টপিকঃ মডেল রিভিউঃ নাদিয়া নদী
যারা প্রথম আলো নিয়মিত পড়েন তাদের কাছে এক পরিচিত মুখ হল নদী। প্রায়ই সে প্রথম আলোর বিভিন্ন ম্যাগাজিনের মডেল হয়ে থাকে। আজ তাকে নিয়েই নীচের আলোচনা।
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন নাদিয়া নদী(Nadia Khanam Nodi) মিডিয়ায় কাজ করার। পরবর্তীতে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন নানাভাবে। তিনি বাংলালিংকের এফএনএফ বিজ্ঞাপনে পারফর্ম করে আলোচনায় এসে ছিলেন তিনি। এ বিজ্ঞাপনচিত্র তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বলেই জানালেন। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিনি বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে প্রচুর প্রশংসা পেয়েছেন। এই বিজ্ঞাপনে কাজের সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে নাদিয়া নদী বলেন, 'এই বিজ্ঞাপনের জন্য আমাকে ফোন করেছিলেন বাংলালিংকের তানভীর ভাইয়ের অ্যাসিসটেন্ট রিয়াদ ভাই। তিনি আমাকে ছবি তোলার জন্য ডাকলেন। আমিও গেলাম ছবি তুলতে। এর আগেও আমি কিছু ম্যাগাজিনের ফটোসেশনে অংশ নিয়েছি। তাই সেরকম ভাবেই এক্সপ্রেশন দিচ্ছিলাম। তখন তিনি বললেন, নরমাল এক্সপ্রেশন দিতে। আমিও তাই করলাম। তারা আমার ছবি দেখে পরে আরেকদিন ডাকলেন। ওই সময় আমার আরেকটি শুটিং ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। যখন শুনলাম ওটা বাংলালিংকের বিজ্ঞাপন, তখন অন্য শুটিং বাতিল করে সেখানে গেলাম। পরবর্তীতে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারের সাথে সাথে বাংলালিংকের এই বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড ঝোলানো হয় বিভিন্ন স্থানে।'
বাংলালিংকের বিজ্ঞাপন ছাড়াও নদী ইতোমধ্যে আরো কয়েকটি বিজ্ঞাপনে পারফর্ম করেছেন। এরমধ্যে অমিতাভ রেজার নির্দেশনায় ফ্রুটিকা, বিপুলের নির্দেশনায় পেপসোডেন্ট ও শিপনের নির্দেশনায় টেটলি টি।
সমপ্রতি শেষ করলেন বাঁধনের নির্দেশনায় 'স্টিল টেক' নামের একটি বিজ্ঞাপনের কাজ। আমাদের দেশের বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় সামাজিক সমস্যা 'ইভটিজিং' নিয়ে এই বিজ্ঞাপন। এতে নাদিয়া নদী ছাড়াও জ্যোতি ও শুভ পারফর্ম করেছেন। এই বিজ্ঞাপনের গল্পটিও খুব সুন্দর। বিজ্ঞাপনের গল্পে দেখা যাবে, বাসে মেয়েদের যাতায়াত অনেক কষ্টের। প্রতিনিয়ত ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে মেয়েরা। একটি মেয়ে বাসে ইভটিজিংয়ের শিকার হলে একজন অন্ধ লোক তাতে বাধা দিবে। শিগগিরই বিজ্ঞাপনটি বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার শুরু হবে। এই বিজ্ঞাপনে কাজ নিয়ে নদী বলেন, 'এ রকম মেসেজ ধর্মী একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছি। আমার বিশ্বাস, বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর ভালো সাড়া পাবো।'
ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় তার অভিষেক ঘটে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের 'ও মাই গড' নাটকের মাধ্যমে। এক খণ্ডের নাটকটি গত কোরবানির ঈদে চ্যানেল ওয়ানে প্রচারিত হয়। এছাড়া কাজ করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর একটি ডকুমেন্টারিটি তে । গত রোজার ঈদে নদী অভিনীত তিনটি নাটক প্রচার হয়েছে। এগুলো হলো নোমান রবিনের 'খন্দকার ইলেকট্রনিক্স', ইফতেখার আহমেদ ফাহমীর 'পেন্ডুলাম' ও 'এই গল্পের নাম কী'। এছাড়া ফাহমীর 'ফিফটি ফিফটি' নাটকেও অভিনয় করেছেন নদী। আসছে ঈদের জন্য শুটিং শেষ করলেন 'হঠাৎ বিয়ে', ও 'আমেরিকা টু আশুলিয়া' নামের দুটি নাটকের। সেই সাথে সাঈদের 'আংশিক সাদা কালো নাটক' এবং অরণ্য আনোয়ারের 'আমার কিছু মেঘ আছে' নামের দুটি ধারাবাহিকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তিনি। আরো কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের কথা চলছে বলে জানালেন।
মডেলিং না অভিনয় কোনটি আপনার পছন্দের এমন প্রশ্নের জবাবে নদী বলেন, 'মডেলিং আমাকে চুম্বকের মতো টানে আর অভিনয় হলো ভালোবাসা। ভবিষ্যতে একজন ভালো অভিনেত্রী হতে চাই।' তিনি বলেন, 'আমার কাজের বিষয়ে পরিবারের থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। তবে, রক্ষণশীল পরিবারের সদস্য হিসেবে আমাকে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে কাজ করতে হয়। আমি অনেক আত্মবিশ্বাসী। আর উপরের ওপর ভরসা রেখেই পথ চলছি বলে এখনো টিকে আছি। আর স্রোতের টানে গা না ভাসিয়ে বুঝেশুনে পথ চলতে ভালোবাসি। তাই মিডিয়ায় অভিষেক হওয়ার পর থেকেই বেছে বেছে অল্প কিছু কাজ করছি। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ' তে অধ্যয়নরত এই তরুণী শুধু মডেলিং আর অভিনয়ের গণ্ডিতেই থেমে থাকেননি। নিজের পোশাকগুলোর ডিজাইন নিজেই করেন। যদিও ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল তার, কিন্তু পরিবারের চাপে বিবিএ পড়ছেন। নাদিয়া নদী ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ হিসেবে দেখতে চান। তার মতে, সফলতা তখনই আসে, যখন নিজের মেধা ও শ্রমকে পুরোপুরি প্রয়োগ করা য়ায়। তবে একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, নজের বিবেককে কখনো বিসর্জন দেয়া যাবে না।
তার করা কিছু বিজ্ঞাপনঃ
সূত্রঃ