আরণ্যক লিখেছেন:নিয়ান্ডার্থাল এর ছবি গুলি মজার। এগুলো তো একটা ধারণা আধুনিক জেনেটিক্স এর সাহায্যে। কম্পিউটারের তৈরী। আমরা যে ডাইনোসার দেখে টিভিতে সে গুলি আসলেই এরকম ছিল কিনা তা নিয়েও কিন্তু অনেক বিতর্ক আছে।
নিয়ান্ডার্থাল এবং ডাইনোসর ইত্যাদি ফসিলে মূল প্রাণীটির অসংখ্য কংকাল পাওয়া গেছে। যেসব ইমেজ আমরা দেখি ওগুলো সেসব কংকালের স্ট্রাকচারাল এ্যানালিসিসের উপর ভিত্তি করে। একদম হুবহু না হলেও আসল প্রাণীটির সাথে ইমেজগুলোর ৯০% মিল থাকবে বলে ধরে নিতে পারেন। শুধু কংকাল না, এখন জেনেটিক্স এবং অন্যান্য সাইন্সের উন্নতির বদৌলতে আমরা আরো অনেক কিছুই জানছি। নিয়ান্ডার্থাল মানুষদের দাঁত এ্যানালাইসিস করে তাদের কি ধরণের ডায়েট ছিলো তা আইডিয়া করা যাচ্ছে। যেমন ছবির মহিলার চুল যে লাল ছিলো তা তার ডিএনএ থেকে জানা সম্ভব হয়েছে - ওটা তাঁরা কিভাবে জানলেন? রেডহেড মানুষের জীনের যে অংশটা লাল চুল তৈরী করে, সেই সেগমেন্ট ঐ উইলমা-র জীনেও পাওয়া গেছে। উইলমার চেহারা রিকনস্ট্রাক্ট করা হয়েছে তার মাথার খুলি থেকে - মানুষ এবং এইপসদের মুখের কোন অংশে কতটুকু ফ্যাট, মাসল, কার্টিলেজ থাকে এসব কম্পেয়ার করে তাঁরা ঐ চেহারা তৈরী করেছেন - একদম ১০০% পার্ফেক্ট হবে না, তবে নিয়ার পার্ফেক্ট তো হবে।
প্যালিওলজিস্টরা একটা দু'টো ক্লু পেলে সেটাকেই তত্ব বানিয়ে ফেলেন না, অনেকগুলো ফ্যাক্টর যাচাইবাছাই করে তারপর একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হন। যেমন আমরা জানি নিয়ান্ডার্থালরা বেঁটে কিন্তু খুব গাট্টাগোট্টা ছিলো, প্রচন্ড শক্তি ধরতো শরীরে। এটা গবেষকরা কিভাবে বুঝলেন? প্রথমে হয়তো নিয়ান্ডার্থাল বোনস এ্যানালাইসিস করে দেখলেন ওদের হাড়গুলো লম্বায় ছোটো হলেও (আধুনিক মানুষের তুলনায়) সাইযে বড়, ক্যালশিউয়াম ডিপোজিট বেশি অর্থাৎ অনেক ঘন এবং ভারী। তারপর হয়তো আধুনিক মানুষের কংকালের সাথে তুলনা করে কম্পিউটার সিমুলেশণের মাধ্যমে হিসাব করে তাঁরা বের করলেন অমুক ধরণের ভারী হাড় নিয়ে দৌড়াদৌড়ি, শিকারে যাওয়ার জন্য নূন্যতম তমুক পরিমাণ মাসলম্যাস থাকতে হবে নিয়ান্ডার্থাল শরীরে। গবেষকদের আরেকটি গ্রুপ হয়তো দাঁত নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আবিষ্কার করলো নিয়ান্ডার্থালরা মূলত: মাংশাষী ছিলো। এটা আমাদের গবেষকদের সাথে মিলে গেলো, এতভারী কংকাল সাপোর্ট করতে হলে ম্যাসিভ এ্যামাউনটের মাসলপাওয়ার লাগবে, আর এই বিরাট পরিমাণ মাসলম্যাস ফলমূল খেয়ে আসবে না, এর জন্য হাই-প্রোটিন ডায়েট দরকার। এরকম বিভিন্ন রিলেটেড সাইন্স বায়োফিজিক্স, এ্যানাটমী, জেনেটিক্স, জিওলজী ইত্যাদি ফিল্ডে অগ্রগতির সম্মিলিত ফল হলো আধুনিক সািন্টিফিক ফাইন্ডিংস গুলো। শুধু দুইচারটা হাড় দেখেই কেউ বলেন না যে অমুক প্রজাতির মেয়েটা দেখতে ঐশ্বরিয়ার মত ছিলো, বা ছেলেটা দেড় ব্যাটারী সুজন।
