টপিকঃ তিয়াহুয়ানাকো - ১
ভ্রমন করতে কার ভাল না লাগে । অবশ্য যাদের ভাল লাগে তারা লেখাটা না পড়ে ঘুরে আসুন । আর যারা যেতে পারবেন না তার পড়ে দেখুন ভ্রমনের স্বাদ পান কিনা ?
রহস্যে ভরা অবলুপ্ত শহর তিয়াহুয়ানাকো । সমুদ্র সমতল থেকে ১৩০০০ ফুটেরও বেশি উপরে অবস্থিত এই শহরটির আশেপাশে
যতদূর চোখ যায় জনপদের চিহ্নমাত্র নেই । পেরুর কাজকো থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে এখানে পৌঁছাতে হলে ,তারপর অনেকদিন
চলতে হবে রেল এবং নৌকায় । একটা মালভূমির উপরে অবস্থিত শহরটি । এখানে এসে দাঁড়ালে এর নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে এই পৃথিবীর
বাইরে কোন জায়গায় দাড়িয়ে আছে বলেই মনে হবে ভ্রমণকারীর । স্থানীয় অদিবাসি ছাড়া বাইরের কারো জন্য কায়িক পরিশ্রম এখানে
শাস্তি । আবহচাপ সমুদ্রপৃষ্ঠ চাপের অর্ধেক ,আর বাতাসে অক্সিজেন এর পরিমাণও সেই অনুপাতে কম । কিন্তু এই প্রতিকুল পরিবেশেও
কি করে এখানে এতবড় একটা নির্মাণ সম্ভব হয়েছিল ? ঐতিহ্যগত ও বিশ্বাসযোগ্য কোন ইতিহাস নেই তিয়াহুয়ানাকোর । অকল্পনীয়
প্রাচীন ধংসস্তুপের ওপর বিছিয়ে রয়েছে অতীতের কত গোপন রহস্য ,কত কুহেলী । শহরের পাঁচিল গাঁথতে ব্যবহার করা হয়েছে
১০০ টন ওজনের সব বেলে পাথর । এর মাথায় আরও চাপানো হয়েছে ৬০ টন ওজনের পাথর । কাচের মত মসৃণ দেয়ালের গা ।
নিখুত গোলকরা ধারগুলোর সঙ্গে কোন রহস্যজনক কারনে তামার আঁকশি আর তার দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে প্রকান্ড প্রকান্ড সব
চারকোনা পাথর । পাথর গুলোতে আবার বিচিত্র খোদাইয়ের কাজ । অনেকগুলো ১০ টন ওজনের পাথরে ৮ ফুট লম্বা গর্ত করার
কারন কি আজও জানা যায়নি । আস্ত পাথর কেটে ঘরের মেঝে বাসানো হয়েছে । সবচেয়ে বড় মেঝের দৈর্ঘ্য ১৬.৫ বর্গ ফুট । কিভাবে ?
এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ৬ ফুট লম্বা আর ১.৫ ফুট চওড়া পানি নিষ্কাশনের নল । অপূর্ব ,অদ্ভুত ,নিপুন গঠন কৌশল ।
ওগুলোর পাশে আমাদের আধুনিক কংক্রিটের নল দেখলে মনে হয় অপুট ,কাচা কারিগরের কাজ । এমনভাবে পড়ে আছে নলগুলো
মনে হয় কোন ভয়ঙ্কর রকম বিপর্যয়ের ফলে মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে এসেছে । তবে কথা সেটা নয় ,কথা হল আজকের মত
আধুনিক যন্ত্রপাতি তাদের কাছে থাকার কথা নয় । তাহলে কিভাবে বানাল এই শহর ? উন্নত নল ?
[ চলবে ]