টপিকঃ মাথা উচু করে দাড়িয়েছে পদ্মাসেতুর স্বর্ণরঙা কাঠামো
দেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর মহাযজ্ঞ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। রাত-দিন শ্রমিকদের ব্যস্ততা, প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের কর্ম তৎপরতা পদ্মাসেতু নির্মাণে গতি আরও বেড়েছে। শীত মৌসুম সেতু নির্মাণ কাজের উপযুক্ত সময় হওয়ায় পুরোদমে কাজ অব্যাহত রয়েছে। রাত-দিন শ্রমিকদের ব্যস্ততা, প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের কর্ম তৎপরতা পদ্মাসেতু নির্মাণে গতি আরও বেড়েছে। শীত মৌসুম সেতু
নির্মাণ কাজের উপযুক্ত সময় হওয়ায় পুরোদমে কাজ অব্যাহত রয়েছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক চলছে জাজিরা সংযোগ সড়কে, দীপু মালাকারমাওয়া অংশে সেতুর বিভিন্ন অংশ ও সরাঞ্জম জোড়া লাগানো হচ্ছে। আর পদ্মার ওপারে নাও ডোবা থেকে পাঞ্চর মোড় পর্যন্ত জাজিরা ফোরলেন সংযোগ সড়কের ১২ কিলোমিটারের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ১১ কিলোমিটার। এ সড়কের মাঝখানে রয়েছে ডিভাইডার। ভারত থেকে আনা পাকুর পাথর এ সংযোগ সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে। যা দেশের অন্যতম সেরা শক্তিশালী ও টেকসই সড়ক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। সড়কটি আগামী ১৩ জানুয়ারি যান চলাচলের জন্য পুরোদমে প্রস্তুত হয়ে থাকবে। সবুজের ভাঁজে ভাঁজে অল্প-স্বল্প ছোট-ছোট বাড়ি-ঘর চোখে পড়বে। এসব বাড়ি-ঘরের বেশির ভাগই টিনের তৈরি এবং তা দোতালা। আছে রং-বেরংয়ের নকশা ও কারুকাজ। সড়কের দু'পাশের নাও ডোবা, শিকদার কান্দি, কেশবপুর, কুতুবপুর, পেডি ফিল্ড ও পাঞ্চর এলাকার এসব বাড়ি-ঘর প্রথম দর্শনে যে কারো মনকে মুগ্ধ করবে। সেই সাথে এখন পদ্মার বুকে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে স্বর্ণরঙা কাঠামো। দূর থেকে প্রথম যখন কাঠামোটি চোখে পড়ে তখনই বিস্ময়। এইতো পদ্মাসেতু। দুই দিকে জিকজ্যাক ডিজাইন। নদীর ভেতরে পিলারের ওপর বসেও গেছে সেই কাঠামো! বিস্ময়মাখা চোখে সামনে এগিয়ে যেতে ভ্রম ভাঙলো, না নদীতে নয় নদীর তীর ঘেঁষে উচু করে বড় বড় কংক্রিটের থামের ওপর বসিয়ে রাখা হয়েছে সোনালী রঙের কাঠামোটি। ওটাই মূল সেতুর স্প্যান। সুউচ্চ এই কাঠামো। যার নিচের অংশে থাকবে ট্রেন লাইন। উপরে কংক্রিটের ঢালাই পড়ে তৈরি হবে চার লেনের সড়ক পথ। এটাই পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো। ইস্পাতে তৈরি, তো ইস্পাত কঠিনতো হবেই। আর সে ইস্পাত যেনো তেনো কিছু নয়। খনি থেকে উত্তোলিত বিশ্বসেরা গলিত ইস্পাত ছাদের মধ্যে জমাট বেঁধে টুকরো টুকরো কিউবগুলো তৈরি হয়ে এসেছে চীন থেকেই। সর্বোচ্চ সতর্কতায় এই সেতুর ইস্পাতের মান নিশ্চিত করা হয়েছে প্রতি কিউবিক মিটার স্ট্রাকচারে গড়ে ৭ হাজার ৮০০ কেজি ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। সলিড ইস্পাতে তৈরি এই কিউবগুলোই জোড়া লাগিয়ে একেকটি পূর্ণাঙ্গ স্প্যান তৈরি হচ্ছে। স্প্যানগুলোতে রঙের প্রথম ছোপ লাগানো হয়েছে। সিজনড করার জন্য বাইরে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। রোদে শুকিয়ে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে এই স্প্যান যখন তার দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করবে তার পরেই তা বসানো হবে সেতুর কাঠামো হিসেবে। ততদিনে নদীর পেট ফুঁড়ে পানির উপরে মাথা তুলবে সবগুলো পিলার। এরই মধ্যে পিলারের পাইলিংয়ের কাজ ৬৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, সোনালী স্বপ্নের স্বর্ণরঙা সেতু আর নয় বেশি দূর।