টপিকঃ বিশ্বাস
গল্পটা ১০ দিনে একটু একটু করে লিখা, লিখতে তাই খুব একটা কষ্ট হয়নি। আমি একদিনে খুব বেশি লিখতে পারিনা, বুকের উপর খুব চাপ পড়ে। প্রজন্মের সবাই আমার প্রতি যে মায়া দেখিয়েছেন, সেজন্য আমি সবার প্রতি দায়বদ্ধ, সেখান থেকেই অসুস্থতার মাঝেই এই লিখাটা লিখলাম। তাছাড়া সারাদিন বিছানায় শুয়েই থাকি, নানারকম চিন্তা-ভাবনা করে সময় কাটাই, অনেক গল্পের প্লট মাথায় ঘোরে, ভাবলাম লিখে ফেলি। মানুষ আমরা কেউই থাকব না, কিন্তু আমাদের স্মৃতি থাকবে। গতানুগতিক ছোটখাটো কমেন্ট না করে গল্পের কোন অংশ ভাল লেগেছে সেটা বলবেন আশা করি। এরকম ঘটনা আপনার জীবনে হলে কেমন হত তাও বলবেন প্লিজ। সবাই ভাল থাকবেন: স্বপ্নীল
এই হচ্ছে দুলাভাইয়ের সেই সুন্দর মেয়ে?? কিন্তু মেয়ে তো কালো, চোখগুলো কেমন নিষ্প্রাণ, নাক থ্যাবড়া আর মোটা ঠোট, কেমন যেন মুখটাও পেচার মত করে রেখেছে। আমি হতাশ হয়ে মাথা নাড়লাম। মাকে তারা পাশের ঘরে নিয়ে গেলো দেখে আমি আরো হতাশ হলাম। কখন এখান থেকে যাব অস্থির হয়ে গেলাম। বসে বসে কিছুক্ষণ পরপর দুলাভাইয়ের ১৬ দু গোনা ৩২ গুষ্ঠী উদ্ধার করতে লাগলাম।
লেখাটি লিখেছেন: স্বপ্নীল - প্রজন্ম ফোরাম
-মা, আবার আসবেন।
শুনে আমি পিছনে তাকিয়ে চমকে উঠলাম। এ কোন মেয়ে?? এ কি সেই একই মেয়ে? কি অদ্ভুত মায়া কাড়া চেহারা!! শ্যামলা চেহারার আশ্চর্য শান্ত দুটি চোখ, হাসছে। আমি চোখের পলক ফেলতে পারছি না।
যেতে যেতে মা বললেন: ভিতরে গিয়ে তিনি যখন বললেন: মা এদিকে এসো,
তখন নাকি মেয়েটি (নাম শান্তা) মাকে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরেছে, আমার মাকে নাকি তার খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু মেয়েটি সামনের বছর এইচ,এস,সি দেবে, তাই আগামী এক বছর কোনভাবেই বিয়ে করতে রাজি নয়। এজন্যই সেসময় এমন মুখ গোমড়া করে ছিল।
লেখাটি লিখেছেন: স্বপ্নীল - প্রজন্ম ফোরাম
আমি বাসায় ফিরে জলদি শিমু আপাকে ফোন করলাম
-গাধা, আমাকে ফোন করেছিস কেনো? তোর বোনদের বল্।
- আপু, তুমি এটা একটা কথা বললা? তুমি জানোনা আমার বোনদের থেকেও তোমাকে আমি কত বেশি গুরুত্ব দেই?? আমার সুইট আপু একটা কিছু করো প্লিজ!
শিমু আপু খুব খুশি হল, বলল:
-আচ্ছা আচ্ছা দেখি কি করা যায়। তোর বোনরা তো গাধা, বললেও লাভ নাই, আমিই তোর এক মাত্র ভরসা যখন.........
আমি মনে মনে নিশ্চিন্ত বোধ করলাম। শিমু আপু একটা কিছু করবেই। শিমু আপু শান্তার চাচাতো বোন মিলির সাথে কথা বলিয়ে দিল। সে জানালো শান্তা খুব জেদি। সে বিয়ে করবে না এখন। তবে দামী গিফটের বিনিময়ে সে শান্তার সাথে দেখা করিয়ে দেবার ব্যবস্থা করল, কিন্তু মাত্র এক ঘন্টার জন্য।
লেখাটি লিখেছেন: স্বপ্নীল - প্রজন্ম ফোরাম
-শুনেন, মাত্র এক ঘন্টা সময়, বহু কষ্টে রাজি করিয়েছি, এর মাঝেই ওকে আপনার প্রতি ইমপ্রেস করুন, রাজি করান।
- আরে মাত্র এক ঘন্টায় কিভাবে ইমপ্রেস করব? কি বলছ এসব?
- আমি জানি না কিভাবে করবেন। সেটা আপনার ব্যাপার।
-তাহলো বলো কিভাবে বুঝব যে সে রাজি হয়েছে?
-উমম..
কিছুক্ষণ ভেবে...
- পেয়েছি..যদি তাকে আপনার হাত ধরাতে পারেন, তবে বুঝবেন যে সে রাজি হয়েছে। গুড লাক।
- কিন্তু হাত ধরাবো কিভাবে?
- আমি জানি না......... ..
