টপিকঃ কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৬ - অতিথি: jemsbond
পূর্বকথা: "কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল" একটি সাক্ষাৎকার নেয়ার সিরিজ।এখানে বিভিন্ন মানুষের ছোটো-খাটো সাক্ষাৎকার নেয়ার চেষ্টা করা হয়।আজকেরটা পর্ব ৬ ।যারা এই সিরিজের পর্ব ১ ,২, ৩, ৪ ও ৫ পড়েন নাই তারা নিচের লিংকে যেয়ে পড়ে নিতে পারেন:
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ১- অতিথি: সালেহ আহমদ
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ২- অতিথি: সমন্বয়ক শিপলু
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৩- অতিথি: ছবি আপু
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৪- অতিথি: আহমাদ মুজতবা
কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল: পর্ব ৫ - অতিথি: রূপসী-রাক্ষসী
আজকের পর্ব কথা:
বেশ কিছুদিন গ্যাপ যাবার পর আবার আপনাদের মাঝে হাজির হলাম "কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল" সিরিজের নতুন ইন্টারভিউ নিয়ে।পড়তে পড়তে যেন বিরক্তি না এসে যায় আর ব্যাক্তিগত ব্যস্ততা- সেজন্য এই গ্যাপ। "কিছুক্ষণ উইথ স্বপ্নীল" সিরিজের এখন পর্যন্ত নেয়া সব ইন্টারভিউই সরাসরি চ্যাটের মাধ্যমে পুরোটা একসাথে নেয়া হয়েছে, আগে - ভাগে প্রশ্ন পাঠানোর কোন সিস্টেম নেই। এই ইন্টারভিউটুকুও তার ব্যতিক্রম নয়।
আমি ইদানিং একদমই সময় পাচ্ছি না। তাই এই ইন্টারভিউ সিরিজের ভবিষ্যত নিয়ে আমি কিছুটা সন্দিহান। বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে এরকম একটা ইন্টারভিউ তৈরির জন্য সময় ম্যানেজ করা, ব্যাক্তিগত জীবনের নানা রকম ঝামেলায় নিজেকে এরকম গুরুত্বপূর্ন একটা কাজের জন্য ঠিকভাবে প্রিপেয়ার করতে পারছিনা। তবুও আজকে আপনাদের নতুন একটা ইন্টারভিউ উপহার দিতে পেরে মনে হয় যেন বিশ্ব জয় করে ফেলেছি
এবারের পর্বে ভেরিয়েশন আনার জন্যে চিন্তা করলাম প্রবাসে যে আমাদের প্রিয় ভাইয়েরা কষ্ট করে থেকে দেশের জন্য বিপুল রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাদের কারো একজনকে সবার সামনে তুলে ধরলে কেমন হয়?এতে এই সিরিজে একটু ভিন্ন স্বাদও পাওয়া যাবে।সেই ভেবেই এবারের অতিথি ঠিক করলাম আমাদের jemsbond ভাই ওরফে আকাশ ভাই ।
jemsbond বাহরাইনে থাকেন।প্রজন্মের সাথে আছেন সেই ২০০৯ সাল থেকে যদিও এখন পর্যন্ত খুব কম পোস্টই করেছেন।বেশ মজাই লেগেছে উনার ইন্টারভিউ নিয়ে।ইন্টারভিউ নেয়ার সময় বেশ কবারই হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ উনার কথা শুনে।আবার কখনো কখনো এত খারাপ লেগেছে যে কি বলব। উনার ইন্টারভিউতে বেশ সুন্দর করেই প্রবাসে থাকা আমাদের দেশের মানুষের জীবন -যাপন,আবেগ অনুভুতিটুকু উঠে এসেছে।উনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে ইন্টারভিউটুকু দেয়ার জন্য।
ইন্টারভিউ
jemsbond ভাই, কেমন আছেন?
-ভাল আছি।
আপনার পুরো নাম কি?
-আমার পুরো নাম – জানে আলম আর ডাক নাম – আকাশ, তবে মা-বাবা আদর করে বাবু ডাকে (তবে আপনারা কেউ ডাইকেন না আবার ) ।
এত কিছু থাকতে jemsbond নাম নেয়ার রহস্য কি?
-রহস্য কিছুই না, প্রজন্মতে যখন আসি, তখন মাথায় এই নামটাই ঘুরতেছিল।
ঠিক এই নামটাই কেনো? জেমস বন্ড বেশি পছন্দ করেন?
