টপিকঃ হুদাই গ্যাঁজাইলাম (২৮/১২/২০১১)
০১. সব ভাইভা, ইন্টারভিউ, পার্সোনালিটি টেস্টের একটা কমন প্রশ্ন হইলো, আপনার নিজের সম্বন্ধে কিছু বলেন।
তখনই মানুষ টাশকি খায়। আমি কেমন? পরীক্ষা শেষ হইছে আইজকা ৮ দিন। সব ধরনের মৌজ মাস্তি শ্যাষ কইরা এখন খালি মাথায় এই সব হাবিজাবি চিন্তা আইতাছে।
০২. অনেক চিন্তা ভাবনার দরকার হইল না, প্রথমেই বাইর কইরা ফেললাম, আমি খুবই ভয়াবহ ধরনের আত্মকেন্দ্রিক। নিজেরে ছাড়া কিছুই ভাবি না। আমার লেখা ব্লগগুলার মধ্যে, কমেন্টে, ফেসবুকে, আড্ডাবাজিতে, এমনকি অলস চিন্তাভাবনাগুলাতেও খালি আমার নিজের কথাই থাকে। মুই কি হনুরে ভাব লওনের মত কি আছে আমার? স্টকহোমে এইবার ৯ টা পোলা আইছি আমরা, তার মইধ্যে ৮ টাই ভাল পোলা। সবাই রেগুলার ক্লাসে যায়, শেভ করে, বিড়ি খায় না, টাকা পয়সা হিসাব কইরা খরচ করে আবার দেশেও পাঠায়।
আর আমি? পুরাই উল্টা। গোবরে পদ্মফুল? জ্বী না, পদ্মফুলে গোবর, ৮টা পদ্মফুলের মইধ্যে একতাল গোবর।
০৩. অনেকে হয়তো জানেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্রীসরে লয়া ব্যাপক প্রবলেম চলতেছে। ইকোনমিক কন্ডিশন খুব খারাপ। ইউরো থাকবো কি থাকবো না, সেইটা নিয়া ব্যাপক গ্যাঞ্জাম। বেবাক গ্রীকরা ইউরোপের অন্যসব দেশে ভাগতেছে।
আমাগো প্রোগ্রামে ৩ টা গ্রীক পোলা আছে, নিকোস, কস্তাস আর ভাইগেলিস। তিনটাই সেইরকম রকিং। নিকোস আর ভাইগেলিস সারাদিন ঘুইরা বেড়ায় পড়ালেখা চাঙ্গে তুইলা, আজকে বাস্কেটবল খেলতে ইটালি, তো পরশু বার্সেলোনা ফুটবল দেখতে, তো তরশু অস্ট্রিয়ায় আইস স্পোর্টসে। তৃতীয়টা কস্তাস, হালায় আবার জাতে মাতাল তালে ঠিক। পড়াশোনাও করে, আবার বদমাইশিতেও কম যায় না, আবার প্রেমও করে কোপাইয়া। বিড়িখোর বইলা অর লগে ফার্স্টেই খাতির হয়া গেছিল। হালায় আবার বিড়ি বানায়া খায়। একদিন হালার ফিল্টার শেষ হয়া গেছিল। তখন দেশীয় বেনসন বিড়ি দিয়া হালারে কইছিলাম, খায়া দেখ, আমাগো দেশী জিনিস।
০৪. পরের দিন হালার গার্লফ্রেন্ড মারিয়া আইসা হাজির, (ছেমড়ি ব্যাপক সুন্দর! ) কয় অরেও আমাগো দেশী বিড়ি খাওয়াইতে হইবো। আমি কইলাম, খাওয়াইলে আমারে কি দিবি? ছেমড়ি কয়, কস্তাসের লগে ব্রেকআপ হইলে তর লগে পিরিত করুম। আমি বিড়ি দিয়া কইলাম, যাক, তোর চেহারা তো সুন্দর, তার মানে তোর পিছে তো পুলাগো লাইন লাইগা আছে, লাইনে সবার আগে খাড়ানের চান্স দেওনের জন্য আইজকা তরে একটা বিড়ি দিলাম।
মাইয়া বিড়ি নিয়া লগে লগে কয়, নাহ, তর লগে পিরিত করুম না, তুই আমার ভাল চাইলে আমারে বিড়ি খাইতে দিতি না। স্মোকিং কিলস!
