টপিকঃ "স্পাইডার ম্যান" হওয়ার দিন আসছে সামনে!
আমাদের অনেকের প্রিয় একটা চরিত্র হচ্ছে ‘স্পাইডার ম্যান’। স্পাইডারম্যানের মতো দেয়ালে চড়া বা বেয়ে ওঠার শখ যে কম-বেশী অনেকের মধ্যেই কাজ করে তা অনুমান করা যায়। তেমনই এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। আপাতত রোবটের উপর পরীক্ষা সফল। মানুষের ক্ষেত্রে সফল হলেই উঠে যাওয়া যাবে দেয়াল বেয়ে।
‘স্পাইডার ম্যান’ ছবির কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে৷ কিভাবে সে বিশাল বিশাল ভবনের দেয়াল বেয়ে তরতর করে উঠে যেত একেবারে উপরে? কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে কি তা সম্ভব? কেন নয়?
ঘরের মধ্যে আমরা প্রায় টিকটিকি দেখে থাকি৷ সমান দেয়াল বেয়ে কিভাবে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেয়ালের এক কোণ থেকে আরেক কোণে ছুটে যাচ্ছে, কিন্তু পড়ে যাচ্ছে না৷ আবার মৌমাছি কিংবা পোকা মাকড়ও দেয়াল বেয়ে চলা ফেরা করতে পারে৷ কিন্তু কখনো পড়ে যায় না৷ এর রহস্য কী? সেটা জানতে বিজ্ঞানীরা দিনের পর দিন গবেষণা করে যাচ্ছেন৷ তারা জানতে পেরেছেন, অনেক পোকা মাকড়ের শরীর থেকে এক ধরণের রস বের হয় যা তাদেরকে সমান দেয়াল কিংবা কাঁচের ওপর আটকে রাখতে সাহায্য করে৷ সবার বেলায় কিন্তু এরকম হয় না৷ বিশেষ করে টিকটিকির বেলায় সেটি আশ্চর্য রকমের এক ব্যাপার৷
টিকিটিকি ও পোকার পায়ের গঠন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে দেখতে পেয়েছেন কীভাবে জীব বিজ্ঞান এবং পদার্থ বিজ্ঞান এক সূত্রে গেঁথে গেছে৷ এই সূত্র অনুসরণ করে বিজ্ঞানী স্টানিস্লাভ গর্ব ও তাঁর দল এক নতুন ধরণের টেপ আবিষ্কার করেছেন যার নাম দেওয়া হয়েছে গেকো টেপ৷ এই নতুন টেপ কাচের ওপর শক্ত হয়ে আটকে থাকতে পারে এমনকি বেশ ওজনও সইতে পারে৷ টেপটি সরিয়ে নেওয়ার পর কাচের ওপর আর কোন ছাপ থাকে না, অনেকটা টিকটিকি কিংবা পোকা মাকড় যেমন কোন ছাপ না রেখেই দেয়াল এবং কাচের ওপর চলাফেরা করে৷
বিজ্ঞানী গর্ব এর নতুন এই টেপ নিয়ে কাজ করছে জার্মানির ইলমেনাউ শহরের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি৷ তারা একটি ছোট্ট রোবটে এই টেপ ব্যবহার করেছে এবং সেটি ঢালু কাচের ওপর চলাফেরা করছে৷ সেখানকার গবেষক হারমুট ভিটে বললেন, ‘‘ রোবটের পায়ের সাদা জিনিসটি হচ্ছে গেকো টেপ৷ এটি পুরোপুরি টিকটিকির পায়ের মত নয়৷ কিন্তু তার মানে এই নয় যে এটিকে চামড়ার এবং সবুজ রং-এর হতে হবে৷ এটাতে কেবল কিছু সূত্র অনুসরণ করা হয়েছে৷''
বিজ্ঞানীরা আপাতত এই টেপকে রোবটের পায়ে পরাতে চাচ্ছেন যাতে করে বাড়ির ছাদে থাকা সোলার প্যানেল পরিষ্কার করার জন্য রোবটকে ব্যবহার করা যায়৷ এছাড়া একইভাবে বড় বড় ভবনের বাইরের দেয়াল পরিষ্কার করার বিষয়টিও তাদের মাথাতে রয়েছে৷ তবে সবচেয়ে বড় বিস্ময় হবে যদি এই টেপ মানুষের জুতোয় পরানো সম্ভব হয়৷ হয়তো ভবিষ্যতে দেখা যাবে, সিনেমার পর্দায় ‘স্পাইডারম্যান' নয়, জলজ্ব্যান্ত মানুষই ঘরের দেয়াল বেয়ে হেটে বেড়াচ্ছে!
সূত্র : http://www.dw-world.de/dw/article/0,,15027769,00.html
তাই অনায়াসেই বলা যায়, "স্পাইডার ম্যান" হওয়ার দিন আসছে সামনে।