সম্ভবত: এই বছরের প্রথম দিকে একটি এক্সাইটিং নিউজ পড়েছিলাম। সাইবেরিয়ার বরফের নীচে প্রায় অবিকৃত একটি ফ্রোযেন ক্রো-ম্যাগনন লাশ আবিষ্কৃত হয়েছে। সাইন্টিস্টরা খুবই উত্তেজিত ছিলেন - বরফে জমে থাকার কারণে লাশের শরীরে রক্ত পাওয়া গেছে। এতদিন তাদের শুধু শুকনো কংকাল নিয়ে কাজ করতে হতো, এই প্রথম এমন ফ্যান্টাস্টিকলী প্রিজার্ভড স্পেসিমেন আমাদের হাতে এসেছে! এটা যেন মিনি টাইমমেশিন! এই লাশ থেকে আরো অনেক তথ্য জানা যাবে।
আরণ্যক লিখেছেন:এই ফসিল তো প্রমাণ করে না। এটাকে খুব সহজে বানরের পূর্ব পুরুষ বলা যায়। মানুষের বলে দাবি করতে পারা যায় কিন্তু প্রমাণ না। আমি কি খুব ভুল বললাম?
তা হয়তো ১০০% প্রমাণ করে না, but this is the best evidence that we have, for now. তবে এই সাইন্সটা তো মাত্র জন্ম নিলো - ডারউইনের থিওরী পাবলিশ হয়েছিলো ১৫০ বছর আগে। জেনেটিক্স, কম্পিউটার এইডেড রিসার্চ ইত্যাদি তো ৫০ বছর আগেও ছিলো না। বলতে পারেন রিসার্চের গাড়ীটি সবে মাত্র চলা শুরু করেছে। ০ থেকে ৬০ মাত্র রওনা হলাম, আগে কি আছে দেখা যাক না?
হয়তো এটাই এক সময় সত্য বলে প্রমাণিত হবে বা এর চেয়ে অনেক ভাল কোন হাইপোথিসিস আবিষ্কৃত হবে। যেমন এরিস্টটল (ভুল হলো কি?) এর মতবাদ দ্বারা হাজার বছর ধরে বিজ্ঞান বলেছিল মস্তিষ্ক রক্ত পাম্প করে। বিকল্প না থাকায় হাজার বছর ধরে মানুষ কিন্তু তা মেনেও নিয়েছিল। তখন সেটাই ছিল বিজ্ঞানের সত্য। আর আজ এটা হাস্যকর কথা ছাড়া আর কিছুই নয়
আপনার সাথে একমত - পুরণো হাইপোথিসিস বাতিল করে তার জায়গা নিয়ে নিচ্ছে আরো ভালো এবং সলিড কোনো হাইপোথিসিস। তবে এখন সাইন্স যে ম্যাচুর স্টেজে পৌঁছে গেছে, আগের থিওরী পুরোপুরি ভুল হবার ঘটনা কমে যাচ্ছে। এখন পুরোণোটাকেই আরো ফাইন-টিউনিং, যোগ বিয়োগ করে পরিশীলিত করার ঘটনা বেশি হচ্ছে। এখন রিসার্চ কোয়ালিটি কন্ট্রোল অনেক উচুঁতে উঠে গেছে। পুরণো যে থিওরীটি ছিলো সেটা কোনো না কোনো শক্ত ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত ছিলো, নতুন যে রিফাইনমেন্ট আসছে তা আগের চাইতেও স্ট্রিনজেন্ট কন্ট্রোলের ফলে বেরিয়ে আসছে।
