টপিকঃ আরো কত অবাক হওয়া বাকি আছে কে জানে!
কয়েকদিন আগে টেকটিউনস নামক একটি ব্লগ সাইটে লিনাক্স নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম (বিচার মানি, তবে তালগাছ আমার)। সেখানের একটা মন্তব্যে একজন লিনাক্স সিডি জোগারের উপায় জানতে চেয়েছিলেন। আমি ওনাকে ঠিকানা দিতে বলে জানিয়েছিলাম পাঠিয়ে দেব। সেই অনুযায়ী ওনাকে (এবং আরো দুইজনকে) পরবর্তীতে লিনাক্স মিন্টের ডিভিডি কুরিয়ার করে পাঠিয়েছিলাম।
দেশের লিনাক্স কমিউনিটিতে প্রচলিত প্রথা হল, এমন ক্ষেত্রে সিডির মূল্য আর কুরিয়ারের খরচটা পরবর্তীতে গ্রহীতা, প্রেরকের মোবাইলে ফ্লেক্সি, আইটপআপ ইত্যাদি করে দিয়ে দেন। তবে আমি শুরু থেকেই এরকম করি নাই। একবার অবশ্য নিয়েছিলাম। আমি বলি, আপনি ডিভিডি বা সিডি বুঝে পান, চালিয়ে দেখুন তারপর জানাবেন -- আমি কিভাবে মূল্য শোধ করবেন জানিয়ে দেব।
এই পর্যায়ে আমি তাদেরকে যেটা বলার পরিকল্পনা করে রাখি এবং বলি, সেটা হল: আমাকে এর মূল্য পরিশোধের দরকার নাই; আপনি অন্য একজন সাহায্যপ্রার্থীকে এই একইরকম সাহায্য করবেন -- এতেই আপনার ঋন (!) শোধ হয়ে যাবে। কারণ শুধু আপনার আর আমার মধ্যে লেনদেন সীমাবদ্ধ না থেকে এটা তাহলে ছড়িয়ে পড়বে -- আর সমাজটা এভাবেই সামাজিক হয়।
এই ধারণাটা নতুন কিছু নয়। ছোটবেলায় বড়ভাইদের পকেটের উপর দিয়ে অনেক কিছুই পার করেছি -- তাদেরকে তো সেটা দেয়া যাবে না। আমি সেটা দেই ছোটভাইদেরকে। একইভাবে জুনিয়র কলিগ যদি আমার সাথে ক্যাবে বাসায় আসার পথে লিফট নেয়, তাঁকে বলি শেয়ারটুকু সঞ্চয়ে রাখো, আমি যেমন আগে বড়ভাইদের কাছ থেকে নিয়েছি তেমনি তোমাকেও সামনে ছোটভাইদেরকে দিতে হবে।
বিদেশে যখন নতুন গেলাম, ওখানকার বড়ভাইরা অনেক সাহায্য করেছেন। আমিও যখন একটু পুরানা হলাম, নতুন আগতদেরকে সাহায্য করতাম। --- এভাবেই পারষ্পরিক ভাতৃত্ববোধ বাড়ে, এভাবেই চলা উচিত --- লেনদেনগুলো দুইপক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাটা তাই আমার পছন্দ নয়।
অবাক হলাম গতকাল। উনি আমাকে এক ব্যাগ আম পাঠিয়ে দিয়েছেন (জনাব আব্দুর রব সাহেব চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ)। সেই ছড়িয়ে দেয়ার মূলনীতি থেকে ব্যাপারটা একটু ভিন্ন হলেও আমি সত্যিই আপ্লুত । অন্তত এতে বাসায় - বনের মোষ তাঁড়ানোর জন্য প্রক্ষেপিত কটু কথাগুলো একটু হলেও কমবে।