টপিকঃ যুবকের ‘আরব্য কন্যা’ দর্শন
সৌদি আরবে পৌঁছে প্রথম কয়দিন যুবকের আরবি ভাষার মাঝে বাংলায় ব্যবহৃত শব্দগুলো আবিষ্কারের আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে ভালই কাটছিল। জানতে পারল কবিরা গুণাহর ‘কবিরা’ পাপ-ভর্তি এমন কোন সাংঘাতিক শব্দ নয়। এর অর্থ ‘বড়’। আর ছোট হল ‘ছগিরা’। অর্থাত বড় গুণাহ আর ছোট গুণাহ। দুটো মাছ ধরলে অপেক্ষাকৃত বড়টাকে বলা যাবে ছামাক আল-কাবির আর অন্যটাকে ছামাক আল-ছগির।
জমিলা নাম্নী একটা মিশমিশে কালো মহিলা কাজ করত ওদের বাড়ীতে। কিন্তু আরবিতে জামিলা হলোগে সুন্দরী। একটি মেয়েকে ‘এন্তি জামিলা’ বললে সে কমপ্লিমেন্ট হিসেবেই নেবে এদেশে। ঠোঁটস্হ করে ফেলে যুবক শব্দটা। দেশে ফিরে একেকজনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে হবে।
বোনের বান্ধবী নাজমা, যার সাথে যুবকের এক ধরণের টক-ঝাল-মিষ্টির সম্পর্ক, ওই শব্দটিও আরবি, যার বাংলা ‘তারা’। এবার গিয়ে ‘তারা বেগম’ বলে ক্ষ্যাপাতে হবে, চেহারাটা যা হবে তার, শুধু ভেবেই দারুণ মজা পেল সে।
আরও জানল যুবক, শহরের স্মার্ট গাই ‘শামস’, যেটা একটা আরবি শব্দ, আর গই গেরামের ‘সুরুজ’ মিয়া, দুজনের নামই একই অর্থ বহন করে। প্রকারান্তরে, দুজনেই সুরুজ মিয়া।
এও জেনে গেল, দেশে অবস্থানকালে প্রেম করার ‘শখ’, এর ওর সাথে ‘নজর’এর আদান প্রদান, ‘ইশারা’য় কথা বলা কিংবা খোশগল্পে ‘মশগুল’ থাকা, সব হুবহু আরবি থেকে এসেছে।
দেশলব্দ্ধ সেই প্রেম করার ‘শখ’টা যে সৌদি আরবে এসে অব্যবহারে মরচে পড়ে যাবে, এই নিয়ে যুবকের হাহুতাশ চলে অন্তরের অন্তঃস্থলে। বোরখাবৃত ‘বানাত’দের অর্থাত কন্যাদের শুধু দেখা যায় দুটো চোখ। এই চোখের বিজাতীয় ভাষা পড়া শিখতেই হবে তার। সেই লক্ষে দ্বিগুণ উৎসাহে আরবি শেখায় মনোনিবেশ করে সে।
বোরখা অবশ্য সৌদি কন্যাদের দেশের বোরখাধারিণীদের মত পুটলি বানিয়ে ফেলে না। বোরখাকে কত কেতাদুরস্তভাবে পরে এরা, যুবক দেখে আর মোহিত হয়। সিল্কের বোরখা ওদের অবয়বের সৌন্দর্যকে আরো শাণিত করে তোলে, সে ধার শপিং মলে যেতে আসতে কেটে কেটে যায় যুবকের হৃদয়। জিন্স পরা বোরখাধারিণীরা সবচেয়ে উচাটন করে যুবকের পরবাসী মনটাকে। দেখার জন্য খোলা অংশটুকু দিয়ে পটলচেরা চোখ দুটো দেখেই নিশ্চিত করে বলা যায়, অসুন্দরকে আড়াল করে চলছে না ওরা। আর যুবক ভাবতে থাকে, ওই মুখগুলো কোনদিন বোরখাবিহীন দেখে রূপচ্ছটায় ভস্ম না হয়ে যেতে হয় এই আরব মুল্লুকে!
আগের পর্ব এখানে: http://forum.projanmo.com/topic30321.html