তবে আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে এ্যারিস্টোটল, সক্রেটিসের ফিলোসফী মিলিয়ে ফেললে বিরাট ভুল হবে। এ্যারিস্টটলের হাইপোথিসিস ছিলো পিওর গেসওয়ার্ক - তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেন নি। এখন তো সেরকম নেই। কোনো তত্ব দিতে হলে আপনাকে এম্পিরিকাল এভিডেন্স খাড়া করতে হবে। প্রমাণ নাই তো, আপনার তত্বও স্ট্রেট আস্তাকুঁড়ে। এখন নিউরোসাইন্স, ফাংশনাল এমআরআই-এর কল্যাণে ব্রেনের প্রতিটি মিলিমিটার সম্পর্কে আমরা জানছি। ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপী, বায়োফিজিক্স, বায়োকেমিস্ট্রি ইত্যাদির দ্বারা আমরা নিউরন, এ্যাক্সন কিভাবে কাজ করে তা জানছি। ম্যাক্রো ও মাইক্রো লেভেলের সবকিছুই আমাদের সামনে উন্মোচিৎ হয়ে পড়ছে।
ঈশ্বর সম্পর্কিত টপিকে নিউরোসাইন্স প্রসঙগ চলে এলো বিধায় কিছু অফটপিক:
জেনেটিসিস্ট ডীন হামের পেয়েছেন "দ্যা গড জীন" - এই বিতর্কিত হাইপোথিসিস মতে একটি মানুষ কতটুকু স্পিরিচুয়াল হবে জন্মের সময়ই তা নির্ধারণ করে দেয় VMAT2 জীন।
নিউইয়র্ক নিউরোসার্জন ড: ক্যাপোজিয়ানী উন্মোচিৎ করেছেন দ্যা গড ব্রেইন - মানব মস্তিষ্কের কোন কোন অন্চলে ঈশ্বরের বসতবাড়ি তাঁর গ্রুপ সেগুলো ম্যাপিং করে ফেলেছেন।
ক্যানাডার নিউরোসাইন্টিস্ট ড: মাইকেল পার্সিংগার তৈরী করেছেন দ্যা গড হেলমেট - এই হেলমেট পরিয়ে দিলে প্রচন্ড স্কেপটিকরাও "সুপারন্যাচারাল অস্তিত্ব অনুভব" করেন (রিচার্ড ডকিন্স বাদে - এই বুড়ার উপর খোদকারী হেলমেট প্রায় কোনো ইফেক্ট ফেলতে পারেনি
ডকিন্সের "রূট অব অল ইভিল" ডকুতে এ ব্যাপারে পাবেন)। আর কিছুদিন পরে হয়তো বেডরুমে শুয়ে সুইচ টিপেই আপনি ঈশ্বর-অনুভুতি জেনারেট করতে পারবেন।
এসব পাইয়োনীয়ারদের হাত ধরে একটি নতুন সাইন্স ভূমিষ্ঠ হবো-হচ্ছি করছে - নিউরোথিওজী: নিউরোসাইন্স মীটস থিওলজি। যাকগে, এটা নিয়ে পরে একসময় আলোচনা করা যাবে।
বিজ্ঞানের একটা মজার বিষয়, এখানে সত্য খুবই আপেক্ষিক। এই যে হকিংন্স সাহেবের কথাই ধরেন- এক সময় ঈশ্বর আছে বলে চেচাতেন আর এখন নাই বলে। দুটোর পিছনেই উনার অনেক যুক্তি। আবার ঈশ্বরের কণা আবিষ্কারে যে ডেড লাইন ছিল সে সময়ে যদি তা প্রমাণ করতে না পারা যেত। তাহলে এই হাইপোথিসিস মিথ্যা বলে ধরে নেয়া হত। সকল সুত্র নতুন ভাবে লেখার চিন্তা ভাবনা চলত। কিন্তু এতে সত্যের কিন্তু পরিবর্তন ঘটত না। সত্য এটাই থাকত যে ঈশ্বরের কণা আছে। শুধু আমরা বুঝতে পারিনি।
সহমত, হিগস বোসন ফলস প্রমাণিত হলে সারা ফিজিক্স জগৎে দাবানল লেগে যেত!
