স্মার্ট ফোন কি আসলেই দরকার 3 পাতা থেকে পাতা 3

আপনার সব যুক্তিই ঠিক আছে কিন্তু কোথায় কেন জিদ্দি মুরগা বলেছিলাম মনে নেই......
সিরিয়াসলি অবশ্যই বলিনাই, আমি সত্যি লজ্জিত 

কিন্তু আপনার এই কথা আমি ৬ বছর আগে হলে বিশ্বাস করতাম না বা মানতাম না
কিন্তু আমি প্রথম নোকিয়া এন সিরিজের মোবাইল বের হবার পরেই কিনেছিলাম। তখন এত মেড বাই নকিয়া বা মেড ইন হাঙ্গেরি ক্যাচাল ছিল না...... মেড ইন ফিনল্যান্ড এর মান খুব ভাল ছিল। সেটাই কিনেছিলাম প্রায় ২৩ হাজার দিয়ে......
চিন্তা করলাম মোবাইলে ২ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা!!! আবার ফ্রন্ট ক্যামেরা ভিড্যু কল... সাউন্ড ছিল মারাত্বক। একমাসের বেতনের পুরোটাই এই কাজে ব্যয় করেছিলাম ( আমার না বাবার  ) কি ভাগ্য ফোন ইউজ করতে করতে ডেড কিন্তু ৩জি আসল না ভিডিও কল হল না ...... এটা কেমন তাও জানলাম না!!!! কি লাভ হয়েছে সেটা কিনে??
এরপরের ফোন নিলাম নোকিয়া ই সিরিজ। সুন্দর স্মুথ ফোন। অনার্সের প্রজেক্টে অনেক হেল্প করেছে ডকুমেন্ড পিডীএফ বিল্টিন ওপেন ইডিট করা যেত। শুধু ওয়াইফাই অ্যার ৩জি এর জন্য এই ঢাউস মার্কা সেট ইউজ করেছি, কিছুদিন আগে আছাড় দিয়ে ইন্তেকালের আগেও কোনদিন ৩জি ব্যবহার হয় নি, শুধু কয়েকবার টিএসসি ও আইডিবিতে ওয়াইফাই ইউজ করেছি...... মোবাইলের লাইফ টাইমে ২ ঘণ্টা নেট ইউজের জন্য ওয়াইফাই, ৩জি কেন বুদ্ধিমানের কাজ না... কিন্তু একটু বেশী দামে বা ভালো কিনলে আজকাল অটো এগুলো এসে যাচ্ছে মানে এসব ফিচার থাকছেই।
এখন ফেরত এসেছি নকিয়া ১২০২ এ কিন্তু গরীব মোবাইলে প্রাইভেসি সমস্যা, কথা বললে এলাকার সবাই শোনে 
মাঝে মাঝে মোবাইল থেকে ফোরামে ঢোকা বা ইমেইল পড়া মিস করি তাছাড়া কোন সমস্যাই নাই 

এখানে একটা কাজের জিনিস পেলাম: সো ফার যে অল্প কয়েকটা ফোন এন্ড্রয়েড ৪.৩ আপডেট পাবে সেগুলোর লিস্ট। সনির ৬টা ফোন আর স্যামসাং এর ৩টা, এলজির ৪টা। এইচটিসির ১টা, নেক্সাস সিরিজ এইতো।
বাকিগুলো যা পেয়েছে এখন পর্যন্ত, সেখানেই শেষ।

ক্যামেরার যে রিকোয়্যারমেন্ট দেখালেন তাতে আসলে "ক্যামেরাই" কিনতে হবে, অপটিক্যাল জুম+ অপটিক্যঅল স্টাবিলাইজেশন সহ।

