টপিকঃ কম বসুন, ঠিকভাবে বসুন।
পশু শিকার করাই হোক, আর ফসল ফলানোই হোক, আমাদের পুর্ব পুরুষদের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে পায়ের উপর দাঁড়িয়ে। সেদিনকার সেই অবস্থা থেকে অনেকদুর সরে এসেছি আমরা, আধুনিক হয়েছি, আর তার অভিশাপ হিসেবে সাথে এনেছি এমন সব রোগ, যার নাম আমাদের পুর্ব পুরুষরা শোনেনওনি।কম্পুটার, টিভি, আর ডেস্ক জবের আবিস্কারের সাথে সাথে এখন আমাদের গড় বসে থাকার সময় ইতিহাসের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি। গড়ে ৯.৩ ঘন্টা/দিন, হ্যা, প্রতিদিন এই পরিমান সময় আপনি গড়ে বসে কাটাচ্ছেন, যা আপনার ঘুমানোর সময়ের চেয়েও বেশি, গড়ে ৭.৭ ঘন্টা।
আপনি যদি দিনে ৬ ঘন্টার বেশি সময় বসে বসে কাটান, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা, যারা দিনে ৩ ঘন্টার কম বসে কাটান তাদের তুলনায় ৪০% বেশি।কিভাবে??
বসে থাকছেন, তো মোটা হচ্ছেন,বসে বসে দিন পার করার ইফেক্ট যে শুধু অনেক সময় পরে পাবেন তা কিন্তু না, এটা একদম সাথে সাথেই শুরু হচ্ছে।বসে আছেন মানে আপনি প্রায় কোন শক্তিই খরচ করছেন না, শরীরে জমছে ক্যালোরী, শরীরে জমছে মেদ, ক্রনিক সব ভয়াবহ রোগের শুরু আপনি এই মুহুর্তে বসে থেকে করছেন।কিভাবে?
-আপনার ক্যালোরী বার্নিং নেমে আসছে শুন্যের কোঠায়।
-আপনার পায়ের সমস্ত ধরনের ইলেক্ট্রিকাল এক্টিভিটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
-যেসব এনজাইম ফ্যাট ব্রেকডাউন করে, তার সিক্রেশন কমে আসছে ৯০%।
২ ঘন্টা পর
-ভাল কোলেস্টেরল বা HDL কমে আসছে ২০%।
২৪ ঘন্টা পর
ইন্সুলিনের কার্যক্ষমতা কমে আসছে ২৪%, আর আমরা সবাই জানি এ থেকে কি হতে পারে।
বসে কাজ করা চাকরীর লোকজনের, হাটাচলার উপর থাকেন এমন লোকের তুলনায় হার্ট ডিজিজ হবার সম্ভাবনা দ্বিগুণ।
কিন্তু বলা যত সহজ করা তত সহজ নয়, আমাদের প্রায় সবার চাকরীতেই প্রায় ৮ ঘন্টার কাছাকাছি বসে থাকা এড়ানো সম্ভব নয়, কিন্ত্য আসলে এই চাকরীর বাইরে যে সময়টা আমরা বসে থাকি, আড্ডাবাজি করি, টিভি দেখি ঐ সময়টাই বেশি খারাপ।কিভাবে এটা কমাবেন - উপরের ছবিটা দেখুন
-যতভাবে সম্ভব টানা বসে থাকা এড়িয়ে চলুন, আপনি হাঁটলে বসে থাকার তুলনায় ৩-৫ গুন ক্যালোরী বার্ন করছেন, যখন সুযোগ পান, একটু হেটে নিন।
যারা ৩ ঘন্টার বেশি টিভি দেখেন প্রতিদিন, তাদের হার্ট ডিজিজ হবার সুজোগ,অন্যদের তুলনায় ৬৪% বেশি।
কিভাবে বসবেন??
মানুষের শরীর বসে থাকার জন্য তৈরী হয়নি, আপনি বসে বসে দিন কাটালে আজ হোক, কাল হোক, শরীর এর শোধ নেবে। আজ থেকে ১০০-১৫০ বছর আগে Obesity বা ওজন স্থুলতা বলতে গেলে ছিলনা।এটা ঠিক যে আমাদের পুর্ব পুরুষদের মত খোলাজায়গায় ছুটে বেড়ানোর মত সুযোগ আমাদের নেই, কিন্তু তাই বলে বসে থাকলে তো হবেনা, বাঁচতে হলে হাটতে হবে