টপিকঃ গুঠিয়ার তাজমহলঃ বায়তুল আমান জামে মসজিদ।
দিনটা ছিল ২৫শে মার্চ, মঙ্গলবার। আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে গিয়েছি কয়েকদিন আগে, মাথায় বিশাল প্লান নিয়ে। অবশ্য এ ধরনের প্লান প্রতিবারই থাকে এবং অধিকাংশ প্লানই অবাস্তবায়িত থেকে যায়। এবার অনেকগুলো প্লান এর মধ্যে ছিল গুঠিয়া যাব ওখানকার মসজিদটি দেখতে। এটাকে নাকি বলা হয় “গুঠিয়ার তাজমহল”। যাই হোক দুপুরের পরে আমি আর আমার বন্ধু পাপন, দুইজনে মিলে রওয়ানা
দিলাম গুঠিয়ার উদ্দেশ্যে। প্রথমে বরিশাল, তারপর ওখান থেকে গুঠিয়া। মসজিদটি একদম রাস্তার পাশেই অবস্থিত। আমি বাস থেকে নেমে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম মসজিদটির দিকে। এ আমি কি দেখছি? তাজমহল দেখেছি ছবিতে আর আজ সামনাসামনি দেখছি তাজমহলেরই মিনিয়েচার, না জানি তাজমহল দেখতে কত সুন্দর! এই মসজিদের বর্ননা লিখে বা ছবিতে পুরোপুরি বুঝানো সম্ভব নয়। তারপরও কিছু শেয়ার করার বৃথা চেষ্টা করা হল!
মসজিদে ঢোকার মুখেই বিশাল গেটঃ
উল্লেখ্য যে এই গেটের পাশে আর ভিতরের অনেক জায়গায় হিডেন লাইটিং করা আছে যার সৌন্দর্য্য টের পেয়েছি রাতের বেলা।
এই রাস্তার সোজাসুজি হচ্ছে পাবলিক টয়লেট, ডানদিকে হচ্ছে সিড়ি বাধানো পুকুর ও গাড়ি পার্কিং এর জায়গা আর বামদিকে রয়েছে একটি স্তম্ভ(২১টি পবিত্র স্থানের মাটি আছে এর মধ্যে), মসজিদের প্রবেশ পথ এবং তারপরে এতিমখানার প্রবেশপথ।
এটা হচ্ছে পুকুরের ঘাট যেখানে মুসল্লিরা ওজু করেন।
পুকুর এর পাশেই এই ফলক, নির্মান বিষয়ক বিস্তারিত দেয়া আছে এখানে ।
এটা হচ্ছে গাড়ি পার্কিং এরিয়া। এই পার্কিং এরিয়ার পাশ দিয়ে একটা রাস্তা গেছে যেখানে রয়েছে এই মসজিদ নির্মাতা “এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু”’র কবরের জন্য নির্ধারিত স্থান এবং ছোট করে একটা নার্সারির মত। এই নার্সারিটা অতি ছোট পরিসরে হলেও অনেকধরনের গাছের চারায় সমৃদ্ধ। কত ধরনের যে গাছের চারা, দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি।
এটি হচ্ছে গেট দিয়ে ঢোকার পরে বামদিকের স্তম্ভটি। এই স্তম্ভটিতে আছে ২১টি পবিত্র স্থানের মাটি।
এই হচ্ছে মসজিদে ঢোকার পথ, রয়েছে দুইদিকে দুটি ফোয়ারা।
মসজিদের পাশে এটা হচ্ছে এতিমখানার প্রবেশ পথ।
মসজিদটি প্রায় ১৪ একর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত এবং এটি নির্মান করতে প্রায় এক লক্ষ সত্তর হাজার শ্রমিক শ্রম দিয়েছে। এর ভেতরে একত্রে ১২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের পিছনে রয়েছে ১টি হেলিপ্যাড। সম্পূর্ন মসজিদ প্রাঙ্গন সু-পরিকল্পিতভাবে ঘাস দিয়ে ঢাকা। রয়েছে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজ আদায়ের স্থান। ৪টি পিলারের উপর ৯টি গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি এক অনণ্য স্থাপত্যশৈলীর স্বাক্ষর বহন করছে।
অনেক দর্শনার্থী আসেন প্রতিদিন এই মসজিদটি দেখতে। দেখলাম কিছু ভিন্ন ধর্মাবলম্বীও আছেন যারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন মসজিদের সৌন্দর্য্য, দেখে ভালই লাগলো।
নিচে আরও কিছু ছবি দেয়া হল।
মসজিদের ভেতরের ছবিঃ
বি.দ্রঃ ছবিগুলো আমার মোবাইল এর ক্যামেরা দিয়ে তোলা, তাই ভালো মানের ছবি দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত!
ভবঘুরে স্বপ্নগুলো..... রক্তের গ্রুপঃ A+