না, হকিন্স, আইনস্টাইন কখনোই ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন না। তবে তাঁরা দু'জনেই ওয়ার্ডপ্লে করতে পছন্দ করেন। "গড ডাযন'ট প্লে ডাইস", "নোয়িং দ্যা মাইন্ড অব গড" ইত্যাদি উক্তি নিছক শব্দের কারুকাজ। ডগমাটিক ক্যাথোলিক খৃস্টান ইভান্জেলিকসরা ঐ দু'চারটে বাক্য আউট অব কনটেক্সট নিয়ে লাফালাফি করে। কিন্তু এদের পুরো বক্তব্যটি যদি সামগ্রিকভাবে নেন, তাহলে দেখবেন ঈশ্বর শব্দটি তাঁরা নিতান্তই ডেকোরেশন হিসাবে ব্যবহার করেছেন। ডকিন্সের গড ডিল্যুশন বইয়ে এ কারণে আইনস্টাইন, হকিন্সকে মৃদু ঝাড়ি দিয়েছে। 
এ্যাস্ট্রো-ফিজিক্স বাদ দেই, হকিন্সের ঈশ্বরের উপরে চেতার যথেষ্ট পার্সোনাল কারণ আছে। তিনি তো খুব অল্প বয়স থেকেই চলৎশক্তিহীন চালকুমড়া। তাঁকে বাচিয়ে রেখেছে মেডিকাল সাইন্স, গবেষণা চালিয়ে যাবার সুযোগ দিয়েছে কম্পিউটার সাইন্স - এ দু'টোর কোনোটাই বাইবেলের পাতা থেকে উঠে আসে নি। আরো পন্চাশ বছর আগে তিনি যদি জন্ম নিতেন, ২৫ বছরের বার্থডে কেক কাটার সৌভাগ্য হতো না। তাঁর হিসাব সোজা: গড ওয়ান্টস হিম ডেড, টেকনোলজী ইন্টারফেয়ারস। 
আইনস্টাইন পুরোপুরি নাস্তিক ছিলেন কি না জানি না। তিনি বারুচ স্পিনোযার প্যানথেইজমে হয়তো প্রভাবিত ছিলেন।
ওয়েস্টার্ণ ওয়ার্লডের সবচাইতে মৌলবাদী দেশ হচ্ছে আমেরিকা। অবাক হবেন না, আমেরিকার অবস্থান তুরস্কের ঠিক আগে। ৮০%-এরও বেশি আমেরিকান খৃস্টান ধর্ম-উপধর্মে বিশ্বাসী। তবে তাদের সাইন্স কমিউনিটিতে উল্টো চিত্র। ফোরামে অন্য কোনো টপিকে স্ট্যাটিস্টিক্সটা দিয়েছিলাম কিছুদিন আগে - ইউএস ন্যাশনাল এ্যাকাডেমী অব সাইন্স কয়েক হাজার গবেষকের উপর জরিপ চালিয়ে থাকে। (এক্সাক্ট ফিগার মনে নাই) ১৯৯৯ সালে ৭০% গবেষক "ইররিলিজন" গ্রুপে ছিলেন, ২০০৮ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮৩%-এ! মাত্র এক দশকে কি অবনতি হয়েছে! 
তবে এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন: "ইররিলিজিয়ন" একটা ব্রড গ্রুপ: এর মধ্যে "নো-রিলিজয়ন "(আস্তিক, কিন্তু কোনো অর্গানাইযড ধর্ম মানেন না) আছে, পাড় নাস্তিক আছে, আর এ্যাগনোস্টিকরাও আছে।
যাক আমি একেবাবরে ভুল ভাবিনি।
আচ্ছা ৪ হাজার বছরের কথা কারা বলেন?
