টপিকঃ মাছেদের ভর্তা! :3
বাঙ্গালী কিন্তু ভর্তা পছন্দ করেন না; এমন মনে হয় কম মানুষই আছেন!
এই পুরো পোস্টটাই হল ভর্তা-প্রেমীদের জন্য!
আমি জানি এই ফোরামে কয়েকজন ভর্তা পাগল আছেন যাদের খালী ভর্তা দিয়েই আপ্যায়ন করা যাবে আর কিছু লাগবে না!
আজকে কিছু মাছের ভর্তার তৈরির প্রানলী বলে দিব! তাইলে শুরু করা যাক, নাকি!
টাকি মাছের ভর্তা
উপকরণ :
১। টাকি মাছ = মাঝারি ৪-৫টি,
২। পেঁয়াজ = কুচি ২ টেবিল চামচ,
৩। ধনেপাতা = কুচি ১ টেবিল চামচ,
৪। কাঁচামরিচ = কুচি ১ চা চামচ,
৫। লবণ স্বাদ অনুযায়ী এবং
৬। তেল ভাজার জন্য (সরিষার তেল),
৭। হলুদ গুঁড়া = ১ চা-চামচ,
৮। মরিচ গুঁড়া = আধা চা-চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি :
প্রথমে মাছের আঁশ ফেলে দিন। এরপর মাছের মাথা বাদ দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। মাছে গুঁড়া মসলা ও লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। তারপর তেল গরম করে ভালো করে ভাজুন। যেন মাছ কাঁচা না থাকে। মাছ ঠাণ্ডা হলে কাঁটা বেছে নিন। মাছের সঙ্গে ধনেপাতা, কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজ কুচি ভালো করে হাত দিয়ে মাখিয়ে ভর্তা তৈরি করুন টাকি মাছের।
রূপচাঁদা মাছের ভর্তা
উপকরণ :
১। রূপচাঁদা = ছোট ৩-৪টি,
২। ধনেপাতা = ১ টেবিল চামচ কুচি ,
৩। কাঁচামরিচ = ১ চা চামচ কুচি,
৪। লবণ স্বাদ অনুযায়ী,
৫। পেঁয়াজ = ২ টেবিল চামচ কুচি,
৬। সরিষা বাটা = ১ চা চামচ,
৭। মরিচ গুঁড়া = আধা চা চামচ,
৮। হলুদ গুঁড়া = ১ চা চামচ,
৯। সরিষার তেল ভাজার জন্য।
প্রস্তুত প্রণালি :
মাছ কুটে ভালো করে ধুয়ে নিন। এতে হলুদ ও মরিচ গুঁড়া এবং লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে মাখানো মাছগুলো ভালো করে ভেজে রাখুন। মাছ ঠাণ্ডা হলে কাঁটাগুলো বেছে নিন। একটি ফ্রাইপ্যানে পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে একটু ভাজুন। এরপর এতে মাছ ও সরিষা বাটা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নামিয়ে নিন। তারপর সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
চ্যাপা শুঁটকির ভুনা ভর্তা
উপকরণ :
১। চ্যাপা শুঁটকি = ৫-৬টি ,
২। শুকনো মরিচ = ৫-৬টি,
৩। পেঁয়াজ = মিহি করে কাটা আধা কাপ,
৪। রসুন = মিহি করে কাটা ২ টেবিল চামচ,
৫। পরিমাণমতো সরিষা তেল এবং
৬। লবণ স্বাদ অনুযায়ী।
প্রস্তুত প্রণালি :
প্রথমে চ্যাপ শুঁটকির মাথা ফেলে দিয়ে আঁশ পরিষ্কার করে মাছ ভালো করে ধুয়ে রাখুন। এরপর একটি ফ্রাইপ্যানে পরিমাণমতো তেলে কিছু পেঁয়াজ কুচি ও শুকনো মরিচ ভেজে নিয়ে পাটায় রসুন কুচি ও চ্যাপা শুঁটকি এবং স্বাদ অনুযায়ী লবণসহ মিহি করে বেটে নিন। পরে একটি ফ্রাইপ্যানে অল্প তেলে পেঁয়াজ কুচি ভাজা ভাজা করে তাতে চ্যাপা শুঁটকি বাটা দিয়ে ভালোভাবে ভুনা করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
চ্যাপা শুঁটকি ভর্তা ২ :
উপকরণ:
১। চ্যাপা শুঁটকি = ৪-৫টি,
২। পেঁয়াজ কুচি = ২ কাপ,
৩। রসুন কুচি = ১ টেবিল চামচ,
৪। আদা কুচি = আধা চা চামচ,
৫। সরিষার তেল সি
৬। লবণ স্বাদমতো,
৭। শুকনো মরিচ = ৬-৭টি।
প্রণালি:
