টপিকঃ মাদকের আগ্রাসন রোধে সরকারের পদক্ষেপ
মাদক এখন দুনিয়া জুড়েই এক ভয়াবহ সমস্যার নাম। প্রায় প্রতিটি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে মাদকের সম্পর্ক। এ মুহূর্তে ইয়াবা নামের মাদকের আগ্রাসন দেশের যুব সমাজের জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলার জন্যও তা সমস্যা সৃষ্টি করছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে আরও কড়া আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ইয়াবাকে ‘ক’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য ঘোষণা এবং এর পাচার ও বিপণনকে কঠোর অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে এর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে প্রচলিত আইনের সংশোধনী আনা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য মানুষের বোধশক্তি কেড়ে নেয়। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মাদকসেবীরা। মাদকের প্রভাবে মানুষ জড়িয়ে পড়ে অপরাধের সঙ্গে। মাদকের অর্থ জোগাতে স্ত্রী এমনকি সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। সর্বগ্রাসী এই মাদকের আগ্রাসন বন্ধে যৌথবাহিনী গঠনের পরিকল্পনাও করছে সরকার। এই যৌথবাহিনী দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান চালাবে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপের ফলে মিয়ানমার সরকারও বাংলাদেশে মরণ নেশা ইয়াবার পাচার ঠেকাতে আন্তরিক তৎপরতা চালানোর প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। বাংলাদেশে যাতে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে দেশটি। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ইয়াবা বন্ধে যৌথভাবে অভিযান চালাবে। নাফ নদীতে মাছ ধরার সূত্র ধরেই মিয়ানমার থেকে সবচেয়ে বেশি ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার হয় বলে বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ফলে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধে নাফ নদীতে ১৫ দিন পরীক্ষামূলকভাবে মাছ ধরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে কবে নাগাদ নাফ নদীতে পরীক্ষামূলকভাবে মাছ ধরা বন্ধ করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। কিন্তু একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখা হবে ওই সময়ের জন্য জেলেদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে। সরকারের এ ধরণের সময়োপযোগী উদ্যোগ আর জন-সচেতনতার যুগলবন্দীতে বাংলাদেশে ইয়াবার সর্বগ্রাসী আগ্রাসন প্রতিহত হবেই। নানা সূচকের অব্যাহত অগ্রগতিতে বিশ্বের বিষ্ময়ে রুপান্তরিত হওয়া এ দেশ সকলের সর্বাত্মক প্রতিরোধে অচিরেই হয়ে উঠবে মাদকমুক্ত একটি সুস্থ রাষ্ট্রের প্রতিভূ। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় মাদকের নীল ছোবল থেকে মুক্ত হয়ে আগামীতে এ দেশের তরুণ প্রজন্ম সুন্দর, স্বনির্ভর, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফল হবে – এটাই সকলের প্রত্যাশা।