- বড় জটিল প্রশ্ন করেন তো আপনি, আমার এখন বুক কাপতেছে কিছু সিক্রেট মিশন এর কারনে এই নামটাই বড় বেশি পছন্দ হয়। নিজেকে জেমসবন্ড ভাবতেও ভাল লাগে, মাঝে কিছু সময় নামটা চেঞ্জ করার ইচ্ছা হয়েছিল, তবে কেন যেন করা হয় নাই
বাংলা ফোরামে এতদিন থেকেও নামটা বাংলা করা হয়নি বা অভ্যর্থনা কক্ষেও পরিচয় দেয়া হয়নি, কেন?
-কারনটা অলসতা এবং কিছু ভুল বোঝার কারনে হয়েছিল । মনে করেছিলাম চেঞ্জ করব, কিন্তু ব্যস্ততা আর অলসতার কারনে করা হয়নি। আর অভ্যর্থনা কক্ষেও পরিচয় দেয়া হয়নি, কারন শুরুটাই এক রকম টেস্ট এর মত হয়ে গেছিল, তারপর আর দেব দেব করে দেয়া হইনি।
ফোরামে এখন খুব একটা পোস্ট করেন না,কারণটা জানতে পারি?
-একরকম লজ্জা লজ্জা লাগে, প্রথম প্রথম ভাবতাম লিখব, তারপর কি লিখব ভাবি কিন্তু লিখতে গেলে আর কলম চলে না ।
প্রজন্ম ফোরাম আপনার জীবনের সাথে কিরকম জড়িয়ে আছে?
-বেশ ভাবগম্ভির প্রশ্ন। আসলে আমি যখন প্রজন্মতে আসি তখন বাংলা ফোরাম সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না। আমি তো মনেই করি নাই যে বাংলাতেও ফোরাম আছে । বর্তমানে প্রজন্ম আমার দৈনন্দিন কাজের একটা অংশ হিসেবে জড়িয়ে আছে, তাই বলা খুব মুশকিল।
আপনার আশপাশের কেউ জানে এ ফোরাম সম্পর্কে?
-নাহ, কেউ জানে না । তবে দুইদিন আগে আমার এক ফ্রেন্ড এর কাছে প্রজন্ম ফোরাম সম্পর্কে জানিয়েছি। মনে হয় সেও আসতে পারে। আপনার লেখা সে পড়ে এবং সাথে আমার মন্তব্যগুলিও।
কয় বছর হল বিদেশে?দেশে কয়বার গিয়েছেন?
-মনে হয় ৪ বছর হয়ে গেল । এখনও দেশে যাইনি , তবে এ বছর যাওয়ার চিন্তা আছে ।
বিদেশে কখন, কিভাবে গেলেন? যাওয়ার আগে দেশে কি করতেন?
-বিদেশ আসাটা একরকম ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হয়ে গেল আমার মতে। কারন জীবনে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি আমি বিদেশ আসব । যাওয়ার আগে আমি ঢাকা পলিটেকনিক এ পড়ালেখা করতাম, তার পাশাপাশি টুকটাক পার্ট টাইম জবও করতাম।
ঠিক কিভাবে এলেন সেটা জানতে চাচ্ছি।পুরনো স্মৃতি একটু কষ্ট করে আমাদের জন্য মনে করুন।
-বুঝতে পারছি আপনি ছাড়বেন না, আমি যত এড়িয়ে যাই তত টাইট করে ধরছেন দেখছি
যাই হোক, আসলে আমরা পরিবারে মাত্র পাঁচ প্রাণী – মা, বাবা, দু-বোন এবং আমি ।আমার বড় দুলাভাই এই দেশেই থাকতেন এবং আমার বোনেরও ইচ্ছে ছিল আমি বিদেশ যাই, কিন্তু আমি রাজি হচ্ছিলাম না । একদিন পাসপোর্ট বানানোর জন্য আমার সাইন নিয়ে সেটার কপিও পাঠিয়ে দেয় আমার অবর্তমানে। যখন জানতে পারি তখন হাতে মাত্র ২৮ দিন বাকি ।