চ্যাপা তাওয়ায় টেলে নিয়ে পানি দিয়ে সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে তেল, আদা, রসুন দিয়ে একটু পরে পেঁয়াজ দিয়ে নাড়তে হবে। পেঁয়াজ নরম হলে নামিয়ে মাছের সঙ্গে খুব ভালো করে মিলিয়ে নিতে হবে। আবার কড়াইয়ে থাকা অবস্থায় মাছ দিয়ে কষিয়ে ওপরে তেল উঠলে নামিয়ে নিতে হবে। দুভাবেই চ্যাপা শুঁটকি ভর্তা করা যায়। শুকনো মরিচ তেলে ভেজে উঠিয়ে সামান্য লবণ দিয়ে হাতে মেখে নিয়ে মাছের সঙ্গে মেলাতে হবে।
বেলে মাছের ভর্তা
উপকরণ :
১। বেলে মাছ =২৫০ গ্রাম,
২। পেঁয়াজ কুচি = আধা কাপ,
৩। ধনেপাতা কুচি = ১ টেবিল চামচ,
৪। কাঁচামরিচ = আধা চা চামচ,
৫। আদা কুচি = সামান্য,
৬। লবণ স্বাদ অনুযায়ী,
৭।হলুদ গুঁড়া = আধা চা চামচ,
৮। মরিচ গুঁড়া = আধা চা চামচ এবং
৯। সরিষা তেল ভাজার জন্য।
প্রস্তুত প্রণালি :
প্রথমে মাছের আঁশ ফেলে দিন। এরপর মাছের মাথা বাদ দিয়ে কাটা মাছে গুঁড়া মসলা ও লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তেল গরম করে মাছগুলো ভালো করে এপিঠ-পিঠ ভেজে নিন। মাছ ঠাণ্ডা হলে কাঁটা বেছে নিন। ফ্রাইপ্যানে সামান্য তেলে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা কুচি ও আদা কুচি ভেজে এতে মাছ ভালো করে মিশিয়ে তৈরি করুন বেলে মাছের ভর্তা।
কাঁচকি শুঁটকি ও কাঁঠালের বিচি ভুনাঃ
উপকরণ :
১। কাঁচকি শুঁটকি হাফ কাপ,
২। পেঁয়াজ ২ কাপ,
৩। রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ,
৪। মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ,
৫। লবণ পরিমাণ মতো,
৬। কাঁচা মরিচ ৪-৫টি,
৭। জিরা বাটা ১ চা চামচ,
৮। কাঁঠালের বিচি কুচি ১ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি :
কাঁচকি শুঁটকি তাওয়ায় ঢেলে গরম পানিতে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। গরম তেলে পেঁয়াজ হালকা ব্রাউন করে তার মধ্যে শুঁটকিসহ সব মসলা দিয়ে খুব ভালো করে কষিয়ে ১ কাপ পানি দিয়ে মাখা মাখা করে নামাতে হবে।
লাউপাতা দিয়ে শোল মাছ ভর্তা
উপকরণ :
১। শোল মাছ মাঝারি সাইজের ১টি,
২। লাউপাতা ১০-১২টি।
৩। রসুন থেঁতো করা ১ চা চামচ,
৪। কাঁচামরিচ ১০-১২টা বা ইচ্ছামতো,
৫। পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ,
৬। লবণ পরিমাণমতো,
৭। সরষের তেল ২ টেবিল চামচ,
৮। হলুদ গুঁড়া সামান্য।
প্রণালী :
মাছ পরিষ্কার করে মাথা বাদ দিয়ে কয়েক টুকরা করে হলুদ, লবণ, ১ টেবিল চামচ তেল ও অল্প পানি দিয়ে অল্প জ্বালে ঢেকে দিতে হবে। মাঝে মাঝে উল্টিয়ে দিতে হবে। শুকিয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে কাঁটা বেছে নিতে হবে। লাউপাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে অল্প পানিতে ভাপ দিয়ে বেটে নিতে হবে। রসুন, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ ছেঁকা তেলে টেলে নিয়ে বেটে মাছ ও পাতার সঙ্গে সরষের তেল দিয়ে মাখিয়ে ভর্তা করতে হবে।
রূপচাঁদা শুঁটকিতে টমেটো
উপকরণ :
রূপচাঁদা শুঁটকি - ১০০ গ্রাম,
টমেটো (কিউব করে কাটা) - ৪টি (মাঝারী)
রসুন বাটা - ১ টে চামচ
আদা বাটা - ১ চা চামচ
জিরা বাটা - দেড় চা চামচ
