টপিকঃ মুখোশ সিরিজ -৩: পাগলাগারদে ফোরামিকেরা
আগের দুটি পর্ব
পর্ব-১: ফোরামিকদের একটি স্প্রিং ব্রেকের ছবি নিয়ে তোলপাড় ও আমাদের ভাবনা
পর্ব-২: বেশী পরিমানে লুল হবার কারণে তা ফোরামে দেওয়া যায় নাই। অন্য স্থানে দেওয়া হয়েছে। স্থানের লোকেশন উদা দাদা কাছে থেকে জেনে নিতে পারেন।
ছবিপু এক বিখ্যাত পাগলের ডাক্তার। তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি হাসপাতাল দেখতে বের হয়েছেন। সঙ্গে আছে হাসপাতালের পুরান দুই নার্স জলু (জল কণা) ও নাজু(নাদিয়া জামান)।
একে একে হাসপাতালের টপ মোস্ট উন্মাদের সাথে দেখা করে তাদের কেস হিস্ট্রো শুনবে এটাই প্রথম দিনের শিডিউল ছবিপুর।
পেশেন্ট#১ রুমে বসে এক উন্মাদ একটি খেলনা প্লেন এই দিক হতে সেই নিয়ে যাচ্ছে। আর মুখ দিয়ে বলছে শুই শুই শুই।
ছবিপু : এর কি হয়েছে ?
জলু: এর নাম মুজ্জি(আহমাদ মুজতবা) আমেরিকাতে গিয়ে ছবি তুলতে তুলতে পাহাড় থেকে পড়ে মাথার শর্ট সার্কিট হয়ে গেছে।
নাজুঃ শুধু তাই না তাকে যখন দেশে বিমান থেকে আনার ঘটনা শুনলে আপনি শক খাবেন !
ছবিপু : কি হয়ে ছিল ?
নাজুঃ তাহলে শোনেন " আমেরিকা থেকে এক বিমান ভর্তি করে পাগল আনা হচ্ছিল তখন পুরো বিমানটিতে পাগলগুলো চিৎকার করে শব্দ-দূষণ করছিলো এবং এতে পাইলট এর প্লেন চালাতে খুবই অসুবিধা হচ্ছিলো।
হঠাৎ করে মুজ্জি কিভাবে যেন পাইলট এর কেবিনে ঢুঁকে পড়লো।
মুজ্জি পাইলটকে বলল, ভাই তুমি কিভাবে প্লেন চালাও আমারে একডু শিখায় দাও। আমি কালকেই একডা প্লেন
কিন্না নিজে চালায়া লং ড্রাইভে যামু।
পাইলটঃ আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু একটা শর্ত আছে।
পাগলঃ কি শর্ত?
পাইলটঃ আপনি যদি আপনার বন্ধুদের শান্ত করে এই প্লেনে হওয়া শব্দ-দূষণ বন্ধ করতে পারেন। আমার প্লেন চালাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।
পাগলঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
[১০ মিনিট পরে প্লেন একদম শান্ত!!]
মুজ্জি এসে পাইলটকে বলল,
মুজ্জিঃ হ্যা ভাই, এখন শিখান।
পাইলটঃ Wow!! খুবই চমৎকার আপনি কিভাবে উনাদের শান্ত করলেন?
মুজ্জিঃ আমি গিয়া প্লেন এর দরজা খুইল্লা সবাইরে কইলাম ” কেও এখানে শব্দ কইরো না, যাও সবাই বাহিরে গিয়া খেলোগা”"
ছবিপু : (মুখে গম্ভীর ভাব এনে) হুম, চল পাশের রুমে যাই ।
পেশেন্ট#২ একটি রুগী পেট ধরে কাতরাচ্ছে ।তা দেখে
ছবিপুঃ কি হয়েছে এনার পেটে ?
জলুঃ এনার নাম ফ-লাশ (পলাশ মাহমুদ)। একদা এনার গার্লফ্রেন্ড কুলসুম বেগম আমাদের হাসপাতালে এসে বললো , ডাক্তার সাহেব, আমি খুব বিপদে পড়েছি। আমার বয়ফ্রেন্ড একটা আজব রোগে ভুগছে !!
ডাক্তারঃ কি হয়েছে আপনার বয়ফ্রেন্ডের ??
কুলসুম বেগমঃ ও মনে করে, ও একটা ঘোড়া গিলে ফেলেছে !!
ডাক্তারঃ বলেন কি? নিয়ে আসুন উনাকে।
তারপর দিন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে কুলসুম বেগম । ডাক্তার তাকে বেডে শুইয়ে দিলো এবং ইনজেকশন দিয়ে বেহুঁশ
করে ফেললো। এরপর ডাক্তার সাহেব একটা ঘোড়া জোগাড় করে আনলো।
একটু পরেই ফ-লাশ হুঁশ ফিরে এলো।
ডাক্তার ফ-লাশ কে বললঃ ওয়েলকাম, আপনার অপারেশন সাকসেসফুল !! আপনার পেট থেকে ঘোড়াটি বের করা হয়েছে !!
ফ-লাশ ঘোড়াটার দিকে তাকালো এবং চিৎকার করে উঠলো বললো ,ফাইজলামি করেন? আমি তো সবুজ ঘোড়া গিলছিলাম,
এটা কাল কেন ???
নাজুঃ এরপর থেকে তিনি আমাদের হাসপাতালেই আছেন। এখন সবুজ ঘোড়া কোথা থেকে পাবো আমরা ?
ছবিপুঃ ওহ! সো স্যাড।
পেশেন্ট#৩
পাশের রুমে গিয়ে ছবিপু দেখলো যে একটি লোক সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকছে । ছবিপু মুগ্ধ হয়ে জলু কে প্রশ্ন করলো, এনার নাম কি ? ইনি তো আর্টিস্ট মানুষ মনে হচ্ছে । এনার কি সমস্যা ?
জলুঃ ম্যাডাম আস্তে কথা বলুন । এনার নাম অরু(অরুণ)। মহিলা দেখবে এনার মাথা নষ্ট হয়ে যায় ?
ছবিপুঃ কেন কি হয়েছে এনার ?
নাজুঃ অরু একটু লুল টাইপের পাবলিক ছিল। এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এনার এক বদ বন্ধু যার নাম উদা(উদাসিন)। সে বার বার মেয়ে সেজে এসে এনার সাথে খাতির করতো। যেই অরু সেই মেয়েটি কে ভালোবেসে ফেলতো তখনই উদা তার মুখোশ খুলে ফেলে চমকে দিত অরু কে। এরপর থেকে কোন মহিলা দেখলেই সেই মহিলার চুল ধরে টান দেয়। মহিলা টি আসলেই মহিলা কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য। এমন কি জলু ও আমার মাথার চুল টেনে শিওর হয়েছেন আমরা মহিলা কিনা!
কথা শেষ হতে না হতেই অরু চোখ ছবিপুর ওপরে পরে। সে তখন বলে,
অরুঃ ওরে! উদা তোকে আমি চিনে ফেলেছি। তুই আবার আমাকে ধোঁকা দিতে মেয়ে মানুষের গেটাপ নিয়েছিস। তোকে আজ জিন্দা রাখবো না।
ছবিপুঃ ছিঃ আপনি আমাকে সন্দেহ করছেন ? আমি এই হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার । বিশ্বাস না করলে জলু ও নজু কে জিজ্ঞেস করে দেখ ?
নাজুঃ জ্বি অরু ভাই এনি সত্যিই আমাদের নতুন ম্যাডাম।
অরুঃ ম্যাডাম, আমার ভুল গেছে আমাকে মাফ করে দিন। ম্যাডাম আমাকে এই পাগলা গারদ থেকে মুক্তি দেন। কথা দিলাম আমি বের হলেই উদার গলা কাটবো তার পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব!
ঠিক তখনই হাতপাতালের করিডরে হইচই এর শব্দ শোনা যাচ্ছে। নজু ও জলু একটু সামনে এগিয়ে দেখে যে, আরেকটা ছবিপু দশ বারো জনের দল নিয়ে এই দিকে আসছে !!
নাজুঃ ম্যাডাম! আপনার কোন যমজ বোন আছে নাকি ?
ছবিপুঃ (অট্টহাসি দিয়ে বললো ) লুল লুল লুল ! আমি আসলে উদা ! অনেক দিন অরুর সাথে দেখা হয় না তাই দেখা করতে এলাম !! (বলে উদা ছবিপুর মুখোশ খুলে ফেললো )
অরুঃ শয়তান ! তোর ঘরে কোন বাপ-ভাই নাই ? খালি আমার পিছে কেন লাগিস ?
উদাঃ লুল লুল লুল ! তোকে ধোঁকা দেবার মজাই আলাদা।
আসল ছবিপুঃ গার্ড, দড়ি দিয়ে বাঁধো উদা কে। গতকাল রাতে এ ঢাকা মানসিক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এখানে এসেছে সে।
নাজুঃ ম্যাডাম উদা কেন উন্মাদ হয়ে গেছে ? আর আপনি কি করে জানলেন যে, উদা এখানে আছে ?
আসল ছবিপুঃ (মুচকি হাসি দিয়ে) মেয়েদের মুখোশ পরে মানুষদের সাথে ফাইজলামি করা এর স্বভাব। স্বভাব থেকে এটা তার রোগ হয়ে গিয়েছে। আর অরু ছিল এর প্রধান টার্গেট। তাই বুঝতে অসুবিধা হয় নাই যে উদা এখন কোথায় !