শেষমেষ রাজি হচ্ছিনা দেখে খুব ভাল একটা লজিক দাড় করাল । যেমন - আমি যদিও বাবা-মার এক মাত্র ছাউয়াল, তারপরও আমাকে অনেক বড় হতে হবে এবং আমি যদি ডিপ্লোমা পাশ করি, তাহলে চার-বছর পর আমার মা-বাবা কে আমি মাসিক সংসার খরচ দিতে পারব ৪ থেকে ৭ হাজার টাকা। যদি আমি আরও পড়ালেখা করতে চাই, তাহলে আমাকে বিসিএস পাশ করতে হবে, তার মানে আরও ৬ বছর, ততদিনে আমার মা-বাবা আরও বুড়ো হয়ে যাবে। যদি তা আমি পাশ করে বের হই, তাহলে কত টাকা মাসিক ইনকাম করতে পারব, আপনারাই একটা অনুমান দাড় করান । ততদিনে আমার এবং আমার আশেপাশের পরিবেশ সব কিছু ধরাছোয়ার বাইরে চলে যাবে ( বর্তমানের বাজার দরটাই দেখেন) । সেই রকম একটা স্বপ্ন পূরুন করার ইচ্ছাই এখানে আসা ।
তবে আমার ভাই এত টাকা-পয়সার দিকে মন নেই । কিন্তু পারিবারিক কিছু কারনে বাধ্য হয়েছি। সেই সুখি মানুষ এর গল্পটা আপনাদের হয়ত মনে আছে, আমার সেই রকম হতে মনে চায়।
প্রথম যখন বিদেশে এলেন, তখনকার সময়ের স্মৃতিটুকু আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
-প্রথম যখন আসি, তখন তো দুই দিন শুধু ঘুম আর ঘুম, কারন রাত আর দিন কিছুই বুঝতে পারিনি। যখন ঘুম ভাঙল, তখন মনে করছি এখনও স্বপ্ন দেখছি, হয়ত এখনই ঘুম ভেঙ্গে যাবে আর মা বলবে : "১২ টা বাজে, এখনও ঘুমে, ওঠ" । আসলে প্রথম স্মৃতি মনে করলেও গায়ে কাটা দিয়ে উঠে
যাই হোক যখন ঘুম ভাঙল, ততদিনে ৭ দিন হয়ে গেছে, এবার বাস্তবে ফিরে আসি। প্রথম চিন্তা কি করা যায়। এখানে বাংলাদেশি যারা আছে, তারা সবাই যে ধরনের কাজ করে তা আমার দ্বারা সম্ভব না -এটা আমি যখন বুঝতে পারি তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে, কারন ভিসার টাকা জমা হয়ে যাওয়া আরকি । সবাই খুব খুব পরিশ্রমের কাজ করে যা দেখতেও বুক ফেটে যায় আরকি । একে তো প্রখর রোদ, তার উপর আবার গরম বাতাস
নতুন দেশ, নতুন ভাষা এবং আমার আশেপাশের যারা বাঙালি ছিল, তারা সবাই একই ধরনের কাজে সংশ্লিষ্ট ছিল আর আমি তাদের থেকে ভিন্নমাত্রার কাজ খুজছিলাম । অনেককে প্রশ্ন করেছিলাম যে "এই ধরনের কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজে যোগদান করা সম্ভব কিনা?" সবার একই উত্তর: এইটাই বেশ, কারন তারা সবাই এক ধরনের টার্গেট নিয়ে আসে। যেমন : যদি ৩ থেকে ৫ বছর হাড় ভাঙ্গা খাটুনি করে, তাহলে মোটামুটি একটা আয় নিয়ে দেশে ফিরে যাবে, আর জীবনেও আসবে না এই দেশে
তবে আমার ভাগ্য ভাল যে ১৫ দিনের মাথায় একটা কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিই যার দরুন সেখানেই চাকরি হয় । কারন আমার দু-একটা পজিটিভ দিক ছিল তা হল –
১. কম্পিউটার ব্যবহার জানতাম ।
২. হিন্দি ভাষাও পুরোদমে ( দেশে থাকতে চ্যানেল দেখে দেখে )
৩.ইংলিশও মোটামুটি বলতে পারতাম ।
সেই থেকে শুরু আর থামি নাই ভাইজান । আরও অনেক স্মৃতি আছে, যা এখন বললেও দুই দিন পার হয়ে শেষ হবে
বেশ ভাল লাগল আপনার কথাগুলো। আচ্ছা, বাহরাইনের সাথে আমাদের বাংলাদেশের কি কি পার্থক্য চোখে পড়েছে আপনার?
