প্রথম কথাঃ
আপনি একুশের ইউনিজয় কিংবা অভ্র-র ইউনিবিজয় যেই লেয়াউটই ছাপান না কেন সেটা বিজয় দশহাতের মধ্যে থাকলেও জব্বার কাকু গ্যাঞ্জাম করবেই। আর আইনিভাবে(!) এইদিক দিয়ে তার অবস্থান একটু পোক্ত।
দ্বিতীয় কথাঃ
অভ্র-র সাথে আরো দুটো লেআউট দেয়া থাকলেও আমাদের অভিজ্ঞতা বলে অভ্র জনপ্রিয় তার ফোনেটিকের কারণে। শতকরা ৯৬-৯৭ জন অভ্র ব্যবহারকারিই ফোনেটিক ব্যবহার করে।
তৃতীয় কথাঃ
বিজয় ছাপাওয়ালা কীবোর্ড কিনলেও সবাই কিন্তু বাংলায় লিখে না (উদাহরণস্বরুপ আমার চাচাসহ বেশ কয়েকজন বন্ধুর কথা বলতে পারি)। এইখানে প্রযুক্তি সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে নতুন লেআউট শেখার অনীহা। আবার যারা একবার বিজয় লেআউট শিখে ফেলেছেন তাদের কয়জন আবার নতুন করে আরেকটা লেআউট শিখতে চাইবেন? ফোনেটিকে এই ঝামেলা নেই।
চতুর্থ কথাঃ
বিজয় একটা কমন ফেনোমেনোন। এইদিকে আবার জব্বার কাকু দাড়িয়ে আছেন বাঁশ নিয়ে। এখন যদি নতুন করে মার্কেট ধরতে হয় তবে প্রয়োজন নতুন কিছু। এমন কিছু যেটা বিজয়ের চাইতে কাজ করবে ভালো। লোকজনের সুবিধা হবে টাইপ করতে। এইদিক থেকে চিন্তা করলে কিন্তু বিজয়ের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে ফোনেটিক। মোট কথা, নতুন সুবিধা, নতুন মার্কেট।
পঞ্চম কথাঃ
অভ্র নিয়ে আপনি চাইলে এমনিতেই ব্যবসা করতে পারবেন। এতে করে ওমিক্রনল্যাবকে কোন পয়সা দিতে হবে না। তবে ভালো হয় যদি ওমিক্রনল্যাবের সাথে পরামর্শ করে নেন। এতে করে অভ্র-র সাথে জড়িতদের জনপ্রিয়তার অতীত ইতিহাসের (কেন জনপ্রিয়, কিভাবে জনপ্রিয় হল, লোক আসলে কি রকম জিনিস পছন্দ করে, এর সমস্যা কি কি...) সাথে সাথে আরো অনেক কিছুই শেয়ার করতে পারবেন। এমন কি চাইলে শুরুর সময় স্প্যাশ স্ক্রিনে অভ্রর সাথে সাথে আপনার বন্ধুর কীবোর্ডের ব্যান্ডের নাম+লোগো দেখাবে এমনটাও করা সম্ভব। কিছু কিছু জিনিস কাস্টোমাইজ করে নিতে পারবেন যেমন শুধুমাত্র অভ্র ইন্সটল করলেই বাংলা লেখাপড়া সম্ভব হবে। আলাদা করে আর কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট ইন্সটল করা লাগবে না।
ষষ্ঠ কথাঃ
এই মুহুর্তে অভ্র ৪.৫ নিয়ে কোন প্ল্যান না করাই ভালো। কারণ অভ্র-র ৫ নম্বর ভার্শনে বেশকিছু চমকে দেয়া ভাল জিনিশ আসছে। যুক্ত হচ্ছে ইন্টিলিসেন্স। এবং এটা আসছে এইরকম কীবোর্ডের সাথে বিতরণের উপযোগী হয়েই।
অতএব, মোট কথা ব্যবসার কথা যদি ভাবেন, বিজয়ের ঘাড়ে কামড় বসাতে চাইলে অভ্র একটা খুবই ভালো অপশন।
" 'কত বড়ো আমি' কহে নকল হীরাটি। তাই তো সন্দেহ করি নহ ঠিক খাঁটি॥ " - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর