর দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়ে শিরকি করছে না?
“...(ধর্ম সম্পর্কে) বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে আমিই (আল্লাহ) আপনার জন্য যথেষ্ট...” –আল কোরআন (সুরা হিজরঃ৯৫)
এর পর ও ধর্ম নিয়ে বিদ্রুপকারীদের ফাঁসীর দাবী জানানোর অধিকার তাদের কে দিল?
“...যদি তারা আত্মসমর্পণ (আল্লাহর কাছে) করে তবে নিশ্চয়ই তারা পথ পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তোমার কাজ তো কেবল প্রচার করা। আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা।”–আল কোরআন
(সুরা আল ইমরানঃ২০)
আন্দোলন কি আল্লাহ’র এই আয়াতের খেলাফ নয়?
“...তারপর ওরা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তোমার কর্তব্য তো শুধুমাত্র স্পষ্ট বাণী পৌঁছে দেয়া...”–আল কোরআন (সুরা নাহলঃ৮২)
তাদের ফাঁসীর দাবী করতে কোথায় বলা আছে?
“...তুমি মানুষকে হিকমত ও সৎ উপদেশ দিয়ে তোমার প্রতিপালকের (আল্লাহর)পথে ডাক এবং তাদের সাথে ভালভাবে আলোচনা কর। তাঁর (আল্লাহর) পথ ছেড়ে যে বিপথে যায় তার সম্পর্কে আল্লাহ্ই ভাল জানেন, আর যে সৎ পথে আছে তা-ও তিনিই ভাল করে জানেন”
– আল কোরআন (সুরা নাহলঃ১২৫)
কে নাস্তিক কে আস্তিক আল্লাহ ভালো জানেন, আল্লাহ কোরআনেই তা বলে দিয়েছেন তবে শাহবাগের সবাইকে গণহারে নাস্তিক বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে...
“...তোমাদের কাজ তো কেবল প্রচার করা, আর হিসাব-নিকাশ তো আমার কাজ...” –আল কোরআন (সুরা রাদঃ৪০)
“...আর তোমাদের এই যে জাতি (মানবজাতি), এ তো একই জাতি। আর আমিই (আল্লাহ্) তোমাদের প্রতিপালক। তাই আমাকেই ভয় কর। কিন্তু তারা (মানুষ) নিজেদের বহু ভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে সন্তুষ্ট। সুতরাং ওদেরকে কিছু কালের জন্য বিভ্রান্তিতে থাকতে দাও।” –আল কোরআন (সুরা মুমিনুনঃ৫২-৫৪)
“...আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এবাদতের নিয়ম কানুন নির্ধারিত করে দিয়েছি যা ওরা পালন করে... তুমি ওদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে ডাক... ওরা যদি তোমার সাথে তর্ক করে তবে বল, ‘তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ্ ভাল করেই জানেন। তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন সে বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন...” –আল কোরআন (সুরা হজঃ৬৭-৬৯)
আগন্তুক মিলন লিখেছেন:১। গণজাগরন মঞ্জ থেকে কি ইসলাম বা নবী রাসূলদের সম্পর্কে কোন ধরনের কটুক্তি করা হয়েছে?
২। গণজাগরন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান কি কোন কটুক্তি করেছে?
৩। আল্লামা শফী তার নিজের লেখা বইয়ে(অবান্তর প্রশ্নের মুলোৎপাটন) বলেছেন, "আল্লাহপাক চাইলে মিথ্যা বলতে পারেন, কিন্তু তিনি বলেন না।" আল্লাহপাককে মিথ্যাবাদী বলার পরও কি আপনাদের ধর্মীয় অনুভূতি আহত হয় না?
৪। আমাদের প্রত্যেকেরই আছে ধর্ম পছন্দ করা, তার তা পালন করা। আপনি যেমন আপনার ধর্ম প্রচারের অধিকার রাখেন, তেমনি একজন হিন্দুও তার ধর্ম প্রচারের অধিকার রাখেন। আমাদের জাকির নায়েক যখন বাইবেন, গীতাসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের ব্যাপক সমালোচনা করেন, তখন আপনাদের ধর্মীয় অনুভূতি আহত হয় না, কিন্তু একজন হিন্দু যদি বাইবেল বা কুরআনের সমালোচনা করে বলে, তার গীতা সর্বশ্রেষ্ঠ তখন কেন আপনার অনুভূতি আহত হবে?
৫। আজকে দেখলাম, চট্টগ্রামে এক হিন্দু দম্পতিকে হেফাজতের কর্মীরা লাঞ্ছিত করেছে রিকসা করে যাওয়ার সময়। একজন স্ত্রী যদি তার স্বামীর সাথে রাস্তায় চলতে পারছে না, তাহলে ইসলাম আমাদের কি এই শিক্ষা দিয়েছে?
