টপিকঃ পরীক্ষার হলে একটা হাসির বাকসো আছে
১.
পরীক্ষার প্রথম ঘন্টা।
স্যার বললেনঃ কেউ নকল করবেনা। সুন্দরভাবে পরীক্ষা দাও ।
বল্টু টুকিটাকি ,ছোট ছোট কাগজে নানা স্টাইলে ,বিয়াপক গবেষণা করে বের করা পদ্ধতিতে আগের রাতে পাওয়া প্রশ্নপত্রের ৩টি টুকরো কাগজে বাড়ি থেকে লিখে আনা উত্তরমালাটি বের করে মহাআনন্দে লেখা শুরু করল।
পরীক্ষার দ্বিতীয় ঘন্টায়
স্যার বললেনঃ আমি আবারও বলছি। কারও কাছে নকল থাকলে জমা দিয়ে দাও।
বল্টু একটি টুকরো সুবোধ বালকের মত জমা দিয়ে দিল।
তারপর পরবর্তী কাগজটা থেকে আবার মহানন্দে লেখা শুরু করল ।
পরীক্ষার তৃতীয় ঘন্টা
স্যার এবার বেশ কঠোরভাবে আদেশ দিলেন ,কারও কাছে নকল থাকলে এখুনি দিয়ে দাও। একবার খাতা নিলে কিন্তু আর ফেরত পাবেনা।
বল্টু ভয়ভয় মুখ করে দ্বিতীয় কাগজটা দিয়ে দিল। স্যার বীরের মত মুখ করে সেটাকে বাইরে ফেলার দায়িত্ব পালন করলেন।
পরীক্ষার শেষ মূহুর্ত
স্যার গর্জন করিয়া উঠিলেন (যে রীতিমালায় ভয়ঙ্কর সাধু ব্যক্তিদের কাহিনী বর্ণনা করা হয় তাহাকেই সাধু ভাষারীতি বলে।)
, ইস্টপ রাইটিং ,ইস্টপ রাইটিং !
খাতা জমা দাও।
পেছন হইতে বল্টু হাকিল , স্যার আরও একটা কাগজ আছে ,এইটা একটু ফালায়া দিয়া যান। পরীক্ষা দিয়ে বড়ই কেলান্ত হয়েছি।
২.
স্যার গর্জন করিয়া একটা মেয়েকে নকলরত অবস্থা থেকে হাতেনাতে ধরিয়া ফেলাতে মেয়েটা নতমুখে দাড়াইয়া হেচকিয়া হেচিকিয়া কান্দিতে লাগিল।
স্যার ওহাকে মূল্যবান কিছু উপদেশ দিয়া ,আদর করিয়া নকল বিসর্জনে সম্মত করাইয়া যেই নকলখানা জানালা দিয়া ফেলিতে গেল অমনি নকলবাজ মেয়েটা ভ্যা করে এমন চিত্কার করিয়া উঠিল যে স্যার ভয় পাইয়া আর নকল বিসর্জন না করিয়া পুনরায় ওহার নিকট সমর্পন করিয়া দিলেন।
৩. পরীক্ষার আড়াইঘন্টা পার হইয়াছে। কানাই বহু কষ্টেও সে তার ক্ষুদ্র কাগজে কি লিখিয়া আনিয়াছিল তাহার মমার্থ বুঝিতে না পারিয়া ভ্যাবলার মত বসিয়া রহিল। অতঃপর পাশের ছেলেটিকে ডাকিয়া কহিল ,ভাই তোমার কি প্রথম খাতাখানা লেখায় পরিপূর্ণ হইয়াছে ?
পাশের ছেলেটি কহিল ,না ভাই । আরেকপাতা বাকি আছে।
তত্ক্ষনাত্ ভ্যাবলা নকলবাজ ছেলেটি বজ্রের ন্যায় হাকিয়া কহিল ,সারা বছর পড়িয়া কি করস ? আড়াই ঘন্টায় যদি প্রথম খাতা না ভরাইতে পারস তাহলে এ পিলাচ কুড়াইবি ক্যামনে ? ধিক তোকে ! আমি যদি ফেইল করিতো সবদোষ তোর কাঁধে।
স্যার তাঁহাদের এই বাক্যালাপে বড়ই অসন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন , ঐ কথা কয় কে ? খাতা কিন্তু লইয়া যামু ...
ভ্যাবলা বড়ই বিরক্ত হইয়া উঠিয়া গিয়া স্যারের সম্মুখ্যের টেবিলের নিচে রাখা বই আনিতে গিয়া তত্ক্ষনাত্ বাঁধাপ্রাপ্ত হইয়া কহিল ,কথাও কইতে দিবেন ,বইও দিবেন না। তাইলে পরীক্ষা দিমু ক্যামনে ? যে প্রশ্ন আউট হইছে ওহাও তো মিলে নাই !
তাঁহার অতি ন্যায্য অধিকার দাবী দেখিয়া স্যারের মুখখানা একখানা চমত্কার গোলকে রুপান্তরিত হইল ।