টপিকঃ ছোট্ট জীবনে ভ্রমণ করা স্থানগুলো (পর্ব-৮)
অপরিকল্পিত নগরায়নে গড়ে ওঠা আভিজাত্যের শহর বটে আমাদের রাজধানী ঢাকা।মানুষ তার প্রয়োজনে অনেক কিছুই গড়ে তুলেছে রাজধানীর বুকে।পরিকল্পিত নগরায়ন যেখানে অন্য দেশের শহরগুলোর সাধারণ ব্যাপার, আমাদের কাছে তা স্বপ্ন। তবে সেটি বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছে হাতিরঝিল প্রকল্পের মাধ্যমে।
রাজধানী শহরের একটি পরিকল্পিত নগরায়ন প্রকল্প হচ্ছে হাতিরঝিল। মতিঝিল থেকে হাতিরঝিলের উদ্দেশ্য মগবাজারের বাসে করে রওনা দিই।বাসভাড়া মাত্র ১০ টাকা।এরপর কিছুদূর হেঁটে গেলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে হাতিরঝিল।লাল ইটে মোড়া রাস্তা প্রবেশপথ। তার বাম পাশে উঁচু ঢিবির মত করে ছোট গাছ লাগানো হয়েছে।
আর কিছুদূর গিয়ে মোড় নিলে ডানপাশে দেখা যাবে সাদাকালো টালি দিয়ে করা হয়েছে দাবা খেলার ব্যবস্থা।আছে খেলার জন্য দু পাশে বসার আসনও। আর রাস্তা ধরে চলতে থাকলে দেখা যাবে দেশি বিদেশী নানা ফুলের গাছ,তাতে ফুল ধরেও আছে। তবে নাম জানা নেই অধিকাংশ ফুলেরই।এ ফুলটি দেখে বেশিই ভালো লাগলো তাই একটা ছবি তুলে নিলাম:
আর একটু এগুতেই পৌঁছে গেলাম হাতিরঝিলের ঝিলের সন্নিকটে।ছোটখাট পরিচ্ছন্ন একটা ঝিল।ঝিলের একপাড়ে ছোট ছোট ব্রীজের মত জায়গা তৈরি করা হয়েছে যেখানে দাঁড়িয়ে অপরদিকটাকে সুন্দরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
হাতিরঝিলের মূল আকর্ষণ হলো রাস্তার উপর নির্মিত ছাউনিময় আবরণটি।আর রাস্তার পেছনে আছে সম্ভবত বিদ্যুতের টাওয়ার।সে রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে অপর পাশটিকে খুব সুন্দর মনে হয়।
এছাড়াও আরেকবার বামে মোড় নিলে দেখা যাবে সম্ভবত কাঁচা মাটি দিয়ে উঁচু করে তার উপর টালি বসিয়ে নির্মিত কিছু উঁচু কৃত্তিম উপত্যকা।সে উপত্যকা পেরিয়ে ঘুরে আসতে আসতে ঝিলের উপর ব্রীজটির একটি সুন্দর ভিউ দেখা যাবে।
অতপর কাঙ্খিত সেই ছাউনিঘেরা রাস্তায় এসে চোখে পড়বে রাস্তাটির সৌকর্য। যার দুপাশে রয়েছে ঝিল। আর মাঝখানে ব্রিজের আদলে গড়ে তোলা সে রাস্তা।দু পাশে হাঁটবার জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা।আর ঝিলের চারপাশে রয়েছে ইট নির্মিত বসার জায়গা।
তবে হাতিরঝিল স্রেফ একটি পরিকল্পিত নগরায়ন প্রকল্প।কোন পর্যটন আকর্ষণ নয়,তবে অবসরযাপনের জন্য এ সাজানো গোছানো পরিকল্পনাটি হয়ে উঠেছে বিনোদনের এক অন্যতম মাধ্যম।
ঢাকার কারওয়ানবাজারে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম ও অভিজাত শপিং মল বসুন্ধরা সিটি(বর্তমানে যমুনা ফিউচার পার্ক যা বিশ্বেও তৃতীয়)।২১ তলা ভবনের প্রথম আটতলা শপিং মল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চূড়ায় রয়েছে একটি গোলাকৃতি ডোম।
এক তলা থেকে আরেকতলায় উঠতে বা নামতে আছে দু ধরনের ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিক সিঁড়ি ও ক্যাপসুল লিফট।গ্রাউন্ড ফ্লোরে আছে জিমনেসিয়াম সহ মোবাইল মার্কেট। তিন তলায়ও সম্ভবত মোবাইল মার্কেট এবং নকিয়ার অনেকগুলো স্টল রয়েছে।নিচ তলায় আছে বিভিন্ন অর্নামেন্টারি গাছের সমাহার।
চার তলা থেকে তোলা কমপ্লেক্সের দুটি দৃশ্য:
এছাড়া দোতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত রয়েছে হরেক রকমের বিপণী বিতান।কাপড়ের, গিফটের, খেলনার, ইলেকট্রনিক্সের, মোবাইলের, বাদ্যযন্ত্রের, জুয়েলারীর, অর্নামেন্টারির সহ যাবতীয় শৌখিন ও প্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিসের সন্ধান মেলে।আটতলায় অবস্থিত ফুডকোর্ট।কেএফসি, ম্যাকডোনাল্ডস সহ নামী দামী ব্র্যান্ডসহ প্রায় শ খানের ফুড স্টল রয়েছে সেখানে।বসুন্ধরা সিটিতে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক সিনেমা কমপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্স।
রাজধানী ঢাকার দুই পরিকল্পিত নির্মানশৈলীর চিহ্ন প্রদর্শন করলাম।যার একটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিং মল (বর্তমানে প্রথম যমুনা ফিউচার পার্ক)। আর একটি রাজধানী ঢাকার বুকে পরিকল্পিত নগরায়ন প্রকল্প হাতিরঝিল।