বলেই আমাকে চিন্তার অথৈ সাগরে একা ফেলে সে ফোন কেটে দিলো।
বিকাল ৪টায় এমসি কলেজ পুকুর পাড়ে শান্তার সাথে দেখা হলো, পাশাপাশি বসলাম ঝাল মুড়ি মিক্সড উইথ চানাচুর নিয়ে। টুকটাক আলাপ শুরু হলো। হালকা বাতাস বইতে শুরু করল, বেশ রোমান্টিক পরিবেশ, মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলাম।
লেখাটি লিখেছেন: স্বপ্নীল - প্রজন্ম ফোরাম
শান্তাকে বেশ কয়েকটা মজার ঘটনা শুনালাম, বেশ কিছু প্রশ্ন করে তাকে আমার সাথে সহজ করে তুললাম, তার নিজের বেশ কিছু কথা শুনলাম। পুরোটা সময় সে মাঝে মাঝে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল, মাঝে মাঝে বেশ অবাক হলো, মাঝে মাঝে চুপচাপ শুনতে লাগল। যাক, তাকে কিছুটা হলেও ইমপ্রেস করতে পেরেছি। এক ঘন্টা হতে আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি।
-আপনাকে জীবনসংগী হিসেবে পাবার খুব ইচ্ছা ছিল। মাও আপনাকে ভীষণ পছন্দ করেছে।
-(কিছুক্ষণ যেন ভাবল) আসলে আমার পড়াশোনাটা আগে শেষ করবার ইচ্ছা।
-হুম..। আচ্ছা কিছু সময়ের জন্য কি আমরা কল্পনা করে নিতে পারি যে আপনি রাজি, আমি আপনার জীবনসংগী হতে যাচ্ছি?
- হাহাহা..ছেলেমানুষি কেন করছেন?
- আহা একটু করিই না..আর তো দেখা হবে না।
শান্তা আমার বিষন্ন মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল: আচ্ছা, ধরে নিলাম।
-এখন কল্পনা করুন, আমি আপনার জীবনসংগী হলে কি কি ঘটত।
শান্তা কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে ভেবে হেসে উঠল। আমি বললাম:
- জীবনসংগীর মাঝে মেয়েরা কোন জিনিসটা সবার প্রথমে চায় বলুন তো?
- বলতে পারছি না।
- জীবনসংগীর মাঝে মেয়েরা সবার আগে চায় বিশ্বাস, সে যেন এমন একজন মানুষ পায় যাকে সে বিশ্বাস করতে পারে।
শান্তা হাসলো, আশ্চর্য, মানুষের হাসি এত সুন্দর হয়!!
লেখাটি লিখেছেন: স্বপ্নীল - প্রজন্ম ফোরাম
-আমি যেহেতু আপনার জীবনসংগী হতে যাচ্ছি, আমার হাত ধরুন।
আমি হাত বাড়িয়ে দিলাম। শান্তা কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল, ধরল না।
-এর মানে কি জানেন? আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। আপনি বিশ্বাস করতেন যদি...
-যদি???
-যদি এরকম নির্জন জায়গায় হঠাৎ একটা বখাটে ছেলে ধারালো লম্বা ছোড়া হাতে আপনাকে ধরতে আসত, আর আমি তাকে ঝাপটে ধরে আটকে রেখে আপনাকে চিৎকার করে পালিয়ে যেতে বলতাম। আপনি দৌড়ে যেতে যেতে কাঁদতে কাঁদতে প্রার্থণা করতেন: "আল্লাহ, তুমি এই মানুষটাকে বাঁচাও, প্লিজ, প্লিজ।" হয়ত ছেলেটা ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমার পেটে ছোড়া ঢুকিয়ে দিত। আমি হয়ত বেঁচে থাকতাম না, কিন্তু তখন আপনার আমার প্রতি বিশ্বাস জন্মে যেত, মনে হত: এই মানুষটার চেয়ে কেউ আপনাকে বেশি ভালবাসবে না।
-প্লিজ, স্টপ ইট, প্লিজ...
শান্তা চিৎকার করে উঠলো।
দ্রুত হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমার মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। হাত না ধরলে মনে হয় কেঁদেই ফেলবে।
এরকম খুব মায়া কাড়া চেহারার অপরিসীম মায়াবতী একটা মেয়েকে কাঁদিয়ে দেয়াটা বোধহয় ঠিক হবে না। আপনারা কি বলেন?
অবাক চাঁদের আলোয় দেখো
ভেসে যায় আমাদের পৃথিবী
আড়াল হতে দেখেছি তোমার
নিষ্পাপ মুখখানি......তোমার চিরচেনা পথের ঐ সীমা ছাড়িয়ে
এই প্রেম বুকে ধরে আমি হয়তো যাবো হারিয়ে
চোখের গভীরে তবু মিছে ইচ্ছে জড়িয়ে
একবার শুধু একটিবার হাতটা দাও বাড়িয়ে
ডাকবেনা তুমি আমায় জানি কোনোদিন
তবু প্রার্থনা তোমার জন্য হবেনা মলিন
হবেনা মলিন……ডুবেছি আমি তোমার চোখের অনন্ত মায়ায়
বুঝিনি কভু সেই মায়াতো আমার তরে নয়
ভুলগুলো জমিয়ে রেখে বুকের মণিকোঠায়
আপন মনের আড়াল থেকে......ভালবাসবো তোমায়
ভালবাসবো তোমায়......
গানের নাম: চির অধরা ( মিফতাহ্ জামান)
অ্যালবামঃ শুধু তোমাকে
বাংলা লিরিকসের সূত্র: http://lyricsbanglasong.wordpress.com/2 … hu-tomake/