এটা বলে ইয়ং আর্থ ক্রিয়েশনিস্টরা। ঘটনা বেশ মজার। ১৫০০ শতাব্দীতে আর্চবিশপ জেমস আশার বছরের পর বছর বাইবলের জেনেসিস "গবেষণা" করে নবী পয়গম্বরদের বয়স যোগ বিয়োগ করে উপনীত হোন ঠিক ৪ হাজার বছর আগে, খৃ:পূর্ব ৪০০৪ সালের ৪ঠা অক্টোবর আনুমানিক সকাল ৯ ঘটিকায় মহাপ্রভূ জগৎ সৃষ্টি করেছিলেন। এই তত্ব প্রায় ৫০০ বছর টিকে ছিলো। পরে আরেক স্প্যানিশ বাইবেলমাস্টার এসে আর্চবিশপ জেমস-কে অংকে গোল্লা দিয়ে দেন। বিশপ নাকি ২০০০ বছর মিসক্যালকুলেট করেছিলেন - অতএব নতুন হাইপোথিসিসে পৃথিবীর বয়স ধরা হয় ৬০০০ বছর। পরে আবার ডাইনোসর, ফসিলস ইত্যাদি শয়তানের স্পেসিমেন আবিষ্কারের পরে এই হাইপোথিসিসও রিভাইজ করার প্রয়োজন পড়ে যায়। বর্তমানে মনে হয় পৃথিবীর বয়স তারা বেধে দিয়েছেন ১০,০০০ বছরের বেশি। ইশ শিরে, মাত্র ৫০০ বছরের ব্যবধানে কুমারী পৃথিবীটাকে বুড়ী বানিয়ে ছাড়লো! 
যাকগে, ধার্মিক তো হলো। অধার্মিকদের মতে পৃথিবীর বয়স কত? সবজান্তা মামাকে প্রশ্ন করাতে সে এই উত্তর দিলো:

৪.৫ বিলিয়ন বছর একজন দুইজন জিওলজী মাস্টার নির্ণয় করেন নি। বিভিন্ন ফিল্ড থেকে করোবরেটিং এভিডেন্সের ভিত্তিতে সাইন্টিস্টদের কমিটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলো। রেডিওমেট্রিক ডেটিং, কন্টিনেন্টাল ডৃফট, বিগ ব্যাং কসমোলজী ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে তাঁরা বর্তমান ফিগারটি নির্ণয় করেছেন। তবে এটাও ফিক্সড নয়, ভবিষ্যৎে সাইন্স আরো উন্নত হলে এটাও ফাইন টিউনড হবে।
ফারহান খান লিখেছেন:আমার একটা প্রশ্ন
বিবর্তনবাদ বলছে অনেক কিছুর বিবর্তনের ফলাফল আজকের আমরা। আজকের আমরা থেকে ভবিষ্যতে নতুন কিছু কি আসবে না? এতদিন ধরে এতোগুলো ধাপ পেরিয়ে বিবর্তন এসে হোমসেপিয়ান্স এ কি আটকে গেছে ?