-অ-নে-ক।
প্রথমত, তাদের আইন-কানুন খুবই ভাল যা বলার মত না। ধরেন, আপনি যদি রাত ৩ টায়ও রাস্তা দিয়ে হাটেন, তারপরও কেউ বলবে না কেন আপনি বাইরে । পুরোপুরি বাংলাদেশি চলা ফেরা, তবে আইন মানাটা সবার জন্য প্রযোজ্য। আর যদি বাংলাদেশে রাত ১২টার পরে ঢাকায় চিপাচাপায় জান, তাইলে তো – হয় মামুরা ধরছে না হয় ভাগ্নেরা
দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশে রাস্তায় হয়ত আপনারা বিভিন্ন এক্সিডেন্ট দেখে থাকবেন যেখানে সব কিছু শেষ হবার পর পুলিশ আসে। আর এখানে আপনি গাড়ি এক্সিডেন্ট করলে একচুল না নড়ে তখনই সার্জেন্টকে ডেকে আনবে এবং সে আসলে সবকিছুর ফয়সালা হবে ।
এরকম আরও অনেক পার্থক্য আছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ন হল – এখানে কোন দলীয় বা বিরোধিদলীয় ঝামেলাগুলো নেই ।
বাহরাইনের কোন জিনিসগুলো সবচে বেশি ভাল লাগে?
-রোদগুলি যা চরম লাগে- একবারে গা পুড়ে যায় আরকি । আসলে এখানে রোদ ছাড়া আমার চোখে আর কিছু নাই দেখার মত, কারন এখানে রাতে আপনার ভাল লাগবে, কিন্তু দিনে ভাল লাগবে না । কারন যেই দেশে শুধু রাতের দৃশ্য দেখতে ভাল লাগে, সেই দেশ কখনো ভাল হয় না। আপনি বুঝতে পারছেন কি মিন করছি আমি? আর হ্যা, এখানকার মসজিদগুলি দেখতে খুব সুন্দর।
বাহরাইনের মানুষজন কেমন?
-বাহরাইনের মানুষজন আসলে ঠিক অতটা ভাল না । কারন এখানে শিয়া সম্প্রদায়ের অধিকতর লোক থাকে , যারা সুন্নিহদের সাথে খুব একটা ভাল ব্যবহার করে না । যেমন: আপনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, কোন কারন ছাড়াই আপনাকে একটা চড় দিয়ে চলে যাবে আর আপনি কিছুই বলতে পারবেন না। যদি আপনি এর প্রতিবাদ করেন, তাহলে পুলিশ তাদের পক্ষে যাবে কারন তারাও শিয়া । তবে কিছু সুন্নিহ লোক আছে যারা খুব ভাল এবং তারাই উপর বড় বড় পদে আছে এবং সব কিছু কন্ট্রোল করে থাকেন।তবে এখন কিছুদিন আগে মুসলিম দেশে গোলমালের পর তাদের চরিত্র বেশ একটা বদলে গেছে । তবে যেই জিনিসটা মূলে আছে, তা হলো- এখানকার নারীরা দেখতে খুব সুন্দর
হাহাহা.বিয়ে করে ফেলার প্ল্যান আছে নাকি কাউকে?কারো সাথে পরিচয় নেই?
-নারে ভাই, আরবি বিয়া করলে জবেহ করে ফেলবে । তবে তারা মিটমিট করে চায়, আমি লক্ষ করছি, সেটা ভালবাসা কিনা জানিনা, তবে ১০০% জানি এটা কু-মতলব
সমস্যাটা কি বুঝতে পারছিনা,জবেহ করে ফেলবে কেন?
-আসলে তারা বেশ ভাল করে জানে যে এটা সম্ভব না। এখানে কোন আরবি ছেলে যদি কোনো নারীকে বিয়ে করতে চায়, তাহলে তাকে মানে সেই নারীকে একটা গাড়ি, থাকার জন্য একটা বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট এবং মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে যা আমাদের দেশের রেওয়াজে নেই । আমরা যদি মন-প্রান দিয়া ভালবাসি, তাহলে টাকা-পয়সা চাইনা, তবে এখানে এটা দিতে হবে বাধ্যতামূলক।
আর অনেক নারীর বিয়ে ঠিক বয়সে হয়না বলে তারা আমাদের সাথে, বিশেষ করে ভিনদেশি যারা – ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ -এর নাগরিকদের বিভিন্ন লোভ দেখায় নিজের সব আকাঙ্ক্ষা পুরণের জন্য । আর যদিও তারা সব কিছু করবে, তবে বিয়ে করবে না, তাহলে লাভ কি? আপনি বিয়ে করতে চাইলেও তারা তা দেবে না, হয় আপনাকে রেপ কেস করে সৌদি পাঠিয়ে দেবে, আর সেখানে গেলে তো হবেন – আল্লাহু আকবর। আরও অনেক সমস্যা আছে, তাই তাদের থেকে অন্তত বাংলাদেশ এর যত দুরুত্ব, ততটুকু দুরুত্ব রাখা ভাল বলে আমি মনে করি
বুঝতে পেরেছি।অবস্থা দেখি খুব জটিল।যাই হোক,বাহরাইনে ঘটা মজার কিছু ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
-মজার কোন ঘটনাই নাই। প্রবাস জীবন আমার মতে কোন মজার জীবন হতে পারে না ।
তবে এখন আপনার সাথে চ্যাট করে (ইন্টারভিউ দিয়ে) মজা লাগতেছে এইটাই মজার ঘটনা। নিজেরে খুবই বড় বড় মনে হচ্ছে
আপনার প্রতিদিনের রুটিন সম্পর্কে একটু আইডিয়া দেবেন?
