টপিকঃ মাইক্রোসফট সারফেইস প্রো রিভ্যু
মাইক্রোসফট সারফেইস প্রো প্রথম রিলিস হবার পরের ক্রেইজ দেখেই এক ধরনের ইচ্ছা চেপেছিলো এই জিনিশ কেনার। তখন বেস্টবাইয়ের ক্রেজি লাইন দেখে আর সাহস করি নাই। প্লাস এর আগে সারফেইস আরটি'র ব্যপারে কাউকেই খুব পজেটিভ কিছু বলতে দেখি নাই তাই ভেবেছিলাম থাক পরে দেখা যাবে। কিন্তু রিসেন্ট সিনেট ডট কমের কিছু রিভ্যু আর ভিডিও দেখে এবার ডিটারমিনড হলাম যে কিনেই ফেলবো সারফেইস প্রো। দেরী না করে বেস্টবাই তে চলে গেলাম কারণ এদের প্রটেকশন প্ল্যন হচ্ছে অসাধারণ আর কাস্টমার সার্ভিসও বরাবরই বেশ ভালো পেয়েছি। সে যাই হোক আমার সারফেইস কেনার ডিসিশনের পেছনের কারণ গুলো আগে বলে নেই:
- উইন্ডোজ এডিকশন কোনো কারণে এই প্ল্যটফরমেই আমি কমফি ফিল করি। ম্যকের বিগ সাইজ ডেস্কটপটা শুধু রুমের শোভা বর্ধন ছাড়া তেমন কিছুই করে না। মাঝখানে তাও আইফুন কানেক্ট করে ডেস্কটপটা গেমিং প্ল্যটফরম বানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার আইফুন ৪ দিয়ে সেটা পসিবল না, আর এখন আইফুনের নেক্সট রিলিসের সময় চলে আসছে তাই আর আপডেটও করছি না।
- ল্যপটপ ডিচ করার প্রবল ইচ্ছা। নো ফান! এক ধরনের অসহ্য বিরক্তি লাগছিলো ল্যপটপ নিয়ে তার উপরে আমি এমন কোনো ভারী কাজও করিনা যে হা করে একটা বড়ো স্ক্রিণে তাকিয়ে থাকতে হবে। আর আমাদের স্কুলের এইনজেল ওয়েবসাইট আইপ্যডে ঠিক মতো কাজ করে না সেটাও আরেক ভেজাল। তাই স্টিক থাকতেই হলো উইনডোস বেইসড কিছু নিয়ে
- উইন বেইসড ম্যড স্লিক হাই কনফিগ কিছু অসাধারণ অল্ট্রাবুক দেখে একটু কনফিউসড হয়ে গেলাম। বিশেষ করে
Acer s7
আর লেনোভো ইয়োগা
কিন্তু স্টিল সেই ল্যপি ক্যটাগরীতেই পড়ে যায় যেখান থেকে আমি বের হতে চাচ্ছি আপাতত। তাই এবার ট্যবলেট সেকশনে নজর দিলাম, ঘুরে ঘুরে ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগিয়ে সবগুলা ট্যবলেট হ্যন্ড অন এক্সপিরিয়েন্স করে দেখলাম। বিশেষ করে এন্ড্রু ট্যবলেট গুলার ডিজাইন সেরকম জঘণ্য লাগলো। ইসপেশালী নেক্সাস ১০ এমন হাই পিক্সেল ট্যবলেটের চেহারা কি করে এমন বিরক্তিকর চিপ লুকিং হয়
অনেস্টলি এর থেকে ২৫০ ডলারের ক্রোমবুক গুলাও আরেকটু স্টাইলিশ
ক্রোমবুকের কথা মনে হতেই মাথায় আসলো ক্রোমবুক পিক্সেলের কথা! ড্যশিং একটা পিস বলা যায় এটাকে। চোখ বন্ধ করে বাজারের বেস্ট রেজুলুশন কম্পিউটার
এইবার মাইক্রোসফটের স্টেশনে এসে আসলে চোখ আটকে গেলো স্লেইট সাইজড সারফেইস দেখে। wowing ইমপ্রেশন প্রথম টাচেই। তার সাথে আছে স্টাইলাস পেন যেটা আমার জন্য খুবই জরুরী কারণ আমার হাত প্রচুর ঘামায় এজন্য এলসিডি স্ক্রিণের সাথে আমার বন্ধুত্ব অত ভালো না। একই কারণে স্যম এস ফোরের নতুন টাচ জেসচার বেশ ইমপ্রেসিভ মনে হয়েছে আমার কাছে যদিও অনেকের কাছে এটা একটা বেদরকারী অপশন! এনিওয়েইজ ৯ টার আগে ডিসাইড করতে হবে কারণ স্টোর বন্ধ হয়ে যাবে। স্বল্প সময় ইউজায়া যা বুঝলাম এটাই বা এরকম কোনো কিছুই আমি চাচ্ছিলাম।
ক্যশে পে করা লাগলো অলমোস্ট ১৪০০ ডলার (২ টা ১২৮ জিবি আইপ্যড ৪) উইথ প্রটেকশন প্ল্যন, নিউইয়র্কের বেতাল সেলস ট্যক্স, আর ডকের খরচ সব মিলিয়ে। নোট - সারফেইস আরটি কিনলে ডক ফ্রি পাবেন কিন্তু প্রো এর সাথে আলাদা করে কিনতে হবে। যাই হোক খুব বেশী টেকি রিভ্যু দিবার এবিলিটি এই বান্দার নেই তাই প্রথম গ্লিমস থেকে পাওয়া প্রস & কনস গুলা নিচে তুলে ধরছি
