টপিকঃ কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৯ - অতিথি: এডমিন স্বপ্নচারী
পূর্বকথা: "কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল" একটি সাক্ষাৎকার নেয়ার সিরিজ। এখানে বিভিন্ন মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়ার চেষ্টা করা হয়। আজকেরটা পর্ব ৯। যারা এই সিরিজের আগের পর্বগুলো পড়েন নাই তারা নিচের লিংকে যেয়ে পড়ে নিতে পারেন :
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ১- অতিথি: সালেহ আহমদ
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ২- অতিথি: সমন্বয়ক শিপলু
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৩- অতিথি: ছবি আপু
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৪- অতিথি: আহমাদ মুজতবা
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৫ - অতিথি: রূপসী-রাক্ষসী
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৬ - অতিথি: jemsbond
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৭ - অতিথি: অন্তিক
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল (ঈদ স্পেশাল) : পর্ব ৮ - অতিথি: সমন্বয়ক উদাসীন
আজকের পর্ব কথা:
খুব অসুস্থতার মাঝেই নতুন একটা ইন্টারভিউ নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সামনে। এজন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ। আজকের অতিথি আমাদের প্রজন্মের এডমিন স্বপ্নচারী ভাই, ভাল নাম মুহাম্মদ নাসিমুল হক, প্রজন্মে অনেকদিন থেকেই মডারেশন করছেন, এখন এডমিনের দায়িত্বও পেয়েছেন। নাসিম ভাই বেশ বাস্তববাদী মানুষ, সত্য যত কটুই হোক, তিনি সেটা বলতে ভয় পান না, আবেগের মাঝে থেকেও তিনি যুক্তি অনুসারে কাজ করতে ভালবাসেন।
নাসিম ভাইয়ের সাথে পরিচয় ও সখ্যতা ধাঁধাঁরু নামক মজার ধাঁধাঁর সাইটের মাধ্যমে ২ বছর আগে। মূলত ধাঁধাঁরু এর যাত্রা শুরুর একদম প্রথমে আমরা ( আমি, নাসিম ভাই, শিপলু ভাই, তারেক ভাই, ত্বোহা ভাই) বেশ মজা করেই একের পর এক ধাঁধাঁর সমাধান করতাম, কমেন্টগুলো দারুন মজার ছিলো। নাসিম ভাই একজন গুরুজন, প্রজন্মে আমার একদম শুরুর সময়টা উনার মত একজন মানুষের সাপোর্ট পেয়ে এগিয়ে গেছে, উনি আমাকে বেশ স্নেহ করেন, উৎসাহ তো দিয়েছেনই সবসময় বিভিন্ন টপিকে, সেসব শ্রদ্ধাভরে সব সময় স্মরণ করি।
যাই হোক, নাসিম ভাইয়ের ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন অনেক কাটাছেড়া করা হয়েছে। অনেক সময় লেগেছে একেকটা প্রশ্ন তৈরি করতে, আমি চাচ্ছিলাম যেন সবগুলো প্রশ্ন যথাযথভাবে করা হয়। ইন্টারভিউ এর মাঝে আমার নিজের ছোট ছোট অনেক বাড়তি প্রশ্ন ছিল যেগুলো করা হয়েছে অতিথির উত্তরগুলো ডিটেইলড বের করে নিয়ে আসার জন্যে, তবে মূল টপিকে সেগুলো উল্লেখ করা হচ্ছেনা পুরো ইন্টারভিউটুকু সাজানোর সুবিধার্থে।
আমার ক্রমাগত তাগাদায় অবশেষে প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝে নাসিম ভাই অফিসের কাজ ফেলেই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, এজন্য আমি খুব সরি। আসলে অনেক সময় লেগে গেছে উনার পুরো ইন্টারভিউ শেষ করতে, প্রজন্মের সবার জন্য একটা দারুন ইন্টারভিউই বেড়িয়ে এসেছে উনার এই বড় স্যাক্রিফাইসটুকুর জন্য, আমি উনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। নাসিম ভাই এর ইন্টারভিউটুকু এক কথায় অসাধারন, সেটা আপনারা পড়লেই বুঝতে পারবেন। উনার অনেক বলা কথাই আমার চিন্তা-ভাবনার সাথে একদম মিলে গেছে।
তো চলুন দেখে নেই নাসিম ভাইয়ের সেই অসাধারণ ইন্টারভিউটুকু.............
