টপিকঃ উচ্চতা বৃদ্ধির সার্জারি
আমার উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট সাড়ে ৬ ইঞ্চি। এই ব্যাপারটা আমাকে কষ্ট দেয় অনেক। ব্যায়াম করলাম, হোমিও মেডিসিনও খেলাম কিন্তু যেই লাউ সেই কদু। কিছুই হচ্ছে না। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছি। ভাবছি অপারেশন করবো। বাংলাদেশে কোথায় এই সার্জারি করা হয়? খরচ কত?
তিন থেকে চার ইঞ্চি লম্বা হোন ডাক্তারি ফর্মুলায়
উচ্চতা নিয়ে অসন্তুষ্ট! সব সময় আফসোস করেন বলেন, ইস যদি উচ্চতা আরেকটু বেশি হতো!
আপনাদের মনোকষ্ট লাঘব করার সময় এসেছে।
এখন চাইলেই নিজের উচ্চতা বাড়াতে পারবেন। এর জন্য প্রথমেই আপনাকে পায়ের হাড় জোড়া ভাঙতে হবে!
না, না পাগলের প্রলাপ নয়।
নতুন এই পদ্ধতিতে উচ্চতা বাড়াতে হলে আপনার পায়ের ভাঙা হাড়ের সাথে লোহার রড জুড়ে দিতে হবে। এ পদ্ধতির নাম ইলিজারোভ। এ পদ্ধতিতে তিন থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব।
ইতোমধ্যে কয়েকজন এ পদ্ধতি অবলম্বন করে কয়েক ইঞ্চি লম্বা হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
এর মধ্যে রয়েছেন রোহান গুপ্তা (ছদ্ম নাম)। বয়স ২১ বছর। দিল্লির বাসিন্দা। লক্ষ্মৌ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।
এ পদ্ধতিতে উচ্চতা বাড়াতে নিজের পায়ের হাড় ভেঙেছিলেন তিনি। পরে তাতে লোহার রড জোড়া দিয়ে সাড়ে তিন ইঞ্চি উচ্চতা বাড়িয়েছেন। এতে খরচ পড়েছে ছয় লাখ রুপি (বাংলাদেশী মুদ্রায় সাত লাখ ৫৩ হাজার টাকা)।
উচ্ছ্বসিত রোহান জানান, চার মাস পর আমি যখন দাঁড়ালাম সব কষ্ট, যন্ত্রণা ভুলে গেলাম। মনে হলো স্বর্গে আছি।
আগে রোহানের উচ্চতা ছিল পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। আর এখন পাঁচ ফুট সাড়ে সাত ইঞ্চি। জানান, আগে ছোট ভাই আমার চেয়ে লম্বা ছিল। কিন্তু এখন আমি ওর চেয়ে লম্বা।
হায়দারাবাদের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী অমিত সুন্দরান (ছদ্ম নাম)। গত ২৩ জানুয়ারি সার্জারি করিয়েছেন। তিনি ইলিজারোভ পদ্ধতির মাধ্যমে তিন ইঞ্চি উচ্চতা বাড়িয়েছেন।
বলেন, বিশ্বাস করুন, উচ্চতা বাড়ানোর খুব প্রয়োজন ছিল। খাঁটো হওয়ার যন্ত্রণা যে কি- শুধু সামাজিকভাবে হেয় করা নয়, চাকরীতে প্রমোশনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে।
শুধু চাকরী নয়, বিয়ের ক্ষেত্রেও এ সমস্যায় ভুগেছেন চারু সিং। উচ্চতার জন্য এনগেজমেন্ট ভাঙার পর চারুর পরিবার তাকে সার্জারি করান। ইলিজারোভ পদ্ধতিতে চার ইঞ্চি উচ্চতা বাড়িয়েছেন। তার উচ্চতা এখন চার ফুট ১১ ইঞ্চি।
‘মানুষ আমার দিকে এমন করে তাকাতো, যেন আমি ভিন গ্রহের বাসিন্দা। তবে এখন তা হচ্ছে না। এ জন্য পশ্চিম দিল্লির শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের অর্থোপেডিক সার্জন ড. ওমর সারিনকে ধন্যবাদ জানান তিনি। রাশিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই সার্জন এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি সার্জারি করেছেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে এ ধরণের সার্জারি করে আসছেন।
ড. ওমর সারিন জানান, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে হাড় ভেঙে গেলে তা খুব বেশি বৃদ্ধি সম্ভব নয়- ইলিজারোভ পদ্ধতি এমন ধারণা ভেঙে দিয়েছে। খুব বেশি মানুষ এখনো এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে না। তবে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ছে।
অপরদিকে ভিন্ন মত দিল্লির গঙ্গা রাম হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন ড. মনিশ ধাওয়ানের। তিনি জানান, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সার্জাজির মাধ্যমে তারা মাঝেমাঝে শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে থাকেন। তবে এ পদ্ধতিকে তেমন সমর্থন জানাননি তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এ ধরণের পদ্ধতিতে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই যেমন- ইনফেকশন হতে পারে…. স্নায়ু সংক্রান্ত জটিলতাও দেখা দিতে পারে।