১. সুপার ফ্যস্ট, ইভেন আমি কয়েকটা এপস এবং সাইট সাইমুলটেনিয়াসলি আইপ্যড ৪ এর সাথে লোড করেছি, নি:সন্দেহে সারফেইস স্লাইটলি ফ্যস্টার লেগেছে আমার কাছে
২. সারফেইসে অনলি ২ টি অপশনস এভেইলেবল ৬৪/১২৮, এর মধ্যে ৬৪ জিবি কিনবেন না ভুলেও, কারণ উইন ৮ নিজেই অর্ধেক স্পেইস খেয়ে বসে থাকে তাই আপনার জন্য খুব বেশী রুম এভেইলেবল থাকবে না। যদি আপনি ক্লাউডে বাস করেন আর টুকটাক টিপস জানেন জায়গা সেইভ করে (পেইজ ক্যশ ডিলিশন প্লাস রিকভারী ডিস্ক ট্র্যন্সফার টাইপ স্টাফ) উইন ইউজ করার তাহলে ৬৪ নিতে পারেন নাহলে আমি রিকমেন্ড করবো না ৬৪
৩. ডিসপ্লে অবশ্যই ১০৮০ পি এইচডি তবে খুব আহামরি না ম্যকের রেটিনা ডিস্প্লের সাথে কম্পেয়ার করলে। আপনি যদি গ্র্যফিক্সের প্রো -- মিনস রিয়েলি প্রো টাইপ ভিডিও এডিটিং এবং কালার ম্যনিপুলেটিং করে থাকেন তাহলে ল্যপটপ ডিচ করে ফুল টাইম সারফেইস ইউজ করতে পারবেন না। আর নাহলে মোটামুটি যে কোনো উইনডোস ইউজার ফুল টাইম সারফেইস ইউজ করতে পারবেন
৪. লাইটনেস -- থিকনেস, আকার এবং ওয়েইট -- এগুলা কন্সিডার করলে সারফেইসের রেটিং খুব বেশী হবে না। নিজেই দেখুন:
৫. মল্টাই-টাচ জেসচার একটা অসাধারণ ফিচার একসাথে ৫ আংগুল দিয়ে পেইন্ট করতে পারবেন। ওভারঅল আমার টাচ এক্সপিরিয়েন্স খুবই ভালো, যদিও কিছু থার্ডপার্টি এপস এখনও টাচ জেসচারের জন্য সুইটেবল না (যেমন অভ্র), তবে আশা করা যায় উইন ৮ এর কথা বিবেচনা করে শীঘ্রই তারা আপডেট করবে। তবে একবার ল্যপটপের মতো ডকে বসিয়ে ইউজানো শুরু করলে পরে অন্য ল্যপি বা ডেস্কটপ দেখলেই স্ক্রিণে হাত চলে যায়, এটা একটা প্রবলেম
৬. মিউজিক এপস হিসবে প্যন্ডোরার ফ্যন হয়ে থাকলে আপনাকে আরো কিছুদিন ওয়েইট করতে হবে, প্যন্ডোরা মাইক্রসফটের এপস্টোরে দেখি নাই এখনও তবে আইহার্টরেডিও এবং টিউনইন রেডিও এভেইলেবল স্ট্রিম করে মিউজিক শুনার জন্য
৭. ফটো এডিটিং এপস হিসেবেও অনেকগুলাই দেখলাম ভালো ভালো ফিচার সমৃদ্ধ তবে এখনও কোনো পেইড এপস ট্রাই করা হয় নাই
৮. ব্যটারী পারফরমেন্স বড়ই খারাপ ব্রাইটনেস কমিয়ে ৫ ঘণ্টা পাবেন সর্বোচ্চ, যদি ইলেক্ট্রিসিটি প্রবলেম নিয়ে দু:শ্চিন্তা থাকে তাহলে মনে হয়না ট্যবলেট হিসেবে খুব স্যটিসফাইড হবেন এই ব্যটারী লাইফ নিয়ে
৯. মাইক্রো ইউ.এস.বি পোর্ট অনলি একটা আমার কোনো আইডিয়া নাই কেন! যদিও ইউএসবি ৩ পোর্ট তারপরেও একটা থাকার কোনো মানে দেখছি না যেহেতু এই ট্যবলেটের মেইন উদ্দেশ্য ল্যপটপ আর ট্যবলেটের মধ্যে একটা ব্রীজ স্থাপন করা।
১০. প্রায় ৭-৮ ঘন্টা হেভি ইউজের পরেও ব্যকসাইড একটুও গরম হয় নাই। হুইচ ইস গুড! অন্য ট্যবলেট গুলা মোস্টলি ২ ঘন্টা পরেই গরম হওয়া শুরু করে।
আপাতত এই কয়েকটা পয়েন্টই মাথায় আসছে বা আমি ফিগার আউট করতে পেরেছি, আরো কিছু পেলে আপডেট করে দিবো এখানে..
শেষকথা: যদি আপনি ফুলটাইম ইউজ করার জন্য লাইট কিছু চিন্তা করেন উইন প্ল্যটফর্মে সারফেইস এখন পর্যন্ত বেস্ট অপশন কারণ এই ছোটো ১০ ইনচ ট্যবলেটে আপনি আপনার পছন্দের সব উইন্ডোস এপস ইউজ করতে পারছেন সহজেই। অন্যসব অল্ট্রাবুক থেকেও রেইটিং অনেক হাই সব টেক ম্যগ এবং এডিটরের দৃষ্টিতে। তবে যদি বাজেট একটু কম হয়ে থাকে, আর আপনিও ট্যবলেট এক্সপিরিয়েন্সের জন্য মরিয়া হয়ে আছেন - গো ফর আইপ্যড ওভার এনি এন্ড্রু ট্যবলেট..