না আটকে নাই। হোমসেপিয়ান্স বিবর্তনও এগিয়ে চলেছে, শুধু এগিয়ে চলেছেই না - দিনে দিনে এক্সেলারেট করছে। আধুনিক প্রজন্ম আগের চাইতে ফাস্টার গতিতে নতুন জেনেটিক ট্রেইটস, সার্ভাইভাল ট্যালেন্টস পিকআপ করছে। এটা হচ্ছে বর্তমানের কম্পিটিটিভ বিশ্ব অবস্থার কারণে।
২০ হাজার বছর আগে যে মানুষ ছিলো, তাদের সাথে আমাদের (ডিজ্যুস জেনারেশন) মিল সামান্যই, বরং ওদের সাথে নিয়ান্ডার্থালদের সাদৃশ্য বেশি ছিলো। এখন বলা হচ্ছে গত ১০,০০০ বছর আগের তুলনায় মানুষের কোষে জেনেটিক মিউটেশনের হার ১০০ গুণ বেড়ে গিয়েছে।
একটি প্র্যাক্টিকাল উদাহরণ দেই - ১০,০০০ বছর আগে শিকারী, নোমাডিক হোমোস্যাপিয়েন্স মাত্র সেটল হয়ে কৃষিকাজ, পশুপালন করা শুরু করেছে। গরূর দুধে ল্যাকটোজ থাকে, এই কঠিন প্রোটীন হজম করার জন্য কিছু এনজাইম দরকার যেগুলো তখন মানুষের শরীরে ছিলো না, ফলে শারীরিক অসুবিধা হতো। ধীরে ধীরে অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে - জেনেটিক মিউটেশনের মাধ্যমে ঐ ক্ষমতাও মানুষ আয়ত্ত করেছে। এখন ৯৫%-এর মানুষের মধ্যে এই জীনটি আছে - ল্যাক্টোজ আমরা হজম করতে পারি। বাকি ৫% মানুষ এখনো ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সে ভোগেন (আপনার আত্মীয়স্বজনদের মাঝে খোঁজ করলে পেয়ে যেতে পারেন এমন দু-একজনকে)।
তবে হ্যাঁ, আমাদের পৃথিবী যত দ্রুত চেন্জ হচ্ছে, বায়োলজিকাল এভুলুশন তার সাথে তাল মেলাতে পারছে না, অনেক পিছিয়ে। যেমন ডায়াবিটিস, ওবেসিটি এখন মহামারী - এটা হয়েছে শুধু মাত্র আমাদের কার্বোহাইড্রেট ডায়েটের কারণে। আদিম মানুষ হাইপ্রোটিন ডায়েট খেতো, কার্ব আসতো শুধু ফলমূল থেকে, বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের প্রচুর কায়িক পরিশ্রম করতে হতো।
কিন্তু প্রোটিন ম্যানুফেকচার করা খুবই এক্সপেনসিভ - প্রোটিন-বেজড ডায়েট দিয়ে আমাদের মত এত বিরাট পপুলেশন সাসটেন করা একদমই অসম্ভব, আমাদের কোনো টেকনোলজীই এটা করতে পারবে না। তাই প্রোটিন রিপ্লেস করে আমরা চলে গেছি কার্বে - কার্ব ফুড তৈরী করা বেশ ইনএক্সপেনসিভ এবং মোটামুটি পৃথিবীর সর্বত্র ফলানো যায়। আর এদিকে আমাদের কায়িক শ্রম ড্রাস্টিকালী কমে গেছে। এখন কল ঘোরালেই পানি, দোকানে পকেট উল্টালেই রেডীমেড ফাস্টফুড। আমাদের পারিপার্শ্বিক খুব র্যাপিডলী চেন্জ হয়ে গেছে, কিন্তু জেনেটিক কলকব্জা রয়ে গেছে ৫-১০ হাজার বছরের পুরণো অবস্থায়। ঐ সময়কার পরিবেশের জন্য যে জীনগুলো কাজে লাগতো, ওরাই এখন পরিবর্তিত লাইফস্টাইলের কারণে ডায়াবিটিসের মত ভেজাল লাগাচ্ছে। জেনেটিক মিউটেশন খুব স্লো। হয়তো দূর ভবিষ্যৎে একদিন ডায়াবিটিস অতীত হয়ে যাবে। ওয়াল-ঈ এ্যানিমেশন মুভিটা দেখতে পারেন...
এ দু'টো উদাহরণ চোখের সামনেই ঘটছে - বিবর্তনের রিয়েল-লাইফ আর্টিফ্যাক্ট। জেনেসিস-এর ৬+১ দিনের বিবলিকাল সৃষ্টিগল্প দিয়ে এসব ব্যাখ্যা করা কঠিন।
আহমাদ মুজতবা লিখেছেন:বস থিইজম আর ডিইজমের ডিসটিংগুইশ টা কি এখান থেকেই হলো।
যে একদল বলে যে সৃষ্টি করে আমাদের সব এফ্যেয়ারে জড়িয়ে আছেন আর আরেক দল যারা কিনা ইভ্যুলুশন বিশ্বাস করেন আবার ওদিকে ডিইস্ট তারা ভাবেন যে শুধু ইউনিভার্সের বিস্ফোরন ঘটিয়েই তিনি থেমে গেছেন বাকি সব ছবির মতো হয়েছে। যেই মুভির খুব ভালো একজন ডেডিকেটেড দর্শক আছে উইথ এন আনডিভাইডেড এটেনশন ?
