টপিকঃ লাখ লাখ মানুষের উচ্চ রক্তচাপের ভুল পরিমাপ!
উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন এমন সন্দেহে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া মানুষের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ভুল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। ব্রিটেনের 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল এঙ্সিলেন্স' (নাইস) জানিয়েছে, কেউ চিকিৎসকের কাছে গেলে প্রথমে তাঁর হাতের বাহুতে যন্ত্র (ইনফ্ল্যাটাবল আর্ম কাফ) বসিয়ে রক্তচাপ দেখা হয়। এরপর অধিকতর পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকদের পরীক্ষা কক্ষে (জেনারেল প্র্যাকটিশনার বা জিপি'স সার্জারি) অথবা হাসপাতালে যেতে বলা হয়। এতে দেখা গেছে, পরীক্ষার জন্য অপেক্ষারতদের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের নাড়ির স্পন্দন বেড়ে যায়। এতে তাদের রোগ নির্ণয়ের ফল ভুল আসতে পারে।
নাইস গতকাল তাদের নতুন দিক-নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার জন্য অপেক্ষারতদের স্নায়ুর চাপ বেড়ে যাওয়ার অবস্থাকে 'হোয়াইট কোট হাইপারটেনশন' বলা হয়। এ অবস্থার শিকার মানুষদের ক্ষেত্রে তাই রোগ নির্ণয় ভুল হতে পারে। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষের ভুল চিকিৎসা হয়ে থাকতে পারে বলে নাইস আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ অবস্থা পরিহারের জন্য ডাক্তারদের পরীক্ষাকক্ষের ফলের ওপর নির্ভর করা উচিত নয় বলে তারা মনে করে।
নাইস জানিয়েছে, সঠিকভাবে চিকিৎসা করার জন্য প্রাথমিকভাবে কারো রক্তচাপ শনাক্ত হলে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে 'এমবুলেটরি ব্লাড প্রেসার মনিটরিং' বা এবিপিএম যন্ত্র ধারণ করতে বলা উচিত। এটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর রোগীর রক্তচাপের অবস্থা রেকর্ড করে এবং এর মাধ্যমে 'হোয়াইট কোট হাইপারটেনশন' এর প্রভাব এড়ানো সম্ভব বলে মনে করা হয়। নাইসের পক্ষে নতুন দিক-নির্দেশনা তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রায়ান উইলিয়ামস। তিনি বলেন, 'এভাবে চিকিৎসা করলে কেবল রোগ নির্ণয়ের উন্নতিই হবে না, পাশাপাশি এনএইচএসের খরচও কমবে।' এনএইচএস বা 'ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস' হলো ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।
দাতব্য প্রতিষ্ঠান 'ব্লাড প্রেসার অ্যাসোসিয়েশন' নাইসের নতুন এ দিক-নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছে। রয়্যাল কলেজ অব জিপি'স-এর চেয়ারম্যান ক্লেয়ার জিরাডাও একে সাধুবাদ জানান।
সূত্র : টেলিগ্রাফ।