ইন্টারভিউ
নাসিম ভাই, কেমন আছেন?
- খুব একটা ভাল নেই। দেশে ফিরে প্রচণ্ড রকমের হতাশ! অরাজকতা, মগের মুল্লুক ইত্যাদি কেবল বইয়ে পড়েছিলাম। আজ পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে স্বচক্ষে দেখছি। ভয়ঙ্কর অবস্থা চারিদিকে। ঢাকা শহরের রাস্তায় বের হতেই ভয় লাগে। গাড়ি-ঘোড়া চড়াতো দুরের কথা, হাঁটাও অসম্ভব হয়ে গেছে। যার যা খুশি করে বেড়াচ্ছে - কোনরকম সিস্টেম, প্রসেস নেই। মানুষের একে অপরের প্রতি ন্যুনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই। এখানে সবাই রাজা। রবি ঠাকুরের 'আমরা সবাই রাজা' গানটা শুনতে বেশ ভাল লাগে। কিন্তু বাস্তবে সবাই রাজা হয়ে গেলে স্রেফ জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠে।
মানুষ এখানে কিভাবে বেঁচে আছে, সেটাই বড় প্রশ্ন আমার কাছে! মানুষের আয়-ব্যয়ের হিসেবটাও আমি এখন মেলাতে পারছি না। এখানেই থামি - এসব নিয়ে বলতে গেলে দুইশ পৃষ্ঠার রচনা হয়ে যাবে। গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন জাতিকে এসব বলে কোন লাভও নেই। আমরা একেক সময় একেকটা ইস্যু পাই, দুই-তিন সপ্তাহ সেটা নিয়ে পত্রিকা-টিভি-ব্লগ গরম করি। তারপর বেমালুম ভুলে যাই।
হুম..আপনার কাছে জানতে চাইব: "কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল" সিরিজের সব ইন্টারভিউ কি আপনি পড়েছেন? এই সিরিজটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাচ্ছি।
- সবগুলো পড়া হয়নি সময়াভাবে। তবে বেশ কয়েকটা পড়েছি। ভাল লেগেছে।
আপনার নিক নেম "স্বপ্নচারী" নেবার পিছনের কাহিনীটুকু আমাদের একটু বলবেন?
- তেমন কোন কাহিনী নেই। সবসময়ই কিছু না কিছু করার ইচ্ছে ছিল সাধারণ জনগণ পর্যায়ে। গণিত পড়ে গবেষনা করে তো আর সরাসরি জনগণের কাছে যাওয়া যায় না। তাই পাশাপাশি কিছু করতে চাইছিলাম। সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতে এই নামের উদ্ভব। আর ওপেনসোর্স নিয়ে খুবই বড় স্বপ্ন আমার। বাকিটা নিচের প্রশ্নের উত্তরে দিলাম।
প্রজন্ম ফোরামের সাথে আপনার কখন, কিভাবে পরিচয়? প্রজন্মের মডারেশন ও এডমিনিস্ট্রেশন লেভেলেই বা কিভাবে সর্বপ্রথম যুক্ত হলেন?
