টপিকঃ পর্দার আড়ালে অন্য আগ্রহ ...
আজকের ইত্তেফাকের অর্থনীতি কলামে আরেকটি খবরও সবাইকে জানাতে ইচ্ছে করল। দেশ বলে কথা ....
যথারীতি, ইউনিকোড বাংলায় পরিবর্তনের জন্য এস.এম. মাহবুব মুর্শেদের লেখনী ও পরিবর্তক ব্যবহার করা হয়েছে।
আইএমএফের সঙ্গে নতুন চুক্তি আর নয়-
জাহাঙ্গীর শাহ কাজল
দাতাদের সাথে ঋণ চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা ধরনের যুক্তিতর্ক উঠেছে। অনেকে মনে করেন, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সার্বভৌম ক্ষমতা খর্ব করে এমন কোন চুক্তি করা ঠিক হবে না। কেউ কেউ বলেছেন, আইএমএফ’র সঙ্গেও আর কোন চুক্তি নয়। দাতাদের নিকট থেকে অর্থ নিলে পলিসি পর্যায়ে খবরদারি বাড়ে। আবার নানা মেয়াদের প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পথ তৈরি হয়।
এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি’র মতো বহুজাতিক সংস্থা আমাদের মতো দেশে পুঁজি বিনিয়োগ করে সুদ নেয়। এরা বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে সুদ নিয়ে থাকে। পরবর্তীতে এরা দেশের নীতিনির্ধারণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের রাস্তা তৈরি করে। আসলে এদেশের উন্নয়নের পরিবর্তে তাদের লাভের প্রতি নজর থাকে বেশী। এসব দাতা সংস্থার সাথে ঋণ চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া ঠিক হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, এসব দাতা সংস্থা আসলে বিশ্বের বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানীর এজেন্ট হিসেবে এদেশে কাজ করে।
বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্প্রতি এক আলোচনা অনুষ্ঠানে আইএমএফ’র সাথে চুক্তি না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যালেন্স অফ পেমেন্টের জন্য আইএমএফ অর্থ দিয়ে থাকে। এখন ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট যথেষ্ট ভালো। ফলে নতুন করে আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি করার দরকার নেই। অযথা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে দেশের সার্বভৌম ক্ষমতা খর্ব করে এমন ঋণ চুক্তি এই মুহূর্তে বাঞ্ছনীয় হবে না।
ব্যাংককাররা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ, রিজার্ভসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপাদানের প্রবৃদ্ধির গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করলে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থার অর্থ প্রয়োজন নেই। তবে আপদকালীন সহায়তা হিসেবে অর্থ নেয়া যেতে পারে। আবার অনেকেই মনে করেন, দাতারা অর্থ ও কারিগরি সাহায্য না দিলে উন্নয়ন কার্যক্রমের গতি ব্যাহত হতে পারে।
উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯ হাজার ৬১৮ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। নীট বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তি হবে ৫ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। তবে এই অর্থ পেতে হলেও সরকারকে নানা শর্তের বাস্তবায়ন করতে হবে।