কই জানি একবার ঘুরতে গিয়া জঙ্গলের ভিতরে হারায় গেছিলাম, গুগল ম্যাপ দেইখা দেইখা দুই কিলো হাঁইটা সবচেয়ে কাছের বাসস্টপে গেছি, এর পরে কই নামতে হবে, তারপরে বাস বদলায়া কোন বাসে যাইতে হবে, কতক্ষণ ওয়েট করতে হবে, কয়টায় পৌঁছাব, সব ইনফরমেশন কিন্তু স্মার্টফোনের কল্যাণেই।
প্রতি কলে কানেকশন চার্জ আছে স্টকহোমের প্রায় সব অপারেটরে, "ভাই, কই আছেন, এইখানে, আইচ্ছা আসতেছি" এই জাতীয় কথায় যদি কল দেয়া লাগে মাসের ব্যালেন্স ফুরোতে ম্যাক্সিমাম দশ দিন লাগবে। সেই তুলনায় ভাইবার, স্কাইপ, হোয়াটস অ্যাপে ফ্রী কল/টেক্সট করা যায়।
আমার ব্যাংকের অ্যাপটা লাগে ডেইলি, টাকা পাইছি কি না, ট্যাকা বেশি কাটল কি না, কিংবা আজকে ডলার/ইউরোর রেইট কথা দিচ্ছে ব্যাংক দেখার জন্য।
ক্যামেরার কোন দরকার দেখি না, হুদাই ব্যাটারি নষ্ট।
আর জরুরী ইমেইল করার জন্য দরকার হয়। শপিং মলে প্রাইস চেক করা, কিংবা কোন অফার আছে কি না সেইটা দেখার জন্য লাগে।

আজাইরা অপশনঃ এমপিথ্রি প্লেয়ার/ফেসবুক ইত্যাদি বাসে বইসা টাইম পাস করার জন্য, এইগুলান না হইলে মইরা যামু না। গেমস রাখি না, ভাল্লাগে না।
আর লাইফহ্যাকারের যেই লিংকটা দিছেন, ওইটার কমেন্ট গুলা কাইন্ডলী দেইখেন, সবাই কি কি কইছে।
দ্যাশে নোকিয়া দিয়া কম চলবো, কিন্তু বিদেশে লাইফ ম্যালা কষ্টের হয়া যাইবো।
মাইনসেরে জিগায়া জিগায়া বাসের টাইম জানা লাগবো।
হারায়া গেলে মাইনসেরে জিগায়া রাস্তা চিনা লাগবো।
ব্যাংকের কিছু জানা লাগলে ফিজিক্যালি ব্যাংকে যাইবেন।
ইমেইল করতে হইলে সাইবার ক্যাফে তে যাইবেন, ঘন্টা বিশ ট্যাকা।
প্রাইস চেক করতে হইলে শপিং মলের এই মাথা টু ওই মাথা হাইটা গিয়া কাউন্টারে প্রাইস জিগায়া আইবেন। ম্যালা টাকা থাকলে অফার টফার জানার দরকার নাই, দাম যতই হউক কিন্না ফালাইবেন। আর মাইনসের লগে দশ সেকেন্ড কথা কওনের লাইগা বাংলাদেশি টাকায় দশটাকা খরচ করবেন।

তয়, বাংলাদেশে স্মার্ট ফোন ছাড়াই চলা সম্ভব, রাস্তাঘাটে ঠ্যাক খাওয়ার ডর নাই। সিটিসেল ব্যবহার করতাম, প্রতি সেকেন্ড দেড় পয়সা। ঠ্যাক দিতে আইলে বত্রিশ দাঁত ক্যালায়া বাইর কইরা দিবেন।

কথাটা পছন্দ হইছে, ইদানিং ভাবতেছি, ভিসা কার্ড, মাস্টারকার্ড আর ফোন বাদ দিয়া চকচকে দুটা ১০০ টাকার নোট আর একটা Philips Diga নিয়া ঘুরি।

এই ফিলিপস ফোনটা জীবিত অবস্থায় আমার ড্রয়ারে সত্যিই আছে 

@mcctuhin
একটা লোকেশন দেই: 25.964956,89.523615 -- এটা আমার বাড়ির লোকেশন। আপনি বেড়াতে এসে হারিয়ে গেলেন এখানে। কাছের বাসস্টপটা খুঁজে বের করুন দেখি! কাছের রেস্টুরেন্টটা খুঁজে বের করুন দেখি। 

এই বাসাতেই আমার চাচাতো ভাই গ্যালাক্সি নোট-২ ব্যবহার করে। ওনার কারণটা ভিন্ন। সেখানে কারেন্ট থাকে না সবসময়। উনি ফেসবুক, মেইল ইত্যাদি ব্যবহার করেন -- এটাই মূল কারণ। এদিকে বাড়ির পেছনের পুকুর পাড়ে গেলে মোবাইলের নেটওয়র্ক ঠিকভাবে আসে। ওনার ল্যাপটপ নিয়ে বারবার ওখানে দৌড়ানো বেশ মুশকিলের কাজ ... ... ...