- ইংল্যান্ডে যাওয়ার পর ক্রিকেট খেলা দেখতে পারছিলাম না। আমাদের ইনস্টিটিউটে স্কাই স্পোর্টস ছিল না। তাই গুগল করছিলাম ইন্টারনেটে কিভাবে দেখা যায়। বাংলাদেশের খেলা ছিল (কোনটা ঠিক মনে নাই)। তো গুগল সার্চে চলে এল 'প্রজন্ম ফোরাম'। সম্পূর্ণ বাংলায় ফোরাম দেখে তো আমার পুরো আক্কেল গুড়ুম। সবচেয়ে আশ্চর্য হয়েছিলাম পরিবেশ দেখে। ফোরাম সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল কেবলমাত্র ওয়ারেজ-মৌজ-মাস্তি, যেমন - পোলাপাইন.কম ইত্যাদি। তখনই মাথায় খেলে গেল এটাকে তো ওপেনসোর্স আন্দোলনের প্লাটফরম বানানো যায় (ততক্ষণে ক্রিকেট দেখার কথা ভুলেই গেছি। বাঙালি তো, ঐ যে গোল্ডফিশ!)
ইয়াহু গ্রুপ, মেইলিং লিস্ট এসবে যারা অলরেডি জানে তারা যায়। যারা অলরেডি গিক তাদেরকে তো আর এসব বলার দরকার নাই। উবুন্তুকে সাধারণ ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দেয়াটাই লক্ষ্য। ব্যস শুরু করলাম। বেশ কিছুটা সফলও হলাম। আজকে লিনাক্স নিয়ে টপিক দিলেই যেমন হৈ-হৈ পড়ে যায় - ফালতু টপিক, বন্ধ করেন, যার যেটা খুশি সেটা ব্যবহার করবে (আবারও সেই সবাই রাজা ), তখন সেরকম হয়নি। বরং ভাগ্যক্রমে কিছু তার্কিক জুটে যায়। এবং কিছু ফলপ্রসু আলোচনা হয়। এখন আবার যখন দেখি ঐসব টপিক দেখে শেখা পুরনো সদস্যরা নতুন লিনাক্স টপিককে বিরক্তিভরে দেখে - তখন খুব দুঃখ লাগে, মনে হয় আসলে কিছু করতে পারি নাই।
কিভাবে, কেমন করে মডারেশনে যুক্ত হয়েছিলাম মনে নেই। তবে কেবলমাত্র একটা ফোরামে লেখালেখি করে সেখানেই মডারেটর হয়ে যাওয়াটা বেশ ভালই লেগেছিল। আমার প্রতি আস্থা রাখার জন্য সেই সময়ের মডারেশন প্যানেলকে ধন্যবাদ। আর এডমিন কবে হলাম, আমি জানি না। কোন এক টপিকে লিখেছিলাম - 'মডারেটর হিসেবে বলছি না' বা এ জাতীয় কিছু - তখন কেউ একজন বলল 'আপনি তো মডু না এডু'। তখন জানলাম আমি এডমিন! হাঙরিকোডার আমাকে এমনিই এমনিই বানিয়ে দিয়েছে।
হাহাহা..বেশ মজার ব্যাপার। আচ্ছা প্রজন্ম ফোরামের যাদের কথা সব সময় মনে হয় তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।
-পুরনো দিনে আসলে বেশ কিছু ভাল ফোরামিক ছিলেন। তারা এখন আর আসেন না। তাদের কথা মনে পড়ে। আমি কারও নাম উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। বর্তমানেও অনেকে আছেন যাদেরকে আমার ভাল লাগে।
আপনি কবে কিভাবে বিদেশে পাড়ি জমালেন? সে সময়ের কিছু স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করুন প্লিজ।
- ২০০৫-এ গিয়েছিলাম জার্মানীতে। তারপর ২০০৭-এ ইংল্যান্ডে। দুটোই পিএইচডির জন্য ফুল স্কলারশিপে। জার্মানিতে সাবজেক্ট ভাল লাগেনি, তাই ফিরে এসেছিলাম। পরে ইংল্যান্ডে গেলাম। (জার্মানিতে স্কলারশিপের টাকাটা বেশি ছিল অবশ্য )
বিদেশে প্রথম প্রথম ভাল লাগত না। আমি খুবই ইন্ট্রোভার্ট একজন মানুষ। বই বা কম্পিউটার নিয়ে ঘরের এক কোনায় বসে সময় কাটিয়ে দিতে পারি। তারপরও কেমন কেমন লাগত! মনে হত কেউ আমার না, কিছুই আমার না। জার্মানি থেকে ফেরত আসার এটাও একটা কারণ হতে পারে (আমি নিশ্চিত না যদিও)।
আপনি বর্তমানে বিদেশে কোথায় থাকেন এবং কোন প্রতিষ্ঠানে, কি পদে কর্মরত আছেন?
