টপিকঃ জমজমাট হাড়-চর্বির ব্যবসা
পশুর চামড়ার বিশাল বাজারের পাশাপাশি হাড়-গোড় ও চর্বির জমজমাট ব্যবসার খবর অনেকেই জানেন না। প্রতিবছর ঈদ উল আজহার সময় প্রায় কোটির কাছাকাছি গরু, মহিষ কিংবা ছাগল কোরবানী দেয়া হয়। এসব পশুর হাড়, চর্বি, রক্ত, দাঁত এমনকি শিং ইত্যাদির অনেক চাহিদা রয়েছে। সারা বছর ধরে বিভিন্ন বাজার থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হলেও, তা জমে ওঠে ঈদের মৌসুমে। জৈনেক ব্যক্তি প্রায় ৪৫ বছর ধরে এই ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি জানান, এসব হাড় ওষুধ কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। তিনি নিজে কেজি দরে এগুলো কেনেন। কাঁচা হাড় কেজি প্রতি ১০ টাকা। আর শুকনো হাড় ১৮ টাকা। আর ২৩০০০ থেকে ২৪০০০ টাকায় প্রতি টন বিক্রি করেন। তার নিজেরই হাড় গুড়ো করার কল আছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, "পশুর কোনও অংশই ফেলনা নয়"। গরু মহিষের হাড় ছাড়াও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খুচরা ও পাইকারি কেনা-বেচা চলে এখানে। একজন ভিন্ন ধর্মের লোক লাভের কারণে প্রায় আট বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন পশুর হাড়, চর্বি, রক্ত, দাঁত ও শিং কেনাবচোর কাজটি। কোরবানীর পরদিনই তার সংগ্রহে চলে এসেছে ৩ টন। সব মিলিয়ে এখন তার সংগ্রহ ৪ টন। প্রথমে এগুলো খুচরা পর্যায়ে সংগ্রহ করার পর তাদের কাছ থেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়িরা কিনে নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে রপ্তানি করা হয়। কসাই নামে পরিচিত অনেকেই যারা কোরবানীর পশুর মাংস বানাতে কাজ করেন, তাদের অনেকেই বিভিন্ন বাড়ি থেকে গরুর শরীরের বিভিন্ন ফেলে দেয়া অংশ এনে এখানে বিক্রী করেন। হাজারিবাগ এলাকার ভেতর দিকে একজন নারীকেও দেখা গেল খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে হাড়সহ গরুর শরীরের বিভিন্ন অংশ কিনছেন। একটা সময় দেশের বাইরে পশুর শিং এর বেশ চাহিদা থাকলেও এখন আর সেই চাহিদা নেই। চাহিদা বেড়েছে হাড়, গরুর লিঙ্গ ও চর্বির। চর্বি সাবান তৈরির কাজে আর রক্ত শুকিয়ে খাবার তৈরি হয় পোল্টির ফার্মের জন্য। পশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে এই ব্যবসাটি কোরবানীর পশুর চামড়া ব্যবসার মত বড় না হলেও, এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে দেশের বাইরে। কিন্তু অনেকেই জানেন না বলে রপ্তানি আয়যোগ্য এসব দ্রব্যের বড় একটা অংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।