ইউরোপে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্র আছে। বাংলাদেশে নাই -- বাংলাদেশে বার কোড স্ক্যান করে প্রাইস বা অফার চেক করার সিস্টেম থাকলে কেউ জানান।
প্রতি স্কয়ার কিলোমিটারে ১১০০ মানুষের দেশে হারিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। যেখানে মানুষ কম, সেখানে টেকনোলজি ভরসা। অবশ্যই যদি কখনো জঙ্গলে বা অজানা জায়গায় গিয়ে পড়ি, তাহলে ম্যাপ এবং জিপিএস বেশ কাজে লাগবে -- তবে এখানে একটা কিন্তু আছে, আমার বাড়ির লোকেশনে ক্লিক করলেই বুঝবেন সেটা। আমার ডেইলি লাইফে যাতায়াত বাসা টু অফিস -- এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রথম বিশ্বে (জাপান) কয়েক বছর থাকার অভিজ্ঞতায় জানি এই ফীচারগুলো কী পরিমান কাজে লাগতে পারে -- প্রায় প্রতি অল্টারনেট উইকএন্ডেই টোনাটুনি মিলে ড্রাইভে বের হয়ে পড়তাম। কিন্তু এখন আমি ঢাকায় থাকি, এখানে আমার নিজের গাড়িও নাই, রাস্তায় লোকেরও অভাব নাই, কাজের ধরণও বিভিন্ন জায়গায় ট্রিপ ডিমান্ড করে না। কাজেই আপনার ঐ যুক্তিগুলো ঐ দেশে অত্যন্ত সঠিক হলেও এখানে আমার এই পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য নয়।

এখন মনে হচ্ছে যে স্মার্ট ফোনের ফীচারগুলো ঐ ধরণের পরিস্থিতি চিন্তা করে ডেভেলপ করা হয়েছে। আপনার পোস্টের কারণে বেশ কিছু বিষয়ে আবার কনসেপ্ট পরিষ্কার হল। জাপানে লোকাল কল করতে মিনিটে প্রায় ৪০ টাকা পড়তো!! অথচ ইয়াহু বিবি দিয়ে দেশে কল করলে মিনিটে ১০ টাকার কম খরচ হত! শহরে অচেনা জায়গায় যাওয়ার আগে ম্যাপ দেখে নিতাম ওয়েবে, গাড়িতে ডিটেইল ম্যাপের অ্যাটলাস রাখতাম দুইটা। ভাষাগত কারণে দোকান খুঁজে পাওয়ার ফীচার ব্যবহার করিনি, কিন্তু অন্যদের সাথে অফিসিয়াল ট্রিপে গিয়ে দেখেছি, গাড়ির জিপিএস থেকে কাছের রেস্টুরেন্ট, মেনু, কখন খোলা ইত্যাদি সমস্ত ইনফরমেশন বের করে পোলাপান আমাকে কেবিনে রেখে সাউনা বাথ নিতে ওনসেনে চলে গেল।

প্রতিটা মানুষেরই এরকম নিজস্ব পরিস্থিতি থাকে। সেটার সাথে মানানসই টেকনোলজি এবং সলিউশন -- যাকে বলে কাস্টম মেড বা লাগসই প্রযুক্তি দেয়াটাই ভাল সমাধান। ৪জি এদেশে আসেনি, যদিও গ্রামীন ফোন বলেছে শিগগিরিই আনবে। সেই শিগগিরি যদি হয় ৫ বছর, তাহলে এর মধ্যে ফোন পাল্টানোর সময় হয়ে যাবে -- কাজেই এই মুহুর্তে ফোন কিনলে ৪জি-তে ছাড় দিলে লস নাই, বরং সাশ্রয় হবে। কিন্তু তাই বলে ৪জি থাকা খারাপ এই কথা বলেছি -- এমন ধরে নেয়াটা পাঠকের বোঝার সীমাবদ্ধতা, কিংবা লেখকের অপারগতা।

মুলতঃ কানেক্টিভিটির জন্যই স্মার্ট ফোনটা ব্যবহার করি। মাঝে মাঝে খুব কাজে দেয়।