৬। হেফাজতে ইসলাম নারীদেরকে পুরুষের সাথে কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশুনায় নিষেধাক্কা দাবী করেছে। অথচ এই দাবী পেশ করার পরই তারা খালেদা জিয়ার সাথে রাতে মিটিং করেছে। এই মিটিংয়ের ছবি সব মিডিয়াতেই এসেছে। খালেদাকে কেন তারা হিজাব পড়ার সদুপদেশ দিলেন না? নাকি তার অর্ধস্বচ্ছ জর্জেটের শাড়ী তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত করে না?
৭। তারা মহিলাদের সাংবাদিকতা মেনে নিতে পারেন, তাকে মারধর করেন। একটিবারও কেন বলেন না, আমরা নারী নেতৃত্ব মানি না। বলেন না কেন, আমরা হাসিনা-খালেদাকে চাই না?
৮। যারা ইসলামের কটুক্তি করেছে তাদের শাস্তি দাবী করেছে, খুব ভাল কথা। কিন্তু যারা বাইতুল মোকারম মসজিদে আগুন দিল, মসজিদের মাইক থেকে ঘোষনা দিল সাঈদীকে চান্দে দেখা গেছে, তাকে বাচানো ঈমানী দায়িত্ব, এর ফলস্রুতিতে ২০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎকেন্দ্র আগুনে নষ্ট হলো, এসব ধর্ম ব্যবসায়ী কি ইসলামের কোন ক্ষতি করে নি? তাদের বিচার কেন চাইছে না? নাকি তারা নিজেরাই ধর্ম ব্যবসা করতে নামছে?
৯। যেসব ব্লগরের কথা তারা বলছে, তারা তো এই লেখা আজকে লেখে নি। বাংলা ব্লগের সূচনা হয়েছে ২০০৫ থেকে। তাদের ধর্মানুভূতি কি ৮ বছর পর সাঈদীর ফাসির রায়ের পর আহত হয়েছে?
মিলন ভাইয়ের প্রশ্ন গুলোরও উত্তর পেলাম না।
দাবী গুলো নিয়েও কিছু প্রশ্ন আছে....
১. সংবিধানে 'আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করতে হবে।
আগেই প্রশ্ন করা হয়েছে, সংবিধান যেহেতু মুসলমান জনগোষ্ঠি নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যও তবে তাদের উপর এটা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?
২. আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও ইসলামের অবমাননাএবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।
উপরে প্রশ্ন করেছি।
৩. শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে সরকারকে ইসলাম অবমাননা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে কে কে নাস্তিক তার কোন তালিকা দেওয়া হয়নি। আর কে আস্তিক বা নাস্তিক কে বলতে পারে? তার অন্তরে কি আছে আপনি জানেন?
৪. ব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
বিজাতীয় সংস্কৃতি কোনটা? ভেসে আসা বর্বর আরবদের সংস্কৃতি নাকি হাজার বছরের বাংলা সংস্কৃতি?
৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
নারীনীতি ইসলামপন্থী কিকরে করতে হবে তার কোন ব্যাখ্যা কি দেওয়া হয়েছে?
৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
আপনারা আপনাদের ধর্ম পালন করতে পারবেন, তবে কাদিয়ানিরা কেন পারবে না?
৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।
কেউ এই ভাষ্কর্যের সামনে গিয়ে পূজা করছে? তবে ভাষ্কর্যের সাথে ইসলামের বিরোধিতা কি? এটাকি পাকিস্তানী আত্মার প্রশান্তির জন্য বাংলার ইতিহাসের প্রতীকগুলোকে ধ্বংস করার পায়তারা নয়?
৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসলি্লদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।
কে কবে কোথায় ইসলাম প্রচারে বাঁধা প্রদান করেছে?
৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিচয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।
দাড়ি টুপি নিয়ে কেউ ঠাট্টা করেছে বলে তো দেখিনি, তবে রাজাকারদের রূপক অর্থে দাড়ি টুপি ওয়ালা দেখানো হয়।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তরকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
এরা তো জোর করে কাউকে ধর্মান্তরিত করছে না, আপনি তাদের কাছে নিজের ধর্মের দাওয়াত দিন, কেউ তো বাঁধা দিচ্ছে না।
১১. রাসূলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
সরাসরি বললেই পারেন, জামাত শিবিরের নেতাকর্মীদের ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও করতে দিতে হবে, তাদের গ্রেফতার করা যাবে না।
১২. সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
উপরের মত একই দাবী, জামাত বাঁচাও।
১৩. অবিলম্বে গ্রেফতার সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতিকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
মূল উদ্দেশ্য এটাই জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদের মুক্তি চাই।
অনিশ্চয়তার পৃথিবীতে অনিশ্চয়তার মাঝে ডুবে আছি।