টপিকঃ অবশেষে, ল্যাপটপ এক্সপেরিয়েন্স আপগ্রেড
প্রথম ল্যাপটপ কেনা হয়েছিল ২০১০ এ, আগষ্টে। প্রায় ৫ বছর ধরে। ওইসময়ে ওইরকম আনকমন ল্যাপটপ তেমন একটা ছিল না। কেনার পরে আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতা হলো, প্রোবুক লাইনআপ আসলে বেশ ভাল। মোটামুটি ডেক্সটপ ক্লাস! ইনফ্যাক্ট এখনো সেটা বেশ আরামেই চালিয়ে দেয়া সম্ভব, জিপিইউ কোন কারনে দুর্বল আচরন করে, ব্যাটারী ব্যাকআপ নিতান্তই অপ্রতুল, এইটুকু বাদে আমি সম্ভবত আমার প্রোবুক দিয়ে আরো ৫ বছর আরামেই চালিয়ে দিতে পারবো। সিপিউ কম্পিউটিং পারফর্মেন্স বেশ ভালই।
কিন্তু ৫ বছর, দীর্ঘ সময়, অনেক কিছু চেঞ্জ হয়েছে, টেকনোলজী ইমপ্রুভ হয়েছে, চাহিদা পরিবর্তন হয়েছে। কাজেই একটা সময় বুঝতে শুরু করলাম ল্যাপটপ টা চেঞ্জ করা দরকার, ১৫" ল্যাপটপ আমার দরকার নেই, বেশ বড় হয়ে যায়, ভারী জিনিস, কাধে নিয়ে সবসময় ঘুরতেও বেশ ঝামেলা, ব্যাটারী ব্যাকআপ ভুগায় বেশ, আর কাজকর্মের জন্য কিছু সমস্যা করেই (শেষের দিকে লিনাক্স বিল্ডগুলো প্রচন্ড যন্ত্রনা করতো, জিপিউ অতিরিক্ত বাজে পারফর্ম করতো, অবশ্য উইন্ডোজ ১০ বেশ ভালই পারফর্ম করে)
যাইহোক, প্ল্যানিংটা বেশ আগে থেকেই মাথায় ছিল, সেই কারনে টাকাও জমছিল একটু একটু করে। যাইহোক, টাকা জমার পরে আবিস্কার করলাম Broadwell এর জন্য ওয়েট করা বেটার হবে (অন্য কিছু এক্সপেক্টেশনও ছিল, সেগুলা সত্য হয় নাই )
প্রোডাক্ট অর্ডার করলাম জুনের ২২ তারিখে। ছোট ভাই একটা মালয়শিয়াতে থাকে, ওর কাছে পাঠাবে, সে নিয়ে আসবে সেখান থেকে। অর্ডার প্লেস করার পর Apple মেইল পাঠালো যে ওরা চায়না তে অর্ডার পাঠিয়েছে, দুইদিন পরে ওরা শিপ করে দিলো DHL এ করে। ট্রাকিং নাম্বারও সাথে দিয়ে দিলো। সব কিছু পার হয়ে সম্ভবত ২ তারিখে ছোট ভাইয়ের বাসায় পৌছে দিয়ে গেল ওরা। পাক্কা ১০ দিন লাগলো। (রোযার মধ্যে শিপিং এর কাজকর্ম সব রাতেই করেছে, ট্রাকিং এ সবকিছু দেখাই যাচ্ছিল) যাইহোক, ছোট ভাই ঢাকায় ল্যান্ড করলো ৬ তারিখ রাত ১১টায়। ওকে পিক করে সোজা ওর বাসায়।
অপেক্ষা করার একটা সম্ভবত লিমিট থাকে, আমি প্রায় অন্তহীন সময় অপেক্ষা করেছি, ছোটভাইটা যখন ম্যাকের প্যাকেট টা হাতে তুলে দিলো, ঠিক তখন এক্সাইটমেন্টের কারনে কোন রকম এক্সাইটেডই ফীল করছিলাম না আর।
জাস্ট "আমি পাইলাম, ইহাকে পাইলাম"
স্পেক ওয়াইজ মোটামুটি সিম্পল:
RAM টা কাস্টমাইজ করেই ফেললাম, রিস্ক নিতে চাচ্ছিলাম না কোন।
ওভারঅল এক্সপেরিয়েন্স:
রেটিনা দেখতে শুনতে ২০১২ থেকে প্রায় একই রকম, তেমন এক্সটেরিয়র চেঞ্জ নাই। সবই ইন্টেরিয়র ইমপ্রুভমেন্ট। কী পয়েন্টগুলো মেনশন করতে পারি।
ভাল! বেশ ভাল। ব্যাটারী ব্যাকআপ মোটামুটি আমি সারাদিন অফিসে ব্যাটারী মোডেই চালিয়েছি বাসায় এসে পাওয়ার কানেক্ট করেছি সম্ভবত রাত ১টার দিকে। মোটামুটি ১১ ঘন্টার মত ব্যাকআপ পাওয়া গেছে।
এনয়িং পার্টগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে, ফ্যান কন্ট্রোল, এই জিনিস অনায়াসে টেম্পারেচার রাইজ করে লোড পড়লে। ফ্যান কিক ইন করে না সহজে। নরমালী অবশ্য ৪৭ এর মধ্যে থাকছে এখনো। লোডে ৭০ পর্যন্ত গেছে। ফ্যান যতখানি কিক ইন করতে পারতো সেটা করে নাই বলেই ধারনা আমার।
ফোর্স টাচ: This Thing Is Truly Creepy! বন্ধ থাকলে কোন বাটন ফীডব্যাক নাই জিনিসটা এক্সেপ্ট করা আসলেই টাফ! ওভারঅল সেনসিটিভিটি ভাল, ফোর্স টাচ থাকায়, ৩ ফিঙ্গার জেসচার গুলো অন্য ফাংশনে ব্যাবহার করা যাচ্ছে। ( ফোর্স টাচের জেস্টারগুলো সবগুলা নতুন না, কিছু আগেও ছিল আসলে)
এসএসডি: পুরাই কিলার একটা জিনিস! ব্র্যাগ করার মত জিনিস আসলে
২৫৬ গিগা নিয়ে খানিকটা কনফিউশন থাকলে আমার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। স্পেস নিয়ে ঝামেলা হয় নাই।
পারফর্মেন্স বেশ ভাল! অন্তত ২ সেকেন্ডে ফটোশপ সিসি ২০১৫ চালু করে ফেলতে পারলে আমার কমপ্লেন করার তেমন জায়গা নেই। এখন পর্যন্ত স্টার্টআপে একমাত্ দেরী করে PHPStorm সেটাও অনায়াসে আমি ইগনের করতে পারি অন্যান্য ডিস্ক পারফর্মেন্সের তুলনায়।
সবশেষে, আমার কারেন্ট ডেস্কের ওভারঅল একটা ভিউ ( প্রোবুকটা পাশের টেবিলে থাকে অবশ্য, জাস্ট কম্পারিজনের জন্য পাশে রেখে দিলাম, লিটারেলী, ProBook Height = 2x MacBook Pro)
সবশেষে, ম্যাক কিনে টাকা শেষ + ২ মাস স্যালারী পাই নাই, কাজেই ট্রিটটা আর দেয়া হলো না।
পুনশ্চ: উইন্ডোজ ? ছেড়ে দিচ্ছি না, এক্সপেরিমেন্ট থাকবেই ওটা নিয়ে টুকটাক, তবে সেটার জন্য সময় বের করতে হবে খানিকটা, আপাতত বেশ বিজি।