টপিকঃ নতুন প্রজন্ম
জঙ্গি দলের টার্গেট এখন শিক্ষিত উচ্চবিত্ত এবং প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। শিক্ষিত যুবকদের ব্রেনওয়াশ করে জিহাদি চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এজন্য বিদেশ থেকে ঘন ঘন ডেলিগেট আসছে। তারাও কৌশলে ইসলাম ধর্মের নানা দিক তুলে ধরে অত্যন্ত মেধাবী তরুণদের মগজ ধোলাই করছে। কথার জালে ফেলে কোমলমতি কিছু শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। বিত্তশালী পরিবারের পাশাপাশি দরিদ্র ঘরের মেধাবী সন্তানদেরও দলে টানছে তারা। অনেক ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রীর শিক্ষার ব্যয়ভার নিজেরা বহন করছে। শিক্ষার ব্যয় বহনের নামে কার্যত ওই ছাত্র বা ছাত্রীকে তারা কিনে ফেলছে। ভবিষ্যতে তারা এই চক্র থেকে আর বের হতে পারে না। ভয়াবহ এই জঙ্গি জালে প্রিয় সন্তান কখন জড়িয়ে পড়েছে প্রথম দিকে পরিবারের অন্য সদস্যরা তা জানতেও পারেন না। যখন বুঝতে পারেন তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। ধর্মের সেবা করার নামে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তি মনস্ক তরুণ-তরুণীদের দলে টানছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। বিত্তশালী পরিবারের সন্তানরা বাবা-মায়ের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে ভিড়ে যাচ্ছে উগ্রপন্থী জঙ্গিদের দলে। আগে জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা ছিল মাদ্রাসাকেন্দ্রিক। তখন মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের দলে টানা হলেও এখন নতুন কৌশল নিয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। এসব সংগঠনের নেতারা দলে টানছে আইনজীবী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তার সন্তান, ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনের সন্তানদের। আগে জঙ্গিদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষার অভাব ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিক্ষায় দক্ষরাও নেতৃত্ব দিচ্ছে। সুপ্রিমকোর্টের ব্যারিস্টারও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্রেফতার হচ্ছে। এগুলো অশুভ ইঙ্গিত বলে আশা করা যাচ্ছে। জঙ্গিদের জন্য বিভিন্ন কৌশলে টাকা আসে। দেশের একটি ব্যাংক ছাড়াও বাইরের দেশ থেকে টাকা আসছে। শুরুতে জেএমবি বা জেএমজেবি’কে সক্রিয় দেখা গেলেও দিনে দিনে প্রকাশ্যে আসতে থাকে অন্তত ডজনখানেক সংগঠনের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত তরুণ ও যুবকের জঙ্গি কার্যক্রমে প্রবেশ তারই নতুন মাত্রা। এটা রোধে আইন-শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি ঘরে ঘরে অভিভাবকদের আরও সজাগ ও সচেতন হতে হবে। তার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, সে কী আদর্শ লালন করছে তা ভাবার ও যাচাই করার সময় এসেছে।