টপিকঃ চকচকে বর্ম পড়া রাজপুত্র কখনো যুদ্ধক্ষেত্র দেখেনি
ছোটবেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। শিক্ষামুলক গল্প। এক মা এর নিজের একটি বাচ্চা আছে। আবার একটা সৎ বাচ্চা আছে। দুজনেই ছোট বাচ্চা। তো মা সৎ সন্তানটাকে কোলে কোলে রাখতো সারাক্ষন। কখনোই নিচে নামাতো না। অপরদিকে নিজের ঔরসজাত বাচ্চাকে সবসময় রাস্তায় হাটাতো। কোলে নিতোনা বললেই চলে। কোনো যায়গায় গেলে হাটিয়ে হাটিয়ে নিতো আর সৎ সন্তানকে কোলে নিয়ে যেত। সবাই তো তাকে বাহবা দিতে লাগলো তার এই মহানুভবতায়। একদিন একজন জিজ্ঞেস করলো যে সে কেন নিজের বাচ্চাকে রাস্তায় হাটায়, কষ্ট করায়, আর অপরের বাচ্চাকে কোলে কোলে রাখে। জবাবে মা বলে, তারা বড় হলে কোল বলে কিছু থাকবেনা। কন্টকপূর্ন রাস্তায় তাদের চলতে হবে। তাই আমার বাচ্চাকে আমি হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছি ভবিষ্যতের জন্য তৈরী করতে। সে যাতে ভবিষ্যতে এই কষ্টের পথ এখন থেকেই অতিক্রম করা শিখে। আর সৎ বাচ্চাকে কোলে কোলে রেখে পঙ্গু করছি। ছোটবেলায় এ গল্পের মানে বুঝতামনা। মানুষকে জিজ্ঞেস করে পরে জানতে পেরেছিলাম মানে।
যাই হোক, এ গল্প বলার কারন হলো অনেক প্যারেন্টসদের দেখি তাদের সন্তানকে মাত্রাতিরিক্ত আগলে রাখে। একা কোথাও যেতে দেবেনা। কোথাও গেলে ৩০ বার ফোন করে খোজ খবর নেয়া। পৃথিবীটা কঠিন। সর্বদা ফ্যামিলিকে পাওয়া যাবেনা। অনেক সময় নিজের বুদ্ধি খাটিয়েও অনেক কিছু করা লাগবে। প্যারেন্টসরা এমন করার কারনে তার মধ্যে এই বাধাসমূহ অতিক্রম করার ক্ষমতা থাকেনা। বাস্তব জীবনে তারা কাল্পনিক পঙ্গু হয়ে যায়। বর্ম চকচক করলেও সেটা পড়া রাজপূত্র কখনো যুদ্ধক্ষেত্র দেখেনি। বাস্তবতা মানুষকে অনেক কিছু শিখায় যা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে শেখা অসম্ভব। এসব অভিজ্ঞতা তাকে ভবিষ্যতে সাহায্য করবে।