টপিকঃ মুসলিম বিশ্ব কেনো আজ এত পিছিয়ে?
একটা সময় ছিলো যখন মুসলিম বিশ্বকে বলা হতো বিশ্বের অন্যতম চালিকা শক্তি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলিমদের অনেক অবদান ছিলো কিন্তু কিভাবে যেন সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। আরবেরাই (ইবনে বতুতা) তো এই অঞ্চলে এসে এই অঞ্চলের মানুষদের হিন্দু জাতি হিসেবে নাম দিলো। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতেও মুসলিমদের অবদান আছে কিন্তু সেগুলো তেমন প্রচার পায় না। নিউটন, আইনস্টাইনদের অবদানই বেশি প্রচার হয়। এক ইরান ছাড়া সামরিক শক্তি হিসেবে মুসলিম বিশ্বের খুব বেশি গর্ব করার মতো সামরিক শক্তি নেই। সৌদি আরবও সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী কিন্তু সেটা সম্পূর্ন আমেরিকার নিয়ন্ত্রনাধীন।
আমার মতে মুসলিম বিশ্বের সোনালী ইতিহাস ম্লান হওয়ার মূল কারন হচ্ছে ,
১. খিলাফতের সময়কালে হত্যা, সন্দেহ, ক্ষমতার লোভ ইত্যাদি মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বিভাজন তৈরী করে সুন্নী-শিয়া দুই গ্রুপ হয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি, কাটাকাটিতেই এক সময় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নিজেদের মধ্যে ঐক্যের সংকট।
২. জঙ্গীবাদ ও তালেবানি শাসন।
৩. মূলত ইসলামিক গোল্ডেন এইজ বা সোনালী যুগে পার্সিয়ানদের অবদানই উল্লেখযোগ্য। আরবদের অবদানও আছে। পার্সিয়ানরা মূলত শিয়া মুসলিম। সুন্নী হয়ে বলতে দ্বিধা নেই ইসলামের সংস্কৃতিতে সুন্নীদের চেয়ে শিয়াদের অবদান বেশি। এই পার্সিয়ান মুসলিমেরা ইউরোপে সিভিলাইজেশন ঘটায়। এই পার্সিয়ান শিয়ারা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের সুন্নীদের চেয়ে লিবারাল। যেমন আর্টের ক্ষেত্রে। ইসলামিক আর্ট হিসেবে যত বিখ্যাত কাজ আছে তার প্রায় সব এই পার্সিয়ানদের করা। আমরা সুন্নীরা নিজেদের রেসট্রিক্টেড বেশি করে ফেলেছি আহলে হাদিসদের পাল্লায় পড়ে। সাথে আছে সৌদি ওয়াহাবী। এদেরকে মাওলানা ফারুকী (হাইকোর্ট মসজিদের ইমাম) বলেন, ইসলামের ভিতরে ক্যান্সার।
৪. কথায় কথায় ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র খুঁজি। ঝড় হলেও বলি এটা ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র। তবে পশ্চিমারা যে ষড়যন্ত্র করে না সেটা না। তাদের ষড়যন্ত্রে পড়ে তেল রাজনীতির কারনে ইরাক আজ ধ্বংস কিন্তু ব্যাপারটাকে জেনারালাইজ করে দিয়ে এখন সর্বক্ষেত্রে ইহুদি-নাসারা চক্রের ষড়যন্ত্র খুঁজি। যার ফলে মুসলিম বিশ্ব কোনঠাসা হয়ে যাচ্ছে।
৫. ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশে মূলত সুফীবাদের মাধ্যমে ইসলামের প্রসার হয়েছে। হযরত শাহজালাল নিজে সুফীবাদী ছিলেন কিন্তু মওদূদী দর্শন আসলে শুরু হয় অস্থিরতা।
আপনার কাছে কেনো মনে হয় মুসলিম বিশ্ব আজ পিছিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের চাইতে বলেন।