- বর্তমানে বাংলাদেশে আছি ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতায়। সিনিয়র ডেভেলপার হিসাবে appliansys নামক এক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি। এটা মধ্য-ইংল্যান্ডে। আমরা এমবেডেড লিনাক্স এ্যপ্লায়েন্স বানাই যার প্রধান ভাষা হল পাইথন।
দেশে আসার ব্যাপারে কিছু বলেন......
- প্ল্যান ছিল অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আসবার। নতুন চাকরিতে জয়েন করেছিলাম ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু ভিসা নিয়ে গন্ডগোল হয়ে গেল। তাই আগেই চলে আসতে হল। চার বছর পরে এলাম দেশে (আসলে পাঁচ বছরই বলা যায়, কেননা এর আগেরবার শুধু বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে চলে গিয়েছিলাম)। ভিসা পেলেই চলে যাবো। না পেলে তো থাকতেই হবে দেশে। ঢাকা ছেড়ে বাইরে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
দেশে আসার পর এ পর্যন্ত সময়টা কিভাবে বা কি কি করে কাটল?
- কয়েকবার শ্বশুরবাড়ি (সিলেট) যাওয়া-আসা করেছি। আর কোথাও যাওয়া হয়নি। দেশের পরিবেশ-পরিস্থিতি কিছুই ভাল লাগছে না।
দেশে আর যতদিন আছেন আর কি কি করার ইচ্ছা আছে?
- জানিনা, কোন প্ল্যান নাই। বড়ই হতাশ। লক্ষ্য কর যে, আমি হতাশাবাদী নই।
আমি সেটা বুঝতে পারছি। তো দেশে আসার পর আপনার পরিবারের সদস্যদের অনুভুতি কি?
- আমার পরিবার তো দেশেই থাকে। আমি আর আমার বউ শুধু বাইরে ছিলাম। আমার বউও দেশ নিয়ে অতিষ্ঠ। আমাদের লোক দেখানো আন্দোলন, নীতিবর্জিত রাজনীতি, কুশিক্ষিত মন্ত্রীসভা নিয়ে প্রচণ্ডভাবে আপসেট। পারলে সে একাই আন্দোলনে নামে (আমার নিজের সেই সাহস নাই)।
এতদিন পর দেশে এসে কি কি পার্থক্য চোখে পড়ছে আপনার? (দেশের কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন চোখে পড়ছে? উন্নতি? অবনতি?)
-কেএফসি-পিজাহাটে ইংল্যান্ডের সমান মূল্যে পিজা আর চিকেন ফ্রাই খাওয়াটাকে যদি উন্নতি বলি - তবে হয়তো হয়েছে। তবে ৪০-৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে মানুষ কিভাবে এই দামে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে সেই প্রশ্নের জবাব খোঁজার চেষ্টাও করতে ভয় লাগে।
সেভেন ওয়ান্ডার্স-এর মত একটা স্ক্যামকে সরকারী পর্যায়ে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে, এটা স্রেফ বাংলাদেশেই সম্ভব। সরকারী মন্ত্রনালয়ে মগজবিহীন লোকের আধিক্য যে চরম পর্যায়ে এই একটা উদাহরণেই তা স্পষ্ট।
ধাঁধাঁরু সাইটটির বর্তমান অবস্থা কি? সাইটটি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাই।
- বেশ কিছুদিন ঝিমিয়ে থাকার পর এখন আবার বেশ ভাল একটিভিটি দেখা যাচ্ছে ধাঁধারুতে। সাইটটি এতটা সাড়া ফেলবে আমি ভাবতেও পারিনি। আসলে আমাদের মাঝে মেধা-মগজ-শিক্ষা নিয়ে আগ্রহ খুব ভাল পরিমাণেই আছে। কিন্তু সিস্টেমের কারণে আজকে কিছু মেধাশূণ্য গৎবাঁধা মুখস্থ বিদ্যার অধিকারীরা মেধাতালিকায় জায়গা নিয়ে সিস্টেমটাকেই কলুষিত করে ফেলছে।
সাইটটি যদিও বেটা রিলিজ, আসলে এটা আলফা পর্যায়ে আছে। সাইটটার বেশ কিছু পরিবর্তন দরকার। বিশেষ করে মডারেটরদের জন্য সাইটে কাজ করাটা খুব সহজ না। সময় বের করতে পারছি না, এগুলো ঠিক করার। বৃহৎ কিছু পরিকল্পনা আছে। তবে সেগুলো সাইট ঠিক না করে প্রকাশ করতে পারব না!
একটা ছোট্ট গোপন কথা বলি - আমি যখন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাই তখন ধাঁধারুতে ঘুরে যাই। এতে করে ইন্টারভিউতে অনেক প্রশ্ন কমন পড়ে যায়। অবশ্য বাংলাদেশে এরকম ইন্টারভিউ আমি আশা করি না।
বাস্তব জীবনে আপনি কেমন ধরনের মানুষ?
- একসময় খুবই শান্ত ছিলাম। তবে রাগটা বোধহয় এখন বেশ বেড়ে গেছে। এই ইন্টারভিউ দেখলেই বোধহয় সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
কথা খুবই কম বলি। এটা আমার খুবই খারাপ একটা দিক। কথা বলা শেখার কোন কোর্স করা উচিত মনে হয়। মজা করা বা গম্ভীর থাকাটা দেশ-কাল-পাত্রের উপর নির্ভরশীল। বাস্তববাদী - আবেগটা আমার কাছে মূল্যবান, তবে বাস্তব বাদ দিয়ে নয়।
তেমন একটা প্রতিকুল পরিস্থিতিতে কখনও পড়িনি, তাই বলতে পারবো না কতটা আপোষহীন। তবে বেশ কিছু জায়গায় আমার এই আপোষহীনতার জন্য ঠকেছি। হয়তো সেগুলো ঠকা না, বরং ভালই হয়েছে আমার জন্য।
বর্তমান ব্যস্তময় জীবনের ফাকে ফাকে কখনো কি অতীতের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যখন এত ব্যস্ততা ছিল না?
- হ্যাঁ, মনে পড়ে। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো। ছাত্রজীবন খুবই মধুর জীবন।
আপনার পরিবারের সদ্স্যদের সম্পর্কে একটু জানতে চাই..
- এখনও পর্যন্ত আমরা দুজনই আছি। দোয়া কর যেন সুন্দর একটা পরিবার গড়ে তুলতে পারি। আর সেজন্যই তো এত ছোটাছুটি।
অবশ্যই দোয়া করব। সবশেষে, ইন্টারভিউটুকু দিয়ে আপনার কেমন লাগল?
- ইন্টারভিউটা এ বছরের প্রথম দিকেও যদি দিতাম, তবে হয়তো অনেক ভাল ভাল কথা বলতাম, হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা জাতীয় লেকচার দিতাম, বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব করতাম- ইত্যাদি। কিন্তু আজ নিজ চোখে সবকিছু দেখে একটা বাজে সাক্ষাতকারই দিয়ে ফেললাম। সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। আপনাদেরকে আমার বিক্ষিপ্ত মনের কথাগুলো জানিয়ে বিরক্ত করায় দুঃখিত।
আমার চিন্তা- ভাবনার সাথে কিন্তু অনেকখানি মিলে গেছে। যাই হোক, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যে।
- তোমাকেও ধন্যবাদ।
এই ছিল নাসিম ভাইয়ের ইন্টারভিউ। কেমন লাগল এই ইন্টারভিউটুকু সেটা জানানোর জন্য অনুরোধ রইল সবার প্রতি।ধন্যবাদ।