পার্থক্য নিয়ে কিছু ব্যাখ্যা চাই এই দুইয়ের
আর সত্যিই যদি অনটোলজিক্যল কোনো এক্সপ্ল্যনেশন না থাকে তাহলে তো এগনস্টিজম সবচেয়ে ভালো 
ডিইজম মনে হয় বাতিল হয়ে গেছে। রোমান ক্যাথলিক চার্চের পীড়ণে কিছু ভিক্টোরিয়ান এলীট ক্লাস গোপনে এই ধারণা চালু করেছিলো। ডেইজম তৈরী হয়েছিলো গেস্টাপো চার্চের অতিরিক্ত ওরওয়েলিয়ান কন্ট্রোলের রিএ্যাক্সন হিসাবে। চার্চের প্রভাব কমে যাওয়ায় এখন আর তেমন কেউ এ নিয়ে মাথা ঘামায় বলে মনে হয় না।
থিইজম আর ডেইজম - এক জায়গায় একমত: ঈশ্বর আছেন। পার্থক্য একটাতেই - থিইস্টরা, হিচেন্সের ভাষায়: "ডিভাইন নর্থ কোরিয়া"-র অধিবাসী। আপনি কি খাবেন না খাবেন, বিছানায় (এমনকি বাথরুমেও) কি করবেন না করবেন - সবই বিগ বস তদারকি করবেন। এমন কি মরার পরেও হাইল কিম-জং-ঈল-ইন-দ্যা-স্কাই-এর হাত থেকে নিস্তার নাই, সেখানে আবার আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথে সব চালু হবে।
ডিইস্ট গড এত তদারকির ঝামেলায় নাই। নিউইয়র্কের কোন বরোতে কোন মুজতবা কি খাচ্ছে পড়ছে তা নিয়ে তিনি বিন্দুমাত্র চিন্তিত না, ইন ফ্যাক্ট মুজতবার অস্তিত্ব সম্পর্কেই ডিইস্ট গড অবগত না। সৃষ্টিটা তিনিই করে দিয়েছিলেন। দেন হি হ্যায মুভড অন।
এ্যাগনোস্টিকরা ডিইস্টদের মতই - তবে এদের ইকোয়েশনে গড নামক এলিমেন্টটি থাকা বান্ছনীয় না। এ্যাগনোস্টিকদের হিসাব: গড থাকলেও থাকতে পারেন, আবার নাও থাকতে পারেন। থাকলে তিনি ডিইস্ট টাইপের ঈশ্বর, আর না থাকলে তো নাই-ই। আর এরা এটাও মনে করে - মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব কোনোটাই প্রমাণ সম্ভব না।
এ্যাথিইস্টরা হার্ডকোর এ্যান্টি-থিইস্ট: এদের ক্যালকুলাসে ঈশ্বর নামক কোনো ভ্যারিয়েবলই নাই।
ভাইরে একেবারে কঠিন জায়গায় হাত দিছেন - অন্টোলজিকাল আর্গুমেন্ট আমি বুঝি না। আলভিন প্লান্টিংগার ২/১টা লেখা পড়েছিলাম - খুব কনভিন্সিং কিছু মনে হয় নাই। আর দেকার্ত, লাইবনিৎস - এদের লেখায় তো দাঁতই বসানো যায় না।
বেশিরভাগ লজিকই মাথার উপর দিয়ে গেছে। এটা বেশ জটিল সাবজেক্ট - নাড়াচাড়া করতে খুব একটা উৎসাহ (পড়েন সাহস) পাইনা। 
Calm... like a bomb.