-সকাল ৭: ৩০ এ ঘুম থেকে উঠে অফিসের জন্য তৈরি হওয়া ।৮ টায় রওনা দিয়ে অফিস আসতে আসতে ৮.৩০, কখনো ৮.১৫ তেই এসে যাই।কম্পিউটার ওপেন করে কিছু পেন্ডিং কাজ ফিনিশ করা, ১০ টায় চা অথবা স্যান্ডউইচ খাওয়া । আবার কাজের মাঝে বিজি হয়ে যাওয়া । ২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত প্রজন্ম, টেকনিটিউনস,প্রথম-আলো ব্লগে ঘোরাঘুরি করা, সাথে ফেসবুক, আরও হাবি-জাবি। ৬ টায় বাসায় যাওয়া ।
অফিসের কোন চিন্তা যাতে মাথায় না আসে তার জন্য – প্রথমে টিভির চ্যানেল খুলে সনি এবং স্টার প্লাস খুলে নাটক দেখি – দেখতে দেখতে ৭.৩০ অথবা ৮.০০ বাজলে রাতের খানা খাই । তারপর মুভি দেখে রাত ১২.০০ টায় ঘুম । এই আমার রুটিন। তার মধ্যে মাঝে মাঝে দেশের কারো সাথে কথা বলি যার জন্য বাইরে যেতে হয় । ( বাংলা চ্যানেল আমার বিরক্তির বড় কারন যার দরুন বাংলা চ্যানেল দেখি না তবে মাঝে মধ্যে দেখি)
ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখেন,সেই স্বপ্ন সম্পর্কে আমাদের একটু বলা যাবে?
-আমি আমার জীবন নিয়ে খুবই Confused, আমার কোন স্বপ্ন নেই, তবে অনেক টাকা কামানোর একটা দুঃস্বপ্ন আছে।
দেশে যারা আছে তাদের জন্য নিশ্চয়ই খারাপ লাগে।সে সম্পর্কে জানতে চাই।
-আসলে আমি সবসময় চাই আমার যারা কাছের মানুষ দেশে আছে তারা ভাল থাকুক । কিন্তু আমার একটা দোষ -মাঝে মধ্যে এই সংসার জিনিসটা খুবই বিরক্তি লাগে, এর চেয়ে না হওয়া আরও ভাল ছিল । যাই হোক এখন তো একটাই স্বপ্ন দেখি – মাকে দেখি না অনেকদিন হয়ে গেল, আগে মাকে দেখব, তারপর সবকিছু।
যাই হোক,আমি তো অনেক প্রশ্ন করলাম।আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চান??
-আসলে প্রশ্ন করাটা খুব কঠিন। কিছুক্ষন আগেও অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, এখন বলতে পারছি না, তাই আমার কোন প্রশ্ন নাই । তবে একটা সিম্পল প্রশ্ন – আপনি আজ কি দিয়ে ভাত খাইছেন ?
আমি আজ চিংড়ি মাছ আর চিচিংগা ভাজি দিয়ে ভাত খেয়েছি,খুবই টেস্টি।কিছুক্ষণ পর শাক দিয়ে আবার ভাত খাব
সবশেষে, আকাশ ভাই, আপনার সম্পর্কে আমার জানার বেশ আগ্রহ ছিল,আজকে সেটা পূরন হলো।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে সময় দেয়ার জন্য।
-আমিও আনন্দিত হইলাম আপনাকে সময় দিতে পেরে। হয়ত আজকের পর থেকে প্রজন্মেতে আমি বদলে যেতে পারি । আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।
এই ছিল আকাশ ভাইয়ের ইন্টারভিউ।কেমন লাগল এই ইন্টারভিউটুকু সেটা জানানোর জন্য অনুরোধ রইল সবার প্রতি। ধন্যবাদ।