টপিকঃ আরেক ন্যু এম্রিকান জীবন - ১ (বিইং নিউইয়র্কার)
অনেক অপেক্ষার শেষে মিসিসিপি নদীর সংগ ছাড়ার দিন চলে এলো, শেষ রাতটা ছিলো হরিবল। ঠান্ডার রাইতে সব ফ্রেন্ডরা মিলে বের হৈছিলাম সাবওয়ে সেন্ডুইচ খাইতে, সাবওয়ে টু পাপা জোন্স টু ম্যকডোনাল্ডস হয়াও কোনো খাবার জুটাইতে পারলাম না কারণ রাত বেশী হয়ে গেছিলো। পরে বাধ্য হয়া ডমিনজ পিৎজা অর্ডার কইরা গোগ্রাসে গিলে ফেললাম সবাই মিলে। জানি না কোনো কারণে কোনো জায়গা ছাড়ার শেষ দিনটা আমার খারাপ যাবেই।
অত:পর পরদিন সকালে যথা সময়ে কবুতরের ঘরের সাইজ কেইপ জিরারড্যু এয়ারপোর্টে গিয়ে ব্যগেজ চেক ইন করাইলাম। মহিলা আমার পাসপোর্টের পিচ্চি কালের ছবি দেইখা যথারীতি টাশকি খাইলো, এবার জিগায় আমার ওজন শুইনা খাইলো দ্বিতীয় টাশকি। এখনও পাউন্ডের সাথে কেজি মিলায় ফেলি যেই সমস্যার কারণে আমি নিজের ওজন বইলা বসলাম ৫৪ পাউন্ড যেটা পাসপোর্টের ছবির পিচ্চির ওজনও না পরে মহিলা ওজন মাপায়া বোর্ডিং পাস দিয়া মুরগীর ডিম সাইজ প্লেনের লাস্ট সিটে উঠায়া দিলো, লগে বইছে এক নেপালী মাইয়া। এইটার যন্ত্রণায় ম্যাথ ক্লাস করতে পারতাম না আবার সেই ডোনারে এখানে দেইখা গেলো মেজাজ খারাপ হয়া, পরে মেজাজ ভালো হইলো এই ভাইবা যে মহিলা হাসিমুখে আমার ব্যাগে ট্যগ লাগায়া দিছে কিন্তুক কোনো চার্জ করে নাই। যেখানে আমার পকেটে তখনও ভাংতি ২৫ ডলার রেডি আছিলো
কি আর করা সুন্দর কুতকুত খেলতে খেলতে এই প্লেন নিয়া ফালাইলো আমারে সেন্ট লুইস ল্যম্বার্ট এয়ারপোর্টে.. সেন্ট লুইস মানেই হইতাছে ওয়েটিং আমার জন্য। এবারো প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো ওয়েইট করতে হবে, সাথে জুইড়া বসছে ডোনা! উপস, তার উৎকট কুয়েশ্চেনের জবাব দিতে দিতে আমার প্রায় ১ ঘণ্টা পার হইলো। এরপর তার ডেস্টিনেশন ম্যরিল্যন্ড, ডাক পড়ার সাথে সাথে আমি হাফ ছাইড়া বাচলাম। এদিক ওদিক ঘুইরা ম্যকডোনাল্ডসের সন্ধান করলাম শেষ বারের মতো একটা বিগ ম্যক খাওনের একটা সখ আছিলো, না পাইলাম ম্যক না পাইলাম স্মোকিং জোন, মেজাজের মাত্রা কিন্তু বাড়তেছেই...
নেক্সট ডেস্টিনেশন ওয়াশিংটন ডুলেস জুৎ কইরা একটু বসলাম বড়ো সাইজের প্লেন পাইয়া। খিয়াল কইরা দেখলাম পিছনে অনেক সীট খালি আর কি চাই! পা টান কইরা দিলাম ঘুম ২.৩০ মিনিটের জন্য। উইঠা নাইমা দেখি ব্যপুক সুন্দর এয়ারপোর্ট আমার পছন্দ হইলো স্ট্রাকচার। পরে আমার ক্যারি অন লাগেজ দেইখা দৌড় দিলাম, ওমা কয় তুমি এইটা নিতে পারবা না এইটাতে ট্যাগ নাই। জ্বালায় পড়লাম, পরে ওদের ভুল বুঝায়া বলাতে পুরষ্কার স্বরূপ এই ক্যারিঅন রেও দিলো পাঠায়া জায়গামতো! আমি এখন বোঝা মুক্ত!!!!
উঠলাম আরেক প্লেনে টু রিচ ফাইন্যল ডেস্টিনেশন। সারাদিন পরে টায়ার্ড খুব, হঠাৎ শুনি -
- এক্সকিউজ মি!
- এদেখি পরী নাইমা আসছে!!! সিওর, গো ইন, এন লেম্মি গেট দ্যাট (ওর ক্যারি অন) ফর ইয়া
নরমাল কার্টেসী শেষ হবার অনেক্ষন পর আমারে জিগায় -
- হাউ ওয়াজ ইয়োর ডে?
- ইটজ বিন প্রিটি ক্যুল, বাট এ্যম কাইন্ডা এক্সসটেড ফর থ্রি কনসিকুয়েন্স জার্ণি, হোয়াট এবাউট ইয়োরজ?
চলতে থাকলো এমনে, জানলাম যে মাইয়া ওরল্যন্ডো থেইকা আসতেছে, বেচারীর কোনো বয় ফ্রেন্ড নাই এজন্য ওর মা খুব চিল্লা ফাল্লা করে, ঐ কয় আমার কি দোষ
- দিস ইয়ার আই ইনভাইটেড ওয়ান টু হ্যাভ কফি উইথ মি, বাট ইট ওয়াজ এ বামার! এন ইট হ্যপেন্ড টোয়াইস!!
- ওএম,এফ,জি!! আই বেট দ্য হ্যভ প্রবলেমস, ডুন ওয়ারী নেক্সট টাইম ইট উইল বি ফাইন ইউ আর রিয়েলি নাইস!
পরে একটা বই বাইর করলো, পাইলাম আরেক টপিক। অনেক ডিসকাশন কইরা দুইজন একলগে বই পড়া শুরু করলাম। আমি যে টায়ার্ড কোনো মতে তাকায়া স্কিমিং করছি আর দুই একটা কি-ওয়ার্ড পাইলেই গ্যাজাইছি! বেশ মজার জার্নিটা শেষ হয়া গেলো, চামে দিয়া বইয়ের নাম চাইলাম লগে কন্টাক্ট ফ্রি!!
নামার আগে আমারে কয় তুমি লম্বা আছো! আমি কই হইছে তাইলে তুমি কতো খাটো এইবার বুঝছি! অনুমান ওর ক্ষেত্রে ঠিক আছিলো কিন্তু ছোটো বইনরে দেইখা কই এতো তালগাছ। কেমনে কি! পরে পরিচয় করায় দিলো টুক টাক কথা, কফির ইনভাইটেশন চামে দিয়া পায়া গেলাম। বিদায়ের বেলা জিগায়-
- ইউ ডু হাগ?
আমি কই কি কমু জানি!!!
মোবাইলের রিংটোন বাজতে না বাজতেই দেখি পিছন থেকে রাসেল ভাইয়ার ডাক!!!!!
শিট অন মি!
ওয়াশিংটন ডুলেস এয়ারপোর্ট:
সেন্ট লুইস ল্যম্বার্ড এয়ারপোর্ট:
কেইপের এরিয়াল ভিউ:
ইমেইজেস কালেক্টেড!