বোল্ড হয়া গেলাম প্রায়, তাও এই সুন্দরীর কাছে, স্মার্ট অ্যান্সার দিয়া না জমাইতে পারলে সারা জীবন আর বেইল পামু না, তাই (ভাগ্যিস জোক্সটা টাইম মত মনে আসছিল
) একটা মীরাক্কেল জোক্স মাইরা দিলাম, কইলাম, বিড়ি খাইলে ৫ মিনিটের আয়ু কইমা যায়, আবার হাসলে ১০ মিনিটের আয়ু বাইড়া যায়। সুতরাং হাসতে হাসতে বিড়ি খাবি, ৫ মিনিটের লাভ!
খ্যাক খ্যাক!!
ছেমড়ি বিড়ি খাওয়া শ্যাষ কইরা কয়, তুই কোন দেশ থিকা আইছস? কইলাম, বাংলাদেশ। ছেমড়ি লগে লগে কয়, আই নো বাংলাদেশ, লঙগেস্ট বীচ ইন দা ওয়ার্ল্ড। শুইনা আমি লগে লগে আকাশে উইঠা গেলাম পাটের চোটে।
০৫. আমার বদ অভ্যাস হইলো ঘুমাই ভোর ৬-৭টার দিকে, যেমন এখন বাজে ভোর ৫:৩৬ মিনিট। উঠি বিকাল ৩টা ৪টার দিকে। কত অ্যালার্ম, কত কাহিনী করলাম, লাভ হয় নাই, উঠতেই পারি না। রাগের চোটে একদিন সন্ধ্যা ৭টায় ঘুমাইলাম জোর কইরা। ফলাফল সেইম। সকাল আটটায় অ্যালার্মের শব্দ শুইনা ঠান্ডা মাথায় অ্যালার্ম অফ কইরা ঘুমাইলাম, উঠলাম দুপুর দুইটায়। ক্লাস মিস করতেছি এইভাবে একের পর এক। কস্তাস কইলো, অর কাছে আইফোনের একটা অ্যাপ্লিকেশন আছে, যেইটায় অ্যালার্ম বন্ধ করতে হইলে একটা ইকুয়েশন সলভ করতে হয়, প্রথম অ্যাটেম্পটে ভুল করলে, আরো কঠিন ইকুয়েশন আসে, আবার ভুল করলে আরো কঠিন। যেমনেই হোক, ঘুম থিকা উঠায়াই ছাড়বো। আমি তো কইলাম, আমার তো আইফোন নাই, কিনার পরে ইন্সটল করুম নে।
অভিভূত হইলাম এইটা দেইখা যে, প্রতিটা পরীক্ষার দিন সকাল আটটায় হালায় আমারে ফোন কইরা ঘুম থিকা তুইলা দিতো। আধা ঘন্টা পরে আরেকটা ফোন দিয়া চেক করতো আসলেই উঠছি কিনা। লজ্জায় পইড়া যাই পুরাই। বন্ধুত্ব জিনিসটা পুরাই অসাম, সেইটা যেই দেশেই হোক!!!
০৬. এত বড় লেখা মাইনসে পড়ে না, তাই তাড়াতাড়ি শ্যাষ কইরা দেই।
০৭. ক্লাস শেষে একদিন বাসার ফেরার সময় গুডবাই কইয়া বেবাকটির লগে হ্যান্ডশেক কইরা ভাগতেছি, এমন সময় মারিয়া পিছন থিকা কয়া উঠলো, ঠুইন (আমার নামডারে পঁচায়া ফালাইছে ছেমড়ি ) হ্যাভ সেক্স উইথ এভরিওয়ান, বাট নট উইথ মি! শুইনা আমার কান গরম!
এতদিন ধইরা এত কষ্ট কইরা চরিত্রডারে ঠিক রাখলাম, আর মাইয়া এইগুলান কি কয়! মাইয়ার মাথায় মাল উঠলো নাকি? এইসব দ্যাশের মাইনসের কাছে তো এইগুলা কোন ব্যাপার না। কিন্তু আমি উপ্রে উপ্রে যতই ফ্লার্ট করি ছেমড়িগো লগে, মাগার ভিত্রে সেইরকম নার্ভাস থাকি,
তার উপরে মাইয়ার কথা শুইনা পুরাই টাশকি!!
কাছে গিয়া কইলাম, কি কইছস আবার ক, হুনি নাই! এইবার ঠিক মত শুনলাম, ঠুইন (আবারো নামডার চৌদ্দটা বাজায়া ছাড়লো ছেমড়ি
) হ্যান্ড শেকস উইথ এভরিওয়ান, বাট নট উইথ মি! আমি তাড়াতাড়ি হ্যান্ড শেক কইরা সরি মরি কইয়া কোনমতে হাঁফ ছাইড়া বাঁচলাম
, আর মনে মনে একটু আশাহতও হইলাম!
ইস, অল্পের জন্য মিস হয়া গেল!!!