টপিকঃ নিশ্বাসের সময় বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহন করলে কি হবে?
আমরা নিশ্বাসের সময় বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং এ অক্সিজেন ফুসফুসে প্রবেশ করে ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোষের অভ্যন্তরস্থ রক্তের সংস্পর্শে আসে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে বিক্রিয়া করে অক্সি-হিমোগ্লোবিন তৈরি করে যা বিভিন্ন ধমনী ও উপ-ধমনী দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশের জৈব কোষের সংস্পর্শে এসে দহণ ক্রিয়া সংঘটিত করে । এ দহণ ক্রিয়ার ফলে দেহাভ্যন্তরে তাপ উপন্ন হয় এবং ঐ তাপ প্রাণী দেহের উষ্ণতা বজায় রাখে । শরীরে শক্তি উৎপন্ন করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে যা প্রশ্বাসের মাধ্যমে বের হয়ে যায় । গাছপালা কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্লোরোফিলের সাহায্যে নিজেদের খাদ্য তৈরি করে এবং উপজাত হিসেবে অক্সিজেন ত্যাগ করে যা প্রাণীকূল শ্বাসের সাথে গ্রহণ করে।
কিন্তু শ্বাসের সাথে আমরা বায়ুর যে অক্সিজেন গ্রহণ করি তা বিশুদ্ধ নয়। বায়ুর মধ্যে অক্সিজেন ছাড়াও আরও গ্যাস থাকে । এর মধ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস অন্যতম । বায়ুর ৭৮ ভাগ হল নাইট্রোজেন আর অক্সিজেন হল মাত্র ২১ ভাগ । প্রাণীকূল শ্বাসের সময় যে অক্সিজেন গ্রহণ করে তার সাথে নাইট্রোজেন মিশ্রিত থাকে । নিস্ক্রিয় প্রকৃতির এই নাইট্রোজেন গ্যাস বায়ুস্থ অধিক সক্রিয় অক্সিজেন গ্যাসের দহণ ক্রিয়াকে অনেকটা মৃদুকরে ফলে দেহের অভ্যন্তরস্থ দহনক্রিয়া সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে এবং পরিমিত গতিতে সম্পন্ন হয় ।
শ্বাসের সাথে যদি আমরা শুধু অক্সিজেন গ্রহণ করতাম তবে প্রাণীদেহের অভ্যন্তরে দহন ক্রিয়া এত দ্রুত সম্পন্ন হত যে, উহাতে অত্যধিক তাপ শক্তি উৎপন্ন হত এবং দেহ যন্ত্রবিনষ্ট হয়ে যেত । ফলে প্রাণীর অস্তিত্ত্ব লোপ পেত । বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ও পরিমিত মাত্রায় মানুষ বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিতে পারে। একারণে রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। হাসপাতলে ১০০% অক্সিজেন দেয়া হয় না । এখানে পরিমিত পরিমানে নাইট্রোজেন থাকে এবং অনেক সময় তা নির্দিষ্ট চাপ বজায় রেখে দেয়া হয় ।তবে বেশি মাত্রার অক্সিজেন শরীরের ক্ষতিও করতে পারে। গুরুতর অসুস্থতায় বিশেষ বিবেচনায় খাঁটি অক্সিজেন দেওয়া হয়। যেমন—কার্বন মনোঅক্সাইডের বিষক্রিয়া বা বিষাক্ত ধোঁয়ায় আক্রান্ত অথবা আগুনে পোড়া রোগীর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে সরাসরি অক্সিজেন দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্রা বেশি হলে সমস্যাও দেখা দেয়। যেসব শিশু অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয় (প্রিম্যাচিউর), তাদের পুষ্টিসাধন যন্ত্রে (ইনকিউবেটর) উঁচু মাত্রার অক্সিজেনে রাখা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই অতিমাত্রার অক্সিজেন শিশুদের অন্ধত্বের একটি কারণ হতে পারে। অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণকারী শিশুদের চোখের রেটিনায় রক্ত সরবরাহকারী নালিগুলো পুরোপুরি বিকাশ লাভ করে না। তার আগেই ইনকিউবেটরে বেশি অক্সিজেন পেয়ে সেই রক্তনালিগুলো অস্বাভাবিক আকারে বাড়তে থাকে। এ কারণে তাদের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হতে পারে। খুব বেশি অক্সিজেন শিশুদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে।
কি বিজ্ঞান অনেক মজার তাইনা? চলুন আরেকটি মজার বিষয় জেনে আসি এখানে http://www.tourist-spots.lv2lvu.com/egy … ids-facts/