টপিকঃ আমার ন্যু স্কুল জীবন - ৫ (শেষ পর্ব)
দেখতে দেখতে সব সাবজেক্টের ফাইন্যল দিয়ে দিলাম, সেমিস্টার প্রায় শেষ হয়ে আসলো, আমার নতুন স্কুল জীবনের একটা অংশ শেষের দিকে। এদিকে বাইরের গ্লুমি ভাবটাও হঠাৎ কেমন যেন শাইনি হয়ে গেছে, যেন আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেই না। নদীর পাশটা দিয়ে হাটলে মনে হয় কত দিনের পরিচিত এই নদীর বাতাস কয়েকদিন পরে আর আমাকে স্পর্শ করবে না।
দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস থাকলাম এই সিটিতেই, হাই স্কুল শেষ করার পর মনে হয় এই প্রথম কোনো একটা স্পেসিফিক সিটিতে টানা এতদিন থাকা হলো আমার। সেই হিসেবে একটু বিরক্তই হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু শেষের দিকে এসে মনে হচ্ছে না কয়দিন ঘুরে-ফিরে আবার এই সিটিতে আসলেই মজা হবে। খারাপ নাত সব মিলিয়ে অনেক মজাই করেছি এখানে। রিয়েল আমেরিকান লাইফ উপভোগ করলাম একা একা থেকে যেটা অনেক আগে থেকেই একটা ইচ্ছা ছিলো। যদিও এর মধ্যেই অনেক বাংগালীকে দেখেছি লিমিট ক্রস করে অনেক রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে। ব্যপারটা আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে, এখানে বাংগালীদের যে একটা ভালো রেপুটেশন ছিলো। সেটা পুরো নষ্ট হয়ে গেছে গুটি কতক ছেলের জন্যে। যারা গায়ে ট্যাটু আকিয়ে নিজেদের আমেরিকান মনে করে গর্দভের মতো পুলিশের সাথে ঝামেলা বাধাতে যায়। ফলস্বরূপ যথারীতি জেল জরিমানা।
এখানে আসলে নিয়ম কানুন প্রচুর কড়াকড়ি এটা অনেকের ধারণা থাকে না, ফ্রি কান্ট্রি ভেবে অনেকেই অনেক স্বপ্ন নিয়ে এখানে আসে, তবে রিয়েলিটি বলে অন্য কথা। ইন্টারন্যশনালদের জন্য আমেরিকার স্বাধীনতা অনেকটাই লিমিটেড, এছাড়াও কিছু বাধ্য-বাধকতা রয়েছে সবার জন্যই। এ্যলকোহল, স্মোক এগুলো কিনার জন্যে যেমন রয়েছে নির্দিষ্ট বয়সের সীমাবদ্ধতা তেমনই সীমাবদ্ধতা রয়েছে ড্যন্স ক্লাবেও। মোটকথা এক্সট্রিম লেভেলের ফান করার জন্য এখানে কেউ আসতে চাইলে তার জন্য আমার এডভাইজ হলো ইউরোপে যাওয়া, যেখানে বেশীর ভাগ দেশেই যত্র তত্র ন্যুডিটি এলাউড এবং নিয়ম কানুনও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অনেক শিথীল। কথাগুলো আসলেই আফসোস করে বলা কারণ কখনই ভাবিনি যে বাংগালী হয়ে নিজের বাংগালী বন্ধুদের দেখবো এতটা নিচে নামতে। যেটা রীতিমত লজ্জাজনক!!!! যেখানে চাইলেই একটা ভালো রেপুটেশন বজায় রেখে অনেক অনেক ফান করা যায়।
এইসব কারণে অনেকটা বিরক্ত হলেও আমি আমার মতো দেখে নিয়েছি এখানকার গ্রামের সৌন্দর্য এবং কালচার। কিছুটা সিটি থেকে ডিফরেন্ট হলেও আমার কাছে ভালোই লেগেছে। ক্যাম্পাসটা অনেক অনেক মিস করবো, মিস করবো অল্প সময়ের জন্য গড়ে উঠা বন্ধুদের যারা অনেক সাহায্য করেছে সবগুলো জায়গায়। যাওয়ার আগে সব মিলিয়েই একটা অদ্ভুত অনূভুতি, একবার খুব খুশি লাগছে ইয়ে বাসায় যাবো, ঘুরবো মজা করবো আবার কেমন জানি খারাপ লাগা। জানি না বাকি কয়েকদিন কেমন কাটবে!!