ধনে গুড়া - ১ চা চামচ
হলুদ গুড়া - ১/২ চা চামচ
মরিচ বাটা - ১ টেবিল চামচ
পেয়াজ কুচি - ১ কাপ
কাঁচামরিচ (ফালি করে কাটা) - ৪/৫ টা
তেল - দেড় কাপ
পানি - দেড় কাপ
লবণ - পরিমাণমতো
ধনেপাতা কুচি - ৩ টে চামচ
চিনি - ১ চিমটা
প্রণালীঃ
প্রথমে শুঁটকি এক ইঞ্চি সাইজের টুকরা করে নিতে হবে। এবার ভাল করে ধুয়ে ২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন কাটা শুঁটকিগুলো। দুই ঘন্টা পরে ভেজানো শুঁটকি গুলো পানি থেকে তুলে পানি ঝরিয়ে নিন, আর মূল রান্নার জন্য তৈরী হোন -
কড়াইতে তেল দিন, তেল গরম হলে তাতে পেয়াজ কুচি দিন, ভাজতে থাকুন। হালকা বাদামী রঙ ধারণ করলে উপকরণের সব মশলা দিয়ে ৫ মিনিট কষিয়ে নিন। এসময় চুলার আঁচ কমিয়ে রাখুন, নইলে মশলা পুড়ে যাবে। এবার কষানো মসলায় শুঁটকি দিয়ে দিন, এ অবস্থায় আরও ১০ মিনিট রান্না করুন। চুলার আঁচ একটু বাড়াতে পারেন। এবার ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। কিছুক্ষন পর টমেটো ও কাঁচামরিচ ছেড়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে একটু নেড়ে দিন, আবার ঢেকে দিন। এ অবস্থায় আরো কিছুক্ষণ রান্না করুন। মাখামাখা হয়ে আসলে ধনেপাতা ও চিনি ছিটিয়ে পরিবেশন করুন। গরম ভাতের সাথে পরিবেশনে খুবই ভাল লাগবে। কেউ ঝাল পছন্দ করে শুঁটকিতে, ঝাল বাড়িয়ে দিতে পারেন আপনার পছন্দ মত।
পোড়া চিংড়ি ভর্তার রেসিপি
উপকরণ:
১। মাঝারি সাইজের চিংড়ি(ছবির মত) = ৬টি
২।মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ = ১টি
৩। শুকনো মরিচ পোড়া/টালা = ৭/৮টি (যে যেমন ঝাল খাবেন, আমি আমাদের পরিমানটা দিলাম)
৪। লবন = পরিমান মত
৫। মাছ পোড়ানোর জন্যে = চিকন শিক ১টি
৬। মাছ পেষার জন্যে = পাটা-পুতা
প্রণালী:
প্রথমে মাছ ধুয়ে শিকে গেঁথে চুলার উপর ধরে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে পুড়ে নিন। মাছ লাল হয়ে যাবে এবং খোসাগুলো পুড়ে কালো হয়ে গেলে নামিয়ে পোড়া ছাই হাত দিয়ে ছাড়িয়ে নিন। তার পরে ছাইগুলো ভালভাবে ছাড়ানোর জন্যে ধুয়ে নিন। এবার পাটায় লবন ও মরিচ দিয়ে পিষে নিয়ে তার পরে মাছ পিষে নিন। দুইবার বাটা দিলেই হবে। এর পরে পেঁয়াজ আধা ছেঁচা করে মাছটা আবার হালকা করে মিশিয়ে নিন। হয়ে গেল মজাদার পোড়া চিংড়ি ভর্তা।
বোনাস!
কালিজিরা ভর্তা
উপকরণ: ১।
কালোজিরা = সিকি কাপ,
২। রসুনের কোয়া = ১ টেবিল-চামচ,
৩। কাঁচামরিচ = ৩-৪টি,
৪। পেঁয়াজ কুচি = ১ টেবিল-চামচ,
৫। লবণ পরিমাণমতো,
৬। সরিষার তেল = ১ টেবিল-চামচ।
প্রণালি:
রসুন, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ কাঠখোলায় টেলে নিতে হবে। তেল বাদে সব উপকরণ পাটায় বেটে তেল দিয়ে মাখিয়ে ভর্তা করতে হবে।
মুটামুটি তৈরির সব প্রণালী এক রকম; কিছু নেট থেকে কিছু গুগলের আগান-বাগান থেকে তুলে আনা!
ফোটো ক্রেডিট
ভর্তা পরিবেশন
এটা নিয়া একটু কনফিসড আছি কে বানাইসে আর তুলছে
ছবির দিকে তাকায় থেকে লাব নাই যা যা রেসিপি দিসি সেটা এই পিক এ নাই
থাকলে ছবির মালিক জানে; আমি জানি না। আমারে জিগাইয়া লাব নাই!
যাক সবাইকে শুভ সক্কাল!
গরম গরম ভাতে সাথে ভর্তা খেতে কত্ত মজা!!!