বলেন কি?
আপনার তো পারলৌকিক ডিজনীল্যান্ডের জন্য টিকিট তো রিজার্ভ করাই আছে
তাহলে মৃত্যুভীতি কেন? ঐটা তো নির্বোধদের বিষয় 
death anxiety সবারই থাকে। যখন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় তখন এটাকে থ্যানাটোফোবিয়া বলে (Thanatophobia) - excessive & irrational fear of death। এছাড়া কংকাল দেখে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনার সামান্য নেক্রোফোবিয়াও আছে (Necrophobia: irrational fear of dead things)
ইল্লজিকাল, ইরর্যাশনাল ফোবিয়া জয় করার সবচাইতে ভালো উপায় হলো - ফোবিয়ার বিষয়টা যে ইল্লজিকাল, ইরর্যাশনাল, ননসেন্স তা কোনোভাবে প্রমাণ করা।
সাইকোলজিস্টরা ফোবিয়া স্ম্যাশ করার জন্য একটি টেকনিক ব্যবহার করেন - ব্যক্তিকে দিয়ে জোর করে হলেও ফোবিয়ার কাজটি করানো। যেমন কেউ প্লেনে চড়তে ভয় পায়। তাকে কয়েকবার প্লেনে চড়ালে এক সময় তার ব্রেইন বুঝতে পারবে ভয়টা অমূলক, এ্যারোপ্লেন ভ্রমণ বরং যেকোনো ট্রান্সপোর্টের চাইতে নিরাপদ ইত্যাদি অনুধাবন করতে পারবে - এবং এক পর্যায়ে ফোবিয়া দূর হয়ে যাবে।
অফিসে এক ভেন্ডরের acrophobia (উচ্চতার ভীতি) আছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে ১২ তলা পর্যন্ত ধুমিয়ে কনস্ট্রাকশন চলছে - প্রথম প্রথম লোকটি সিড়ি (রেলিং বিহীন) দিয়ে ওপরে উঠতেই চাইতো না, বা বেশী দরকার পড়লে বিদঘুটে চেহারা বানিয়ে এক কোণা দিয়ে হাত ধরে কোনোমতে উঠতো। কয়েক মাস ঐ কাজ করার পরে এখন দেখছি লোকটি নিজেই বেশ সাবলীলভাবে ওঠানামা করতে পারে। তার ফোবিয়া এখনো আছে - তবে আগের মত ধরেবেধেঁ নিয়ে যেতে হয় না। 
নেক্রোফোবিয়া দূর করার জন্য মেডিকেল ১ম/২য় বর্ষে পড়ছে এমন কোনো বন্ধুর সাহায্য নিতে পারেন। স্কেলিটন হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করলে, কোনটার কি কাজ সে বিষয়ে বন্ধুর কাছ থেকে টিউটোরিয়াল ইত্যাদি করলে অযথা ভীতি লাঘব হবে।
থ্যানাটোফোবিয়া দূর করার জন্য তেমন ডিরেক্ট উপায় জানা নেই। কাউন্সেলিং চালু রাখুন।
আপনি সম্ভবত: অবসর সময়ে এসব বিষয়ে অযথা চিন্তাভাবনা করেন। আপনার চিন্তাভাবনার হরাইযন বাড়ান। অনেক সময় ধরে এনগেজ থাকতে যায় এমন হবী ডেভেলপ করুন। অবসর সময়ের চিন্তাভাবনাগুলো কোনো কনস্ট্রাক্টিভ চ্যানেলে প্রবাহিত করুন।
neurolinguistic programming (NLP) -র সাহায্য নিতে পারেন। ফোবিয়া, বদভ্যাস দূর করার জন্য NLP মোটামুটি এফেক্টিভ।
মৃত্যুভীতি আসলে মূলত: fear of the unknown...
মৃত্যু প্রক্রিয়া সম্পর্কে পড়াশোনা করতে পারেন। এন্ড-অব-লাইফ নিয়ে বেশ কিছু সাইন্স বই আছে। (আমার কাছে বরং ডেথ খুব এক্সাইটিং, রহস্যময় মনে হয় - ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন দেহকোষ কিভাবে টের পায় কখন "মরে যেতে হবে" - পুরো ব্যাপারটাই ফ্যাসিনেটিং - আগ্রহীরা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডেথ সিগনাল সম্পর্কে জানতে পারেন)
এছাড়া আরো গভীরে যেতে চাইলে ফিলোসফী, মেটাফিযিক্স নিয়েও পড়তে পারেন (যদি "ওরা নির্বোধ" ধরণের ছুৎমার্গ বর্জন করতে পারেন আর কি
)
আপনার থ্যানাটোফোবিয়া স্পেসিফিকালী কি ধরণের তা ভালোভাবে বুঝুন - মরার সময় নিছক শারীরিক কষ্ট হবে এধরণের ফিজিকাল ফোবিয়া? নাকি existential anxiety (মরে গেলে আমার সব শেষ, কিছুই থাকবে না...)?
প্রথমটি স্ম্যাশ করা সহজ। মরার সময় কোনো শারীরিক কষ্ট টের পাবেন না না, বরং একটা আনন্দময় অনুভূতি হবে। অনেক ছোটবেলায় আমার নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স হয়েছিলো। এছাড়া NDE নিয়ে পড়াশোনা করেছি - যারা মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছে তারা প্রত্যেকেই প্লেযেন্ট অনুভূতির কথা বলেছে। পুরোটাই ব্রেইনের কারুকাজ। মোদ্দা কথা - মৃত্যু ভীতিকর তো নয়ই, বরং "প্রশান্ত" অভিজ্ঞতা!
existential টাইপের death anxiety দূর করতে হলে কিছু ডিভাইস আছে। বিভিন্ন ধর্মগুলোর আফটারলাইফ কনসেপ্ট তৈরী করা হয়েছে এই ধরণের এ্যানক্সাইটী দূর করার জন্য। afterlife, immortality বলে আদৌ কিছু আছে কিনা তা অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক; তবে পরকালের ইল্যুশন যদি আপনার জীবনধারণ সহজ করে তোলে তাহলে অবশ্যই তা গ্রহণ করুন।
বেশ কিছু ড্রাগ আছে আপনার সাহায্যে আসতে পারে। মুজতবা ভাই মারিহুয়ানা নিয়ে একটি জ্ঞানগর্ভ টপিক দিয়েছেন সম্প্রতি - ওটা হয়তো আপনার কাজে আসতে পারে (তাই বলে আবার নেশাখোর হয়ে যাবেন না!
) এছাড়া আমেরিকায় সিলাসাইবিন নামে একটি মাশরূম ব্যবহৃত হয় - ক্যান্সার, এইডস ইত্যাদি টার্মিনাল রোগে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের এটা দেয়া হয়। মৃত্যু নিয়ে খুব ভয় পাচ্ছে এমন লোককে সিলাসাইবিন সিগারেট স্মোক করালে ড্রামাটিক উন্নতি হয়। সিলাসাইবিন মাশরুমে এলএসডির কিছু কম্পোনেন্ট আছে সম্ভবত: - তবে এলএসডির তুলনায় এটা সেইফ।
Calm... like a bomb.