RUSSEL13 লিখেছেন:উইলের সাথে ধর্ম কেন আসবে
এইটা দুঃখজনক... ধর্মবিশ্বাসের সাথে উইল কি সারাপৃথিবীতেই জড়িত ?
কারণ, আমাদের আইনগুলো যে আমলে তৈরী হয়েছিলো সে সময়ে অর্গানাইযড ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক প্রভাব ছিলো। রাষ্ট্রযণ্ত্র নিবিড়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলো। বাংলাদেশ সহ ভারতীয় উপমহাদেশের সিংহভাগ আইন ভিক্টোরিয়ান আমলের বৃটিশরা প্রণয়ন করে গিয়েছিলো - এবং তা মূলতঃ ইংলিশ আইনের ফটোকপি। ডেডুর উল্লেখিত এই আইনটাও অষ্টাদশ শতকের কপিপেস্টঃ
১৭৮১ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় জর্জের আমলে রেজিষ্ট্রেশন আইন সর্বপ্রথম বঙ্গীয় বিধিবদ্ধ আইন নামে প্রাদেশিক আইন হিসেবে জন্মলাভ করে।...
ভিক্টোরিয়ান বৃটেনে চার্চ অব ইংল্যাণ্ড ছিলো সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান। বৃটেনের অলিখিত সংবিধান রচনার পেছনে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ছিলো চার্চ। একদিকে বৃটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিকী প্রধান - সম্রাট নিজেও এ্যাংলিকান চার্চের প্রধান ছিলেন (বর্তমানে ক্যান্টারবারী বিশপ এই চার্চের প্রধান)। অন্যদিকে বিশপরা চালাতেন হাউস অব লর্ডস।
চার্চ অব ইংল্যাণ্ড খুব দৃঢ়ভাবে পলিটিকস ও রাজত্ব নিয়ন্ত্রণ করতো। অবিশ্বাসীদের কথা বাদই দিই, এমনকী ভিন্ন ধর্মবিশ্বাসীদেরও প্রতিহত করতো ইংলিশ চার্চ। ডিসেণ্টারস (প্রটেস্ট্যাণ্টদের একটা গ্রুপ), রোমান ক্যাথলিক, ইহুদীদের তারা পার্লামেণ্টে বসতে দিতো না - ধীরে ধীরে বহু দশকের পিটিশনের পরে ভিন্ন মতাবলম্বীরা পার্লামেন্টে বসার সুযোগ পান। এখানে চার্লস ব্র্যাডলাফের উল্লেখ আছে যিনি টানা ৬ বছর পরপর ৫ বার নির্বাচনে জয়ী হবার পরেও পার্লামেণ্টে ঢুকতে দেয় নি - তার ধর্মহীনতার কারণে। অবশেষে ১৮৮৫ সালের ইলেকশনে জয়ের পর চ্যালেঞ্জ করার পরে - বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পার্লামেন্টারিয়ান ও কয়েক লাখ পাবলিক পিটিশনারের সাপোর্ট পেয়ে - ১৮৮৬ সালে তিনি বৃটেনের প্রথম ওপেনলী এ্যাথিইস্ট পার্লামেণ্টারিয়ান হন। চার্লস ব্র্যাডলাফের অন্যতম ম্যানিফেস্টো ছিলো - ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক করা। খৃস্টধর্ম ত্যাগ করলে ভিক্টোরিয়ান বৃটেনে জেল হবারও বিধান ছিলো - জর্জ হলিওক ছিলেন বৃটেনের সর্বশেষ ব্লাসফেমী বিষয়ক কারাবন্দী (1842)।
রাষ্ট্র, অর্থনীতি, ধর্ম - এগুলো অলীক, বায়বীয় চিন্তা বা আইডিয়া - প্রাকৃতিক বাস্তবতা (physical reality)-র জগৎে এদের অস্তিত্ব নেই, এদের অবস্থান শুধুমাত্র আমাদের সমষ্টিগত মনমানসে। পেট্রাপোল বা বেনাপোলের ওপর দিয়ে খাবারের খোঁজে উড়ে বেড়ানো চড়ুই পাখিটা জানে না সে "বাংলাদেশ" নাকি "ভারত"-এর আকাশে প্রবেশ করেছে। তেমনি - টাকা-কড়ি যে আদতে রঙীন ছাপা কাগজ তা নরেন্দ্র মোদী-র কল্যাণে আমাদের প্রতিবেশীরা কঠিনভাবে শিখছে। ধর্মও তেমনি - পরাবাস্তব ফ্যাণ্টাসী, shared fantasy। এসব বিলিফ সিস্টেম তখনই কাজ করবে, যখন একাধিক মানুষ তা "বিশ্বাস" করতে আরম্ভ করবে। যত বেশি সাবস্ক্রাইবার বেইজ, ততই তার টিকে থাকার সম্ভাবনা জোরদার হবে। তবে যখন বিপরীতধর্মী কোনো আইডিয়া এসে গ্রাহক নিয়ে টানাটানি করবে, আইডিয়াটা অস্তিত্বের সংকটে পড়বে।
তাই আইডিয়া-র সবচেয়ে বড়ো শত্রু হলো ভিন্ন আইডিয়া। "ধর্ম" নামক আইডিয়ার অস্তিত্ববাদীয় শত্রু হলো "নির্ধর্ম" নামক আরেক আইডিয়া। ডারউইনিস্টিক এই বাস্তব জগৎে একটি ধারণা সিস্টেমের টিকে থাকার সংগ্রামের অন্যতম কার্যপ্রণালী হলো প্রতিযোগী আইডিয়াগুলোকে দাবিয়ে রাখা বা পারলে নিকেশ করা। সুতরাংঃ "ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন #৩): ধর্মত্যাগ করিলে সম্পত্তির ভাগ পাইবে না" 
আমরা যে বর্তমান বিশ্বে বাস করি তা মূলতঃ সেক্যুলার - পলিটিক্স থেকে ধর্মকে পৃথক করে ফেলা হয়েছে। তাই #৩ ক্লযের মতো ডাইনোসর যুগের অবশেষ দেখে অদ্ভূত আইন মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। আবার আমরা যদি ৩-৪ শতাব্দী আগে জন্ম নিতাম, তবে এই দফাটিই প্রাকৃতিক, যৌক্তিক, ন্যায্য বলে মনে করতাম।
দ্যা ডেডলক লিখেছেন:প্রশ্ন১ঃ ৬ নাম্বার পয়েন্ট টা বুঝলাম না। বাড়ি করলে কেন উইল বাতিল হয়ে যাবে ?
এটার উত্তর আমারও জানা নেই। মনে হয় ৫০০ বছর আগে কোনো এক টম ডিক বা হ্যারী বাপদাদার সম্পত্তি জমি দখল করতে গিয়ে ধরা খেয়ে গিয়েছিলো, তাই এটাকে উপধারা হিসাবে ঢুকিয়ে দিয়েছে...
NPR-এ আমেরিকার বিভিন্ন স্টেইটে যত বিদঘুটে বিদঘুটে আইন আছে তা নিয়ে একটা পডকাস্ট আছে.. নামটা মনে পড়ছে না, তবে ওয়েবেও ভুরিভুরি সাইট আছে এ নিয়ে, যেমনঃ Big Government. Small Brains. Dumb Laws.
থাইল্যাণ্ড পৃষ্ঠার ১ম আইনটি... 
Calm... like a bomb.