টপিকঃ মোস্তাফা জব্বারে একটি লেখা ও মুশফিকুরের প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি বিডিনিউজের মতামত-বিশ্লেষণ বিভাগে মোস্তাফা জব্বার "ষষ্ঠ শ্রেণীতে বাধ্যতামূলক কম্পিউটার শিক্ষা" শিরোনামে একটি লেখা লিখেছেন। সেখানে তার লেখার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ফ্রি ও ওপেন সোর্সের বিরোধিতা। তিনি মনে করেন-
খ) ৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্য বই: আমার কাছে বইটির যে খসড়া উপস্থাপিত হয়েছে তাতে বেশ কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে আমার কথা বলার আছে। বিষয়গুলো খুবই গুরুত্ব বহন করে বলে আমি মনে করি।
১) বইটিতে ওয়ার্ড প্রসেসিং শেখানোর জন্য এম এস ওয়ার্ড ও ওপেন অফিস একই সাথে শেখানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমি মনে করি এদেশের কিছু লোক সব সময়েই এমন কিছু কাজ করতে চায় যা তারা নিজেরা শ্রেয় মনে করে। ওরা নিজেরা ওপেন সোর্স ব্যবহার করেনা-কিন্তু শিশুদেরকে দিয়ে সেই জটিল কাজটা করাতে চায়। আমরা এটি উপলব্ধি করি যে আমাদের মতো গরিব দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে বাণিজ্যিক সফটওয়্যার কেনা কঠিন কাজ। ওপেন সোর্স এক্ষেত্রে কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। ওয়ার্ড প্রসেসিং-এর কাজে এমন একটি সফটওয়্যার পাওয়া যায় যেটি এমএস অফিস ২০০৩-এর সমতুল্য। কিন্তু এখন ওয়ার্ড প্রসেসর হিসেবে ওয়ার্ড ২০১০ সবচেয়ে জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে ২০০৩ সংস্করণের উপযোগী একটি প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদেরকে শেখানো কোনমতেই উচিত নয়। বইটিতে বাণিজ্যিক সফটওয়্যার এমএস ওয়ার্ড এবং ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ওপেন অফিস; দুটোই যুক্ত করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা একই কাজের জন্য দুটো সফটওয়্যার শিখবে। যারা জীবনে প্রথম কম্পিউটার চর্চা করবে তাদেরকে এমন জটিল অবস্থায় ফেলার কোন মানে নেই। ওপেন সোর্স সফটওয়্যার সম্পর্কে ধারণা দেবার জন্য প্রথমিক স্তরকে বাছাই করা হলেও এই স্তরে একই কাজের জন্য একাধিক এ্যাপ্লিকেশন শেখানো হলে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। তাদেরকে সেই প্রোগ্রাম শেখাতে হবে যেটি তারা কর্মজীবনে ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ যা ব্যবহার করে সেটিই তাদেরকে শেখানো উচিত। এসব জটিলতা বরং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে হলেই ভালো।
জনাব জব্বারের উপর্যুক্ত লেখা থেকেই স্পষ্ট, ওপেন সোর্স বা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি হয় কিছু জানেন না কিংবা তার সচেতন বিরোধিতার এই অব্যাহত প্রয়াস তিনি নানা জায়গায় চালিয়ে যাবেন।
জনাব জব্বারের লেখার বিরুদ্ধে মুশফিকুর রহমান নিচে মন্তব্য আকারে বেশ কিছু যুক্তি দিয়েছেন। জব্বার সাহেবের লেখার বিরোধিতা করে মুশফিকুর রহমানের পূর্ণাঙ্গ লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা সাইটে ষষ্ঠ শ্রেণীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: একটি পর্যালোচনা শিরোনামে। মুশফিকুর রহমান একজন উঠতি শিক্ষাবিদ এবং প্রযুক্তি বিষয়ে তিনি খোঁজখবর রাখেন। দুটি লেখা তুলনামূলক পর্যালোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায়, মুশফিক যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন, সেগুলো কঠিন কোনো কথা নয়। দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ চিন্তা করলে সব কিছু থেকেই ব্যবসা করতে হবে- এই চিন্তা বাদ দেওয়া যায়। জনাব জব্বার কোনোদিন ব্যবসায়ীর উর্দ্ধে উঠে মানুষের ভবিষ্যতের কথা ভাববেন কিনা জানি না, ভাবলে দেশেরই উপকার হতো।