টপিকঃ ব্যান্ডউইথ রপ্তানী করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন!!!
"অবশেষে ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ টাটার কাছে বিক্রি হচ্ছে: বাংলাদেশ পাবে বার্ষিক ৬১ কোটি রুপি: ভুটান-মিয়ানমারও কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে"
বাংলাদেশ ভারতের টাটা টেলিকমিউনিকেশনের কাছে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশে অব্যবহৃত মূল্যবান সম্পদ ব্যান্ডউইথ ফেলে না রেখে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি (বিএসসিসিএল) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছরের জুনে সিমিউই-৪ কেবলের আপগ্রেভেশন কাজ শেষে দেশে বর্তমানে ১৬০ দশমিক ৬ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ রয়েছে। একই সঙ্গে টেরিস্ট্রিরিয়াল কেবলের মধ্যেমে আরও ১শ’ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ দেশে এসেছে। মোট ২৬০ দশমিক ৬ গিগাবাইট ব্যান্ডইউথ দেশে জমা রয়েছে। এখান থেকে দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র ৪০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ। অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথের পরিমাণ হচ্ছে ২২০ গিগাবাইটেরও বেশি। বাড়তি ব্যান্ডউইথ থেকে ১শ’ গিগাবাইট ভারতের টাটা টেলিকমিউনিকেশনের কাছে বিক্রি করার একটি চুক্তি করেছে বিএসসিসিএল। এই ব্যান্ড থেকে প্রতিবছর ভারতের কাছ থেকে বিএসএনএল বাংলাদেশ ১ কোটি ডলার (৬১ কোটি রুপী) পাবে। এর বাইরে নেপাল, ভুটান ও শ্রীলংকাও বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডইউথ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সিমিউই-৫ নামে আরেকটি সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এ জন্য ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) কাছ থেকে উচ্চ সুদে বিরাট অংকের টাকা ঋণ চেয়েছে বিএসসিসিএল। ব্যান্ডউইথের মতো মূল্যবান এই সম্পদ ফেলে রেখে দেশের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। সিমিউই-৪ কেবল স্থাপনের সময়ও আইডিবির কাছ থেকে বিরাট অংকের টাকা সুদে আনা হয়েছিল। সেই টাকাই এখনও পরিশোধ করছে বিএসসিসিএল। আবার নতুন করে টাকা এনে সিমিউই-৫ কেবলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ।
সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক টেলিকম সেবার মান বাড়াতে ভারত এবার বাংলাদেশ থেকে ১শ’ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক কল ও ডাটা ট্র্যাফিক নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আগরতলা স্টেশন থেকে ভারতের টেলি সেবাদাতা (বিএসএনএল) বাংলাদেশ থেকে এ ব্যান্ডউইথ কিনবে। টাটা টেলিকমিউনিকেশনের চেন্নাই ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে আন্তর্জাতিক কল সরবরাহ রাখতে বাংলাদেশ থেকে এ ব্যান্ডউইথ কেনার চুক্তি করা হয়েছে। ভারতের বিএসএনএল বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অপটিক্যাল ফাইবার কেবল (ওএফসি) বিনিময় চুক্তির আওতায় ভারত-বাংলাদেশ চুক্তিটি করেছে। দ্বিপাক্ষিক ওএফসি লিঙ্ক চুক্তির আওতায় আগরতলা ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে এবং কক্সবাজার কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত থেকে বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। আন্তঃদেশীয় টেলিসেবার মান বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বিষয়ে গত ৩০ জুলাই ভারত-বাংলাদেশের টেলিকম বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠক হয়। ওই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক থেকেই ব্যান্ডউইথ সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, চুক্তির আওতায় ভারতের বিএসএনএল বাংলাদেশে ১ কোটি ডলার (৬১ কোটি রুপী) সেবা বিনিময় মূল্য দেবে। এই চুক্তি আগামী ১০-২০ বছর মেয়াদ পর্যন্ত নবায়নযোগ্য থাকবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে ওএফসি চুক্তির অধীনে আন্তর্জাতিক গেটওয়ের প্রয়োজনীয় সংযোগ চাহিদা পূরণে সার্কভুক্ত দেশ নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনই কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব-পশ্চিম ইউরোপ ৪ (সি-মি-উই-৪) সাবমেরিন কেবলের সহমালিক হচ্ছে বাংলাদেশ। সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত এই সাবমেরিন কেবল সংযোগ বিস্তৃত। সংযোগ পথেই বাংলাদেশ এ মুহূর্তে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, তিউনিশিয়া এবং আলজিরিয়া গ্রুপে। এই বিশাল কেবল দিয়েই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের সঙ্গে সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশন্যাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবলের (আইটিসি) ৬টি লাইসেন্স দিয়েছে বিটিআরসি। আইটিসি লাইসেন্স নিয়ে অপারেটররা ‘আনলিমিটেড’ ব্যান্ডউইথ আনতে পারবে। প্রতিটি লাইসেন্স ‘হোল্ডার’ ভারত থেকে ব্যান্ডউইথ আনবে। কিন্তু তাদের এ ব্যান্ডউইথ কোথায় কাজে লাগাবে সেই ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে দুই-তিনটি কোম্পানি ব্যান্ডউইথ আনতে শুরু করেছে। তাঁরা বেসরকারী পর্যায়ে এই ব্যান্ডউইথ বিক্রি করছেন। কিন্তু এতে তাদের লোকসান হচ্ছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কারণ সরকারী পর্যায়ে বিরাট অংকের ব্যান্ডউইথ পড়ে রয়েছে। সরকারী ব্যান্ডউইথের দামও অনেক কম।
বিএসসিসিএল এমডি মনোয়ার হোসেন বলেন, আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ রেখে বাকিটা বিক্রি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিক্রি করতে পারলে এখান থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হবে।
আমরা ও আমাদের দেশটা...